নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র জনবল সংকট, স্বাস্থ্য সেবা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২১:৫৫, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র জনবল সংকট, স্বাস্থ্য সেবা

জনবল–সংকটে ধুঁকছে  ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। চিকিৎসক সংকট, টেকনিশিয়ানসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি থাকায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। মঞ্জুরীকৃত ৪১টি পদের বিপরীতে বর্তমানে আছে ১২ জন। ২৯টি পদই শুন্য রয়েছে।

এর মধ্যে চিকিৎসকের ১৪ পদের ৭টি শুন্য রয়েছে। এ অবস্থায়  একদিকে রোগীরা যেমন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন অপরদিকে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ লোকবল থাকার কথা ৪১ জন। কিন্তু রয়েছে মাত্র ১২ জন । ২৯টি পদই শুন্য রয়েছে। এর মধ্যে  ১৪ জন চিকিৎসকের মধ্যে বর্তমানে ৭ জন কর্মরত আছেন। চিকিৎসকের  সাতটি পদই শূন্য।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ , ইএনটি, অফথালমোলজি, ডার্মাটোলজি, ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি , রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং , ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের পদগুলো দীর্ঘ ধরে শুন্য।  ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসারের ৪ টি পদই শুন্য রয়েছে।

এ ছাড়া সহকারি মেডিকেল অফিসার ১৯ জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ২ জন। খালি রয়েছে সহকারি ডেন্টাল সার্জনের পদও।

বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে রোগীদের উপচে পড়া ভীড়। রোগীদের অধিকাংশই জ্বর ঠান্ডা নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাদের চিকিৎসা দিতে গলদঘর্ম অবস্থা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা প্রতিদিন বহির্বিভাগে পাঁচশ থেকে ছয়শ’ রোগী দেখছেন এবং ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন।

কিন্তু এক্স-রেসহ কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হলে টেকনিশিয়ানের অভাবে রোগীদের স্থানীয় বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে, নয়তো শহরের কোন ডায়গনস্টিক সেন্টারে যেতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনটি অনেক দিন থেকেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এক্স-রে পরিচালনার জন্য টেকনিশিয়ান পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। সচল না থাকায় অকেজো হয়ে পড়েছে এক্স-রে যন্ত্র। এ অবস্থায় মেশিন সচল রাখতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের টেকনিশিয়ান দিয়ে মাঝে মাঝে এক্সরে করানো হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. মোঃ রাজিউর রহমান জানান, চিকিৎসক ও তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির  লোকবল সংকটে হাসপাতালের স্বাভাবিক কাযক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তা সত্ত্বেও যতটুকু সম্ভব চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এক্স-রে টেকনিশিয়ান নেই।

বাইরে থেকে টেকনিশিয়ান এনে কাজ চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন শুন্যপদে  নিয়োগের জন্য   চাহিদাপত্র  উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। পদগুলো খুব শিগশিগ পূরণ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তবে  নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান বুধবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে  জেলা তথ্য অফিস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে   বলেন, বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন জনবল সংকট নেই।

সেখানে পুরো সেটআপ  রয়েছে।জোরদার  নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা  না থাকায় ওই হাসপাতালে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে। 
 

সম্পর্কিত বিষয়: