
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, আজকে নারায়ণগঞ্জের মানুষ সাক্ষী এই জুলাই বিপ্লব কিন্তু একদিনে হয় নাই। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা, হত্যা, গুম, খুন অনেক অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে বাংলাদেশের মানুষ চূড়ান্তভাবে এই জুলাই বিপ্লব সুসংগঠিত করেছিল।
জুলাই বিপ্লবের পিছনে বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা যেভাবে ভূমিকা পালন করেছে সেভাবে বিরোধী দলের আন্দোলন হিসাবে বিএনপি ও ছাত্রদল, যুবদলসহ অঙ্গ সংগঠনগুলো সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করেছিল। আমরা বলব এই জুলাই বিপ্লবে বিএনপি ও বিএনপি মনা নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ তিতিক্ষা রয়েছে।
আপনারা শুনতে পারবেন যে ছাত্র আন্দোলনে হয়েছিল সে আন্দোলনে এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। সে হত্যার মধ্যে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠনের ৪২২জন নেতাকর্মী খুন হয়েছিল। শেখ হাসিনা খালি বিএনপি'র এই ৪২২ জন নেতাকর্মীদেরকে খুনী করেননি কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে তারা আহত ও পঙ্গুত্ব করেছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডক্টরস্ এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) নারায়ণগঞ্জ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল এগারোটায় খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ১৩ জুলাই থেকে যখন নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন ধারাবাহিকভাবে শুরু হয়েছিল তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রশাসন এবং খুনি শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমান তাদের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে দমন করার জন্য সেদিন থেকে গণগ্রেপ্তার শুরু হয়েছিল। ওই আন্দোলনের সময় শত শত মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তার মধ্যে ৯৫% ই ছিল বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ছিল।
১৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে বায়ান্নটি মামলা হয়েছে সেই সকল মামলাতে আমি সহ বিএনপি'র গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীদেরকে সকল মামলা আসামি করা হয়েছিল।
আর যদি এই জুলাই বিপ্লব না ঘটতো আমরা যদি বিজয়ী অর্জন করতে না পারতাম তাহলে সেই মামলায় আমরা কোনদিন জেল থেকে বের হতে পারতাম না। সুতরাং আমরা বলতে চাই জুলাই বিপ্লবের অর্জন আমরা এককভাবে নিতে চাই না।
শুধুমাত্র ফ্যাসিস সরকার ছাড়া সকল রাজনৈতিক দলেই এই জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনের সাথে ছিল। সেই জুলাই বিপ্লবের পার্শ্ববর্তী দেশের সমর্থন থাকার পরও এদেশের জনগণ জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দিয়ে এদেশকে আবারও নতুন করে স্বাধীন করেছিল।
তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবের পরে যে অন্তবর্তী কালীন সরকার গঠন করা হয়েছিল সেই অন্তবর্তী সরকারের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া। এদেশের মানুষ বিগত ১৬টি বছর তাদের ভোটের অধিকার পাইনি।
দেশের জনগণকে হত্যা গুম খুন ও মামলা মাদকরা দিয়ে তাদের কন্ঠকে রোধ করে রেখেছিল। সেই ব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশকে উত্তোলন করে দ্রুত সময়ের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এদেশে জনগণকে তাদের ভোটার অধিকার তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া।
এদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছেই দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। কিন্তু আমরা দেখছি সরকারের মধ্যে থাকা ব্যক্তিরা বিএনপি'র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ওরা বলতে চাই সেই ষড়যন্ত্র ফ্যাসিসদের।
ফ্যাসিসদের সাথে আঁতাত করে একটি চক্র ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু এই সকল ষড়যন্ত্রকে নারায়ণগঞ্জ তথা বাংলাদেশ মানুষ নস্যাৎ করে দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য ভোটের মাধ্যম বিএনপিকে ক্ষমতায় আনবেন ইনশাল্লাহ।
ডক্টরস্ এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ ( ড্যাব ) নারায়ণগঞ্জ শাখার কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য ডাঃ জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় , প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এড. আব্দুস সালাম আজাদ, বিশেষ অতিথি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ডাঃ মজিবুর রহমান, মাসুদ রানা, খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আবুল বাশার, ডক্টরস্ এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ ( ড্যাব ) নারায়ণগঞ্জ শাখার কমিটির সদস্য ডাঃ আমির উল মুলক, ডাঃ কাসেদুর রহমান, ডাঃ বয়েজ উদ্দিন, ডাঃ পংকজ নাহা, ডাঃ আবু সালেহ প্রমুখ।