নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

সোমবার,

০৬ মে ২০২৪

ব্যাহত হচ্ছে পুলিশী কর্মকান্ড, বিঘ্ন হচ্ছে শান্তিশৃংখলা

সিদ্ধিরগঞ্জে মূর্তিমান আতঙ্ক সোর্স হজরত ও ভুট্টু

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:০৮, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে মূর্তিমান আতঙ্ক সোর্স হজরত ও ভুট্টু

সিদ্ধিরগঞ্জে সোর্স হজরত আলী ও ভুট্টু বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় ছাড়াও ইয়াবা বা যেকোনো মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার কারিগর হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে সোর্স হজরত আলী ও ভুট্টু।

এরা এখন মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। সিদ্ধিরগঞ্জের এমন কোনো পাড়া-মহল্লা মিলবে না যেখানে নেই তাদের দৌরাত্ম্য। বিশেষ করে সানাপাড়, নিমাইকাশারী, বাগমারা, মাদানীরগর, সাইনবোর্ড, সাহেবপাড়া, মৌচাক, বসুহাজী মাকের্ট, চৌধরীপাড়া, মিজমিজি দক্ষিন পাড়া, কান্দাপাড়া, নতুন মহল্লা, শিমরাইল মোড়সহ সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের ভয় দেখিয়ে নিয়ন্ত্রন করছে মাদক ব্যবসা।

আর সে সুবাধে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এছাড়া বিশেষ বিশেষ সময়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে টাকা আদায় করে থাকে।

মূলত মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অবৈধ ব্যবসা, ভেজাল কারখানা, অসামাজিক কার্যকলাপ এসব সবকিছুর নিয়ন্ত্রক এরাই। এরা সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় করে। দাবিকৃত অর্থ না পেলে ফাঁসিয়ে দেয় মাদক বা অন্য কোন মামলায়।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, সোর্স হজরত ও ভুট্টু সাধারণত পুলিশের গাড়িতে করে ঘুরে বেড়ায়। আর এটাই এদের সম্বল। এরা কখনও নিজেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাজে। আবার কখনও একা বা সংঘবদ্ধ হয়ে ছিনতাই, অপহরণ, খুন, গুমসহ নানা অপরাধ করে বেড়ায়।

পুলিশের সঙ্গে সম্পর্ক সূত্রে এরা চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধ করেই চলেছে। তথ্য গোপন করার নামে এরা মাদক ব্যবসায়ীসহ দাগী অপরাধীদের সঙ্গে আঁতাতও করে। এরফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন অনাকাক্ষিতভাবে বিপদের সম্মুখীন হয়, তেমনি সাধারণ মানুষও হয় নির্যাতিত।

এদিকে সোর্স ভুট্টু ও হজরতে অপরাধ কর্মকান্ড, অত্যাচার ও অনাচারে অতিষ্ঠ হলেও ভুক্তভোগীরা পুলিশ ও আইনী ঝামেলার আতংকে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।

নাম না প্রকাশের শর্তে সানাড়পাড় এলাকার এক ভুক্তভোগী জানান, সোর্স ভুট্টু ওই ভুক্তভোগীকে গিয়ে বলে স্যারকে মাল খাওয়ার জন্য ১০ হাজার ও আমাকে মাল খাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে হবে যদি না দেন তা হলে আপনাকে, আপনার বড় ভাইকে ও আপনার ছেলেকে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে একাধিক পেইন্ডিং মামলার আসামি বানিয়ে জেলে পাঠাবে।

এছাড়াও হজরত মৌচাক মাদ্রাসা রোড থেকে এক ব্যবসায়ী ও তার স্ত্রীকে ডিবি পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে সত্তর হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে। এমন আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধ।

গত কয়েকদিন আগে ভুট্টু থানা পুলিশ দিয়ে সানাড়পাড়ের মৃত মোতালেব কাজীর ছেলে জসিমকে তুলে নিয়ে যায়। পরে জসিমকে মহিউদ্দিন মোল্লা থানা থেকে ছাড়িয়ে নেয়। লন্ডন মার্কেট এলাকার রাজা মিয়াকে তুলে নিয়ে দুই লাখ টাকা আদায় করে।

সোর্স হযরত ও ভুট্টো থানা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন মাদক সরবারহ করে থাকে। এসব মাদক দ্রব্য থানা ও ডিবি পুলিশের অভিযানে জব্দ করা মাদকের একটি অংশ বলে বিভিন্ন জায়গায় বলে থাকে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সন্ধ্যা পরই সোর্স হজরত ও ভুট্টুর ভিন্নরুপ প্রকাশ পায়। ছিনতাই চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, বিভিন্ন ভিকটিমকে হয়রানি ও মাদক পাচার কর্মকান্ডে জড়িতসহ বিভিন্ন অপরাধীদের সাথে দিনশেষে চলে তাদের নানা হিসেব নিকেশ ও দরকষাকষি এবং পরবর্তী দিনের কার্যক্রমের বহুবিধ পরিকল্পনা।  

এতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের বিভিন্ন মামলা, জিডি ও অভিযোগ তদন্তের সঠিক কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশ থানা এলাকার মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের তথ্য থেকে বঞ্চিত হওয়ায় যুব সমাজ পতিত হচ্ছে ধ্বংসের দিকে এবং বিঘ্ন হচ্ছে এলাকার শান্তিশৃংখলা।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।