
সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেড এলাকায় চুরি-ছিনতাই ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিনিয়ত এসব ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ পথচারী, বিশেষ করে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকরা।
অথচ ইপিজেড এলাকার পাশেই রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, র্যাব- ১১’র সদর দপ্তর ও শিল্পপুলিশের কার্যালয়। ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের অভিযোগ আইনশৃংখলা বাহিনীর নিশ্চুপ ভুমিকাতেই বাড়ছে অপরাধ প্রবনতা। র্যাব-পুলিশের কার্যকরী ভুমিকা না থাকায় অপরাধীরা প্রতিনিয়ত অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইপিজেড এলাকার রিমি গার্মেন্টসের সামনে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে ফুটপাত। এই ফুটপাতকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে নানান সমস্যা। চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে চুরি ও ছিনতাই সবই চলছে প্রকাশ্যে। পোশাক কারখানাগুলো ছুটি হওয়ার পর ছিনতাইকারীরা উৎপেতে থাকে নারী শ্রমিকদের টার্গেট করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রিমি গার্মেন্টসের দক্ষিণ পাশে বৈদ্যুতিক তারের বড় বড় রোল ফেলে রাখা হয়েছে। প্রায়ই এসব রোলের ভেতরে ছিনতাইকারীরা লুকিয়ে থাকে এবং সুযোগ বুঝে ছিনতাই করে।
রাত গভীর হলে এখানে ছিনতাইকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তারা নিয়মিত মাদক সেবন করে এবং মাদক কেনার অর্থ যোগাতে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। অপরদিকে ডিএনডি লেকের পাড়েও দেখা যায় এসব অপরাধী সমবেত হয়ে মাদক সেবন করছে।
স্থানীয়রা জানান, পুলিশ ও আইনশৃংখলার অন্যান্য বাহিনীর কোনো নজরদারি না থাকায় মাদকসেবীরা নির্বিঘ্নে এসব বৈদ্যুতিক তারের রোলের ভেতরে বসে মাদক সেবন করে। গত শনিবার সন্ধ্যায় এই স্থানে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে অটোচালক আকাশ ও শরিফ গুরুতর আহত হন। এ ঘটনা এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
পোশাক কারখানার একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাতেই প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও র্যাব-১১ কার্যালয় মাত্র ১ থেকে ২ শত গজ দূরে থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন স্পর্শকাতর এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকসেবন ও ছিনতাই হয়, তা বোধগম্য নয়।
তারা বলছেন দ্রুত এসব অপরাধীদের প্রতিহত না করলে এখানকার আইনশৃংখলার অবনতিসহ প্রানণাশের মত ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই এই অপরাধচক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর আলম বলেন, এসব অপরাধীদের রুখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। সম্প্রতি ছুরিকাঘাতে আহত অটো চালকদের কেউ থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফুটপাত, লেকের পাড়ে অবৈধ দখলদারীদের ঘিরে রয়েছে অপরাধীরা এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা তাদের সাথে সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো।
এসময় তিনি এসব অপরাধীদের দমন করতে সকলের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।