নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

মঙ্গলবার,

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিদ্ধিরগঞ্জে হিন্দুদের জমি দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন

প্রকাশিত:২১:১৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিদ্ধিরগঞ্জে হিন্দুদের জমি দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের রেখে যাওয়া প্রায় আড়াইশত কোটি টাকা মূল্যের ৩ একর ৮৬ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে কাড়াকাড়ি।

ফলে এ জমি দখল মুক্ত ও বিএস জরিপে যেন কোন ব্যক্তির নামে রেকর্ডভূক্ত না করা হয় সে দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫ টায় মধ্য সানারপাড়া এলাকায় এ মানববন্ধন হয়। 

মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, খোর্দ্দঘোষপাড়া মৌজার ৫ টি খতিয়ানে ৩ একর ৮৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন হিন্দুসম্প্রদায়। ১৯৪৭ সালে তারা চলে যান ভারতে। ফতুল্লার হরিহরপাড়ার মৃত মথুরা মোহন সাহার ২৪০ শতাংশ ও শ্রীবা চন্দ্র রায়ের ৭৪ শতাংশ জমির ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আশির দশক থেকে দখল ও বেচা কিনা শুরু হয়। 

অচেনা হিন্দু নারী-পুরুষদের দাতা বানিয়ে করা হয় ভূয়া দলিল। যার সংখ্যা ৫০ টির উপরে। ভুয়া দলিলে মালিক সেজে জমির চার পাশে গড়ে উঠে বসতি। তবে নবলক্ষী দেব্যার ৭২ শতাংশ খাস হিসেবে আরএস রেকর্ড হয়। ফলে বাকি ৩১৪ শতাংশ জমি ক্রয়সূত্রে মালিক দাবি করে ২০০৫ সালে দখলের চেষ্টা চালায় বিডিডিএল নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তবে সুবিধা করতে পারেনি। 

বর্তমান দরে প্রায় আড়াইশত কোটি টাকা মূল্যের এ জমিতে ২০২২ সালে নজর পড়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও নাসিকের ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের। তিনি তার ঘনিষ্ট সহযোগী সাজু ডেভেলপার্স লিমিটেডের মালিক শাহজাহান সাজুকে নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় বসতিদের বাড়ি-ঘর ভেঙে উচ্ছেদ করেন। 

পরে বালু ভরাট করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ায় তারা সফল হতে পারেনি। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী বলেন, এ জমির উত্তরপাশে আমার বাড়ি ছিল। 

৫০ বছর ধরে বসবাস করে আসছিলাম। বাদলের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে উচ্ছেদ করে দেয়। একই অভিযোগ করেন আরেক ভুক্তভোগী মো. ইমরান হোসেনসহ অনেকই। খাস ৭২ শতাংশের অধিকাংশই দখল হয়ে গেছে বলে দাবি করেন তারা।

মানববন্ধনে নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, সাজু ডেভেলপার্স ও সাবেক কাউন্সিলর বাদলের ক্যাডার বাহিনী অমানবিক তাণ্ডব চালিয়ে এ জমি দখল করে। পরে ভূয়া কাগজ বানিয়ে মালিক সেজে প্লট বানিয়ে বিভিন্ন লোকজনের কাছে বিক্রিও করেছে। 
একই প্লট একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করার তথ্যপ্রমান রয়েছে। বিএনপির এ নেতা বলেন, অত্র এলাকায় কোন কবরস্থান নেই। এ জমি উদ্ধার করে সরকারি প্রয়োজনে ব্যবহার অথবা জনস্বার্থে কিছু অংশে কবরস্থান করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।   

সানারপাড়ের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন বর্ণালী সংসদের যুগ্ন সম্পাদক সুমন মুন্না বলেন, দেশের পটপরিবর্তনের পর এ জমি দখল করতে স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী কিছু নেতা উঠেপড়ে লেগেছে। 
সাজু ডেভেলপার্সের লোকজনের সঙ্গে আাঁতাত করে সমঝোতার মাধ্যমে ভাগবন্টন করে চলমান বিএস জরিপে নিজেদের নামে রেকর্ড করার চেষ্টা শুরু করেছে। তাই সরকার ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি কোন ব্যক্তির নামে যাতে এ জমি রেকর্ড না হয়।