গত ২১ নভেম্বর সারা দেশে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ভুমিপল্লী এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ বেশ কয়েকটি ভবন পরিদর্শন করেছে রাজউক।
ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ ও রাজউকের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা সহ একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভবনগুলো পরিদর্শন করেন।
এসময় ভূমিকম্পে হেলে পড়া তিনটি ভবন সহ ছয়টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিটি ভবনে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন তারা। একই সঙ্গে বাসিন্দাদের সরিয়ে ভবনগুলো দ্রুত খালি করতে বাড়ির মালিকদের নির্দেশ দেন প্রতিনিধি দলের উর্ধতন কর্মকর্তারা।
পরিদর্শন শেষে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইআইবি) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী এ টি এম তানভীরুল হাসান তমাল সাংবাদিকদের বলেন, “ক্ষতিগ্রস্থ তিনটি ভবন আমরা ঘুরে দেখলাম।
প্রতিটি ভবনের ক্ষতিগ্রস্থের ধরণ একই রকম। আমাদের কাছে পরিলক্ষিত হয়েছে সয়েল সেটেলমেন্টের জন্য টল্টিং হয়েছে। তবে ভেতরে স্ট্রাকচার কোন ক্র্যাক আমরা দেখিনি। ফাউন্ডেশন অপ্রতুলতার কারণে এটা হয়েছে”।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে ভবনগুলো নির্মানের সময় ফাউন্ডেশন, বেজমেন্ট ও পায়লিং দূর্বল থাকায় ভূমিকম্পে হেলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ও ভেতরে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। আরও গভীর পায়লিং করা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা করা হয় নি।
তাই পায়লিংয়ের নীচের যেসব স্থানগুলো দূর্বল ছুল সেসব স্থান হেলে কাত হয়ে পড়েছে। আমরা ম্যাজারমেন্ট করে রিপোর্ট আকারে রাজউককে জানিয়ে দেবো। রাজউক ও মিনিস্ট্রির পক্ষ থেকে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় সে ব্যাপারে রিপোর্ট দিয়ে রাজউককে আমরা সহযোগিতা করব”।
রাজউক নারায়ণগঞ্জ জোন-৮ এর অথোরাইজড অফিসার প্রকৌশলী রংগন মন্ডল বলেন, “হাউজিংয়ে পরিদর্শন করে আমরা দেখলাম তিনটি ভবন পাশের তিনটি ভবনের উপর হেলে পড়েছে। অর্থাৎ ছয়টি ভবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এই ছয়টি ভবন নিরাপদ নয়। আমরা এই ছয়টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
পরবর্তীতে বুয়েট সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ভবনগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন। যতোক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ বলে বিবেচিত না হবে, আমরা সেইফ রিপোর্ট না পাবো সে পর্যন্ত ভবনগুলো ব্যবহার করা যাবে না”।
তিনি আরও বলেন, “আজকে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি ভবন মালিক ও বসবাসকারিরা অনেকেই ভবনগুলো খালি করছেন। আমাদের দিক নির্দেশনা তারা মেনে চলছেন। বিষয়গুলো আমরা জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়কে জানিয়েছি।
ভবনগুলো খালি করা হলে পুনরায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। সে পর্যন্ত ভবনগুলো ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ি ভবনগুলোর বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব”।


































