নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

২২ মে ২০২৪

সাজানো নির্বাচনে আর যাবো না : তৈমুর

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৭:০০, ১০ জানুয়ারি ২০২৪

সাজানো নির্বাচনে আর যাবো না : তৈমুর

তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, নির্বাচন হয়েছে সরকার বনাম সরকার। দেশ একদলীয় শাসনের দিকে যাচ্ছে। আমরা সাজানো নির্বাচনে আর যাবো না। আমাদের সকল প্রার্থীরা ঢাকা আসবে। তাদের সাথে কথা বলে প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেব।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অভিযোগ প্রদান শেষে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের জন্য দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি সম্ভব না। আগামী প্রজন্মও পারবে না। তৃতীয় প্রজন্ম হয়ত পারবে। সরকার ভাবে ক্ষমতা ছাড়লে আমাকে জেলে যেতে হবে। সেকারণেই ওরা নির্বাচন কুক্ষিগত করে। নির্বাচন কমিশনের কোন ক্ষমতা নেই।

প্রশাসনও সরকারের আজ্ঞাবহ। সিইসির সচিবের বক্তব্য শুনেছেন, সে বলেছে ডিসিদের কাছে মেসেজ চলে গেছে। সে অনুযায়ী রেজাল্ট হবে।

আমরা সবসময় রাজপথে ছিলাম। বাকি জীবনও আমাকে রাজপথেই থাকতে হবে। যখন চোখের সামনে দেখলাম এই ব্যারিস্টার সুমনও বলেছে সরকার বনাম সরকার নির্বাচন। এটা তাদের মুখেরই কথা।

রূপগঞ্জের দুটি সন্ত্রাসী বাহিনী শমসের ডাকাত ও রীতা মেম্বার। আমরা বারবার নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে বলে এসেছি। আমাদের কাছে ডকুমেন্টস আছে। আমরা বলেছি এরকম সিরিজ মামলার আসামিদের আইনের আওতায় আনা হোক। কিন্তু আমরা কোন প্রতিকার পাইনি।

নির্বাচনের দিন চনপাড়ায় রেজাল্ট ঘোষণার পর সমশের বাহিনী ও রিতা বাহিনী আমার কর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট করে। আমি আজ এই পরিবারটিকে নিয়ে এসপি অফিসে এসেছি। যেহেতু তারা আমার নির্বাচন করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এসপি সাহেব আশ্বস্ত করেছেন যে তারা নির্বিঘ্নে চনপাড়ায় বসবাস করতে পারবে। তিনি ওসিকে ফোনে নির্দেশনাও দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগেই ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব হয়ে আলোচনায় আসেন তৈমুর আলম খন্দকার।

তিনি নারায়ণগঞ্জ- ১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। তার পর থেকে কখনো ফোনালাপ, কখনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমালোচনা, আবার কখনো বা প্রশাসনের সমালোচনা করে নিয়মিত আলোচনায় ছিলেন তিনি।

নির্বাচনের পুরো সময় জোর দিয়ে বলেছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপিই হবে দেশের প্রধান বিরোধী দল।’

তৈমুরের আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য শুনে তাঁর সমর্থকেরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, ‘অটো পাসে’ সংসদ সদস্য হবেন তিনি। আবার কেউ আশায় ছিলেন ‘গায়েবি ভোটের’।

অবশেষে নির্বাচনে  তিনি পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ১৯০ ভোট। তৈমুরের এই আসনে মোট বাতিল ভোটের পরিমাণ ৪ হাজার ৩৫টি। সেই হিসাবে তিনি বাতিল ভোটের চেয়েও কম ভোট পেয়েছেন।

৭ জানুয়ারি (রোববার) ভোট গণনা শেষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আসনটিতে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী।

তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেটলি প্রতীকের মো. শাহজাহান ভূঁইয়া পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৫ ভোট। আর তৈমুর আলম খন্দকার পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ১৯০ ভোট। আসনটিতে ৪ হাজার ৩৫টি ভোট বাতিল হয়েছে।

আসনটির ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬১৬ ভোটারের বিপরীতে নির্বাচনে ভোট পড়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ৬২৪টি, যা মোট ভোটের ৫৫.১৪ শতাংশ। বিধি অনুযায়ী, মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট না পেলে প্রার্থী তাঁর জামানত হারাবেন।

সেই হিসাবে তৈমুর আলমের জামানত বাঁচাতে প্রয়োজন ছিল অন্তত ২৬ হাজার ৫৭৮ ভোট।