
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
(গ্রেপ্তারের ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন)
শুক্রবার (৯ মে) ভোর পৌনে ৬টার দিকে জেলা শহরের দেওভোগ এলাকায় তাঁর নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় সেখানে তাঁর বিপুলসংখ্যক সমর্থক অবস্থান করছিলেন। গাড়িবহর নিয়ে পুলিশও ছিল সতর্ক অবস্থানে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আইভীকে গ্রেপ্তারের জন্য তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ খবর শুনে চারদিক থেকে হাজার হাজার এলাকাবাসী তার বাড়ির সামনে এসে জড়ো হয়।
এসময় তাদের উদ্দেশ্যে আইভী বলেন, তাদের (পুলিশ) বলবা আমি দিনের বেলা ছাড়া যাবো না। আমাকে আটক করতে হলে দিনের বেলা আসতে হবে। দিনের বেলা আমাকে নিতে হবে।
এরপর উত্তেজিত জনতা বাড়ির প্রধান ফটক অবরোধ করে তার মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দেয় এবং বাড়ির প্রবেশ পথের দুই রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাখে।
এসময় শত শত নারী পুরুষ ‘দল যার যার, আইভী আপা সবার’, ‘আইভী আপার কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’ স্লোগান দিতে থাকেন ।
এছাড়া আশেপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয়দের রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানায়। একপর্যায়ে আশেপাশের ৪টি সড়কও তারা অবরুদ্ধ করে রাখে।
পরে রাত ৩টার দিকে পুলিশের তিন সদস্যের একটি টিম আইভীর বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় আইভী তাদের কাছে রাতের বেলা গ্রেপ্তার করার বিষয়ে অস্বীকৃতি জানায়। সকালে তাকে দিনের আলোতে গ্রেপ্তার করার কথা জানায়। সেই অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
(বাড়ির ভেতর পুলিশের সঙ্গে আইভী, ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন)
গ্রেপ্তার করার সময় সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আমি তো বাড়িতেই ছিলাম, আমি তো পালাইনি। তাহলে এইভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করতে হলো কেন?
তিনি আরও বলেন, আমি কী জুলুমবাজ, আমি কী হত্যা করেছি, আমি কী চাঁদাবাজি করেছি, আমার এমন কোন রেকর্ড আছে নারায়ণগঞ্জ শহরে কোন বিরোধী দলকে আঘাত করেছি, তাহলে কীসের জন্য কী কারণে, কোন ষড়যন্ত্রের কারণে কার স্বার্থে আমাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
তিনি বলেন, আপনারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, নতুন সরকার এসেছে। আমি কোনো অপরাধ করিনি তাহলে কেন আমাকে গ্রেপ্তার, জানতে চাই সরকারের কাছে।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলায় যদি আমার শাস্তি হয় তাহলে আমি তা মাথা পেতে নেব। আমি কোনো অন্যায় করিনি, চাঁদাবাজি করিনি, হত্যা করিনি। যখন নারায়ণগঞ্জের একটা মানুষও কথা বলতো না প্রতিবাদ করতো না তখন ত্বকী হত্যার প্রতিবাদসহ সব প্রতিবাদ আমি করেছি। আমি আপনাদের সেবা দিয়েছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদি জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৪টি ও ফতুল্লা থানায় ১টি মামলা আছে। তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।