নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আলোচনায় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:১০, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আলোচনায় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা

নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া মাসুদুজ্জামান আকষ্মিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ায় আলোচনায় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তারা দলের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও নড়ে চড়ে বসেছেন।

যদিও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলে আসছিলেন, মাসুদুজ্জামানের মনোনয়ন বাতিল করে তাদের যে কেউ মনোনয়ন পেলে সবাই তার পক্ষে কাজ করবেন। তবে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও শেষ দিকে এসে মাসুদুজ্জামানের মনোয়ন মেনে নিয়ে তার সাথে যোগ দিয়েছেন।

ওদিকে শুরু থেকে নির্বাচনী মাঠে মাসুদুজ্জামান ছাড়াও সক্রীয় ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালাম, নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান, নেতৃত্ব ও কূটনৈতিক প্রশিক্ষক, সরকারি নীতি ও টেকসই উন্নয়ন  বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আলিয়ার হোসেন, প্রাইম গ্রুপের মালিক শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ বাবুল, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।

সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপির ৩১ দফা ঘোষণার প্রচারপত্র বিতরণসহ নিজেদের নির্বাচনী প্রতিশ্রতি তুলে ধরে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়িয়েছেন এবং বেড়াচ্ছেন তারা। গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, নির্বাচনী পথ সভাসহ সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা করছেন।

এরমধ্যে মাসুদুজ্জামান দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরও তারা তাদের প্রচারণা অব্যাহত রাখেন। এক পর্যায়ে আবুল কালাম, সাখাওয়াত হোসেন খান, আবু জাফর আহেমদ বাবুল এক জোট হয়ে ঘোষণা দেন যে, মাসুদুজ্জামানের মনোনয়ন বাতিল করে তাদের যে কেউ মনোনয়ন পেলে তারা সবাই তার পক্ষে কাজ করবেন।

আর অধ্যাপক আলিয়ার হোসেন বলে আসছেন তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন। দল তাকে মনোনয়ন দিলে সবাইকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করবেন। আর দল অন্য কাউকে দিলে তার পক্ষে কাজ করবেন।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে প্রায় তিনবার সংসদ সদস্য ছিলেন এডভোকেট আবুল কালাম। তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি বিএনপি’র দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। দলের কাছে মনোনয়ন প্রত্যাশী। আশা করছি, দল আমাকে পূর্বের মতো এবারো মূল্যায়ন করবে।

প্রফেসর আলিয়ার হোসেন বলেন, টেকসই, স্মার্ট ও আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে নির্বাচন করার জন্য মাঠে নেমেছি। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দলের জন্য কাজ করেছি এবং করছি। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী আমি।

দল আমাকে মনোনয়ন দিলে সবাইকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করবো। তবে অন্য কাউকে দিলে তার পক্ষে কাজ করবো এবং তিনি বিজয়ী হলে তাকে দিয়ে আমি আমার নির্বাচনী ইশতেহারগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো।

মহানগর আহ্বায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৬ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতিতে আছি। আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে জেল খেটেছি, ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে।

তারপরও দল ও জনগণের পাশে ছিলাম জীবনবাজি রেখে। সাধারণ মানুষের আগ্রহ আমি যেন নির্বাচন করি। সেই হিসেবে আমি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় আমার নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। আমি আশা করি দল আমাকে প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করবে।

শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ বাবুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আমার সব সময় যোগাযোগ রয়েছে। নির্বাচন করার জন্য মাঠে নেমে বিভিন্ন এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি।

বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমেও মানুষের কাছাকাছি গিয়েছি। আমি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনকে একটি সুন্দর ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্মৃদ্ধ এলাকা হিসেবে গড়ে তুলবো।

প্রসঙ্গত: ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ।