শহরের মিশনপাড়ায় অবস্থিত রামকৃষ্ণ মিশনে দানবাক্সের টাকা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিশনের মহারাজকে হত্যাচেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে হত্যাচেষ্টার খবরটি গুজব বলে জানিয়েছেন মিশনের মহারাজ স্বামী একনাথনন্দ।
শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মিশনের প্রণামি বাক্সের টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মিশনের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকা শিক্ষার্থীরা মিশনেরই এক কর্মচারীকে আটক করে। তবে পালিয়ে যান আরেক কর্মচারী। টাকা চুরির এই ঘটনা ফুলে ফেঁপে পরিণত হয় স্বামী একনাথনন্দকে হত্যাচেষ্টার গুজব।
আটককৃত কর্মচারী কিশোর, বয়স ১৫ বছর। পালিয়ে যাওয়া অপর কর্মচারীও কিশোর (১৫)। উভয়েই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বলে নিশ্চিত করেছেন মিশন আশ্রমের কর্মকর্তারা।
শহরের মিশনপাড়া এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, রাতে মিশনের দানবাক্সের তালা ভেঙে টাকা চুরি করে পালানোর চেষ্টা করে দুই কর্মচারী। আশ্রম ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে দুই কর্মচারী আত্মগোপন করে। এর মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে এলাকাবাসী রাতভর আশ্রম পাহারা দেয় এবং সকালে মিশনের পাশে অবস্থিত শ্রম কল্যাণ ভবনের ঝোপ থেকে টাকাসহ এক কর্মচারীকে আটক করে।
মিশন কর্তৃপক্ষ জানায়, অভিযুক্ত দুই কিশোর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এবং তারা খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা। তবে তাদের এনআইডি বা বার্থ সার্টিফিকেটের কোনো কপি রাখেনি আশ্রম কর্তৃপক্ষ।
রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম সংলগ্ন এলাকার এক বাড়ির মালিক শফিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা শুনেছি, আশ্রমের মহারাজকে গলা চেপে হত্যার চেষ্টা করেছে তাঁর দুই কর্মচারী। মিশনে এসে জানতে পারলাম এমন কিছু হয়নি। আমার মতো অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাই বোনেরাও এমন গুজব শুনে ভয় পেয়েছে।’
রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের মহারাজ স্বামী একনাথনন্দ বলেন, ‘আমাদের আশ্রমের দুই কর্মচারী প্রণামি বাক্সের টাকা চুরি করে পালানোর চেষ্টা করেছিল। তখন আশ্রমের ভেতরে পাহারায় থাকা স্টাফ ও শিক্ষার্থীরা তাদের দেখে ফেললে ওই দুই কিশোর দেয়াল টপকে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে এক কর্মচারীকে আটক করেছে এলাকার লোকজন। তাকে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে।’
আশ্রমের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো উদ্বেগ আছে কিনা এমন প্রশ্নে মহারাজ বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেই। তবে ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়নি।
আমাদের এখানে ৪/৫ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কিশোর কাজ করত, তাদের পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন নেই। এই ঘটনার পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাদের আর কাজে রাখা হবে না।’