
আড়াইহাজারে আলামিন গাজী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের বাইরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন, হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধ অর্থ দেশে প্রেরণ, প্রবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা এবং নারী ও মানবপাচারসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে।
এসব বিষয়ে গত ২২ জুন ফুরকান আলী নামের এক ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর এ অভিযোগপত্র দায়ের করেন। অভিযুক্ত মো. আলামিন গাজী আড়াইহাজারের কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের হাজিরটেক গ্রামের হাজীর আলীর ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, “সাধারণ শ্রমিক ভিসায় সৌদি আরবে ১ হাজার ৫০০ রিয়াল বেতনে কর্মরত থাকার দাবি করলেও, বিগত ২-২.৫ বছরে তিনি বিভিন্ন সম্পত্তি অর্জন করেছেন, যা তার আয় ও পেশাগত অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এগুলো হলো, সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি সুলতানের মোড়ে, ৪ কাঠা জমিতে নির্মিত ৬ তলা ভবন, আনুমানিক মূল্য ৭ কোটি টাকা (কাগজে সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে দেখানো হয়েছে ৪.৫ কোটি টাকা), সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় ৩ কাঠা জমিতে নির্মিত ৬ তলা ভবন, আনুমানিক মূল্য ৫ কোটি টাকা (কাগজে দেখানো হয়েছে ৩.৫ কোটি টাকা), ২.৫ কাঠা জমি, আনুমানিক মূল্য ৭০ লাখ টাকা, ৩.৫ কাঠা জমি, আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা, ১০ কাঠা জমি, আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি টাকা), কাসসাফ শপিং সেন্টারে বানিজ্যিক দোকান, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি টাকা, অবৈধ হুন্ডি চ্যানেল ব্যবহার করে অর্থ স্থানান্তর: তিনি বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশে কোটি কোটি টাকা পাঠিয়ে থাকেন, যা মানি লন্ডারিং আইনে একটি গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিনি বাংলাদেশ থেকে সাধারণ মানুষকে সৌদি আরবে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে কাজের প্রকৃত অবস্থা না জানিয়ে প্রতারণা করেন। এতে অনেক প্রবাসী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি নারী ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত এবং দেশ ও বিদেশে একটি গোপন চক্রের মাধ্যমে এই কাজ পরিচালনা করেন।”
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, “বর্তমানে অভিযুক্ত মোঃ আলামিন এক মাসের ছুটিতে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এই সময়ের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করলে প্রাসঙ্গিক তথ্য ও সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ এবং সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদ সহজতর হবে। জনস্বার্থে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনার জন্য আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তদন্তের আওতায় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ করছি: তার সকল ব্যাংক হিসাব এবং বিদেশ থেকে অর্থ প্রেরণের উৎস যাচাই, আয়কর নথি ও সম্পত্তির দলিলপত্র পর্যালোচনা, হুন্ডি চক্রের সঙ্গে সংযোগ, নারী পাচার এবং প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্ত।”
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মো. আলামিন গাজী বলেন, “আমার বিরুদ্ধে দুদকে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে তা শুনেছি। যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাকে আমি চিনিই না। কেউ হয়তো শত্রুতাবশত এটা করেছে।
আমি বৈধ উপায়ে কষ্ট করে টাকা উপার্জন করি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দুদকে করা হয়েছে তা সব মিথ্যা। সঠিক তদন্ত করলে সব সত্য বেরিয়ে আসবে।”