
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড এলাকার পরিবহন চাঁদাবাজ শফি আলম চৌধুরী সাগরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রাজিব নামে একজন বাস চালকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম।
গ্রেপ্তার সাগর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ও পুনর্বাসন সোসাইটি কেন্দ্রীয় যুবকমাণ্ডের চেয়ারম্যান। সিদ্ধিরগঞ্জের নয়াআটি মুক্তিনগর এলাকায় ভাড়া থাকেন।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগিনা পরিচয় দিয়ে শফি আলম চৌধুরী সাগর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগাংরোর্ড এলাকায় বীরদর্পে চাঁদাবাজি করতো। তার কাছে জিম্মি ছিল পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাগর নতুন মামা বানায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মুন্সিকে। মামা পাল্টিয়ে আইয়ুব আলী মুন্সির ছত্রছায়ায় নতুন রূপে পরিবহণ চাঁদাবাজি শুরু করে সাগর।
আইয়ুব আলী মুন্সির ছোট ভাই বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ও পুনর্বাসন সোসাইটি কেন্দ্রীয় যুবকমাণ্ডের সাধারণ সম্পাদক এম এ রহিম মুন্সিকে সঙ্গে নিয়ে সগর গড়ে তুলে নতুন চাঁদাবাজ চক্র।
তবে রহিম মুন্সি ৫ আগস্টের পর বনে যায় বিএনপি নেতা। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় মাস দেড়েক আগে শ্রমিক পরিবহণের আলমগীর নামে একজন বাস মালিককে মারধর করে রহিম মুন্সি।
সোনারগাঁ উপজেলার কাঠপুর সোনাপুর রোড এলাকার আরফান খাঁর ছেলে মো. রাজিব (২৭) বলেন, আমি নিউ বেকার পরিবহনের একটি বাসের চালক। রাস্তায় গাড়ি চালাতে হলে দৈনিক ৫০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন সাগর। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করি।
গত ২৫ জুলাই দুপুর ২ টায় ৭-৮ জন লোক নিয়ে সাগর চিটাগাংরোড বাসস্ট্যাণ্ড এসে আমি ও আমার হেলপারকে মারধর করে ৬ হাজার ৮০০ টাকা জোর করে নিয়ে যায়। চাঁদা না দিলে গাড়ি চালাতে দিবে না বলে হুমকি দেয়।
এঘটনায় আমি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে আবার সাগর লোকজন সঙ্গে নিয়ে বাসস্ট্যাণ্ডে এসে আমি আমার হেলপারকে মারধর ও বাসের চার পাশের সব গ্লাস ভেঙে ফেলে।
পরে আমি ভাঙাচুরা বাস নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় যাই। তখন পুলিশ এসে ১১ টার দিকে চিটাগাংরোড এলাকা থেকে সাগরকে গ্রেপ্তার করে।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, সাগরকে গ্রেপ্তার করার পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ফজলুল রহমান তাকে থানা না নিয়ে চিটাগাংরোড হাজী এরহমান সুপার মার্কেটে এমএ রহিম মুন্সির অফিসে নিয়ে যায়। তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য রহিম মুন্সির অফিসে দেনদরবার শুরু হয়।
এতে পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিলে কয়েক ঘণ্টা পর তাকে থানায় নিয়ে যান। রহিম মুন্সির অফিসে গেলেও সাগরকে ছেড়ে দিতে দেনদরবারের বিষয়টি অস্বীকার করেন ফজলুল রহমান।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম সাগরকে আটকের কথা স্বীকার করে বলেন, তাকে জিজ্ঞাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।