
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাদের মধ্য থেকে মনোনয়ন চাই।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মহানগর বিএনপির যে সকল ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতারা রয়েছে তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী দিতে হবে। আর যদি আমাদের অভিভাবক তারেক রহমান দলের স্বার্থে এমুকে-তেমুককে নমিনেশন দিলে সেই সময় আমরা তার নির্দেশ পালন করতে বাধ্য।
আমরা জানি জিয়া পরিবার সবচেয়ে ত্যাগী ও নির্যাতিত, সুতরাং তারা সবসময় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাদের তাদের পাশে ও পক্ষে থাকবেন এবং মনোনয়ন দিবেন। আর আজকে অনেকেই বসন্তের কোকিল হয়ে এসেছে। তারা ৩০শে মে পালন করে গাড়ি বহন নিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করেন।
এখন তারা মসজিদ দান করে ও রাস্তার উন্নয়নের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছেন আরে ভাই বিগত ১৬টি বছর আপনারা কোথায় ছিলেন। এই ১৬টি বছর কি আমরা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করি নাই।
আমরাও মসজিদ মাদ্রাসায় দান করি রাস্তাঘাটের কাজ করেছি। আমরা কিন্তু হঠাৎ করে মসজিদ মাদ্রাসায় দান ও রাস্তার উন্নয়ন কাজ করতে যাই নাই।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অন্তর্গত সদর থানা বিএনপির আওতাধীন ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম কার্যক্রম বিতরণ পূর্বে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেল শহরের নন্দিপাড়ায় শেরে বাংলা প্রাইমারি স্কুলে ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তার বাবার মতন সেও বাকশাল তৈরি করে দীর্ঘ ১৬টি বছর অবৈধভাবে ক্ষমতায় ছিলেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় দেশে এদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করলেন, মানুষের ভোটের অধিকার ও বাকস্বাধীনতাকে হরণ করলেন। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপরে তিনি ইস্টিমরোলার চালালেন।
সর্বশেষ তিনি হত্যা, গুন খুন ও আয়না করে প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। যেই শেখ হাসিনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলে প্রতিবাদ করত তাকে রাতের অন্ধকারে তাকে গ্রেফতার করে আয়না ঘরে বন্দী করতো।
তার উপরে চলতো নির্মল অত্যাচার অবিচার। দুই চার বছরও তার কোন আর কোন খোঁজ খবর থাকতো না তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিত।
তাহলে আপনারাই দেখেন দীর্ঘ ১৬ টি বছর কি শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভালো কিছু করেছে। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ নয়টি বছর গৃহবন্দি করে রেখেছিল তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছিল।
আর আমাদের নেতা তারেক রহমান ১৬টি বছর অসুস্থ অবস্থায় লন্ডনের চিকিৎসাধীন থেকেও হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার মতন আমাদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়ে নেতাকর্মীদেরকে সুসংগঠিত করে আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছিল।
ঠিক তখনই কি আসলো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যখন ডিবি হারুন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়কে গ্রেফতার করে ডিবি অফিসের নিয়ে গেল তখন তারা আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দিল ঠিক তখনই আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত রপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাকি ৬৫ জন সমন্বয়কদের সাথে কথা বলে তাদেরকে সুসংগঠিত করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের পাশাপাশি ২০ দলীয় নেতাকর্মীদেরকে তিনি রাজপথে নামিয়ে দিলেন। পরবর্তীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের কোটা আন্দোলন থেকে সেই আন্দোলন এক দফা আন্দোলনে রূপান্তরিত হলে সেটি চূড়ান্ত আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস শেখ হাসিনার পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
তিনি আরও বলেন, আপনারা কি আবারো আওয়ামী লীগের সেই জাহিলিয়া যুগে যেতে চান। আমরা আমাদের বাক স্বাধীনতা চাই ভোটের অধিকার ফিরে চাই। আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে পেতে চাই। আমরা দেশের ২০ কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটা চাইতে চাই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চাই।
শেখ হাসিনা পলিয়ে যাওয়ার পর আমরা আশা করেছিলাম যে অন্তবর্তী কালীন সরকার আসবে তারা এসে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। বিগত ১৬ টি বছর আওয়ামী লীগ যে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল সে অধিকার তারা ফিরিয়ে দিবে। কারণ ফ্যাসিস শেখ হাসিনার দিনের ভোট রাতে সরকারি সংস্থাদের দিয়ে সীল মেরে নিয়ে গিয়েছিল।
আমরা মনে করেছি এই সরকার দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচনের আয়োজন করবে কিন্তু আমরা কি দেখলাম এই সরকার সংস্কার সংস্কার বলে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিচ্ছে। নতুন করে বাংলাদেশ মানুষকে আর আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিয়েন না।
কারণ বাঙালি জাতি ৫২ ভাষা আন্দোলন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধসহ ২৪ শে ফ্যাসিস শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করতে সুতরাং আপনার সেই ভুল করবে না যাতে করে আপনার বিরুদ্ধে আমরা আবারো আন্দোলন সংগ্রাম করি এবং আপনি ক্ষমতা চূর্ণ হন। সুতরা অতি শীঘ্রই আপনি নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন।
মহানগর ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাজী মনির হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, রাশিদা জামাল, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি,১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হোসেন প্রমুখ।