মারা যাওয়ার আগে বৃহস্পতিবার মিছিলের অগ্রভাবে শাওন
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসুচিতে পুলিশের বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই ঘন্টা ব্যাপি সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে রাজা আহমেদ শাওন (২২) নামে এক যুবক। বিএনপি-যুবদলের পক্ষ থেকে শাওনকে যুবদলের কর্মী দাবি করা হচ্ছে। আর পুলিশ সুপার বলছে শাওন যুবদল কর্মী নয়। সে ফতুল্লা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসেনের ভাতিজা। আবার শাওন নিহত হওয়ার ৭ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টায় ফতুল্লার নবীনগর এলাকায় শাওনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ। তারা বলছেন, শাওন যুবদল কর্মী নয়।
ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর মাস্টারের নেতৃত্বে বিক্ষোভে অংশ নেয় নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক ট্যাংক লরি কভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আলীম শেখ, বক্তাবলী ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি ফকির চাঁন বেপারী, এনায়েতনগর ইউপির ৩নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল জলিল, আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান শেখ, শাহজাহান, নিহত শাওনের মামা মীর হোসেন, শহিদ মোদিসহ শতাধীক নেতাকর্মী।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ টাইমসের হাতে তিনটি ছবি এসেছে। একটি ছবিতে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইছহাক সরকারের সাথে শাওনকে দেখা যাচ্ছে। আরেকটি ছবিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলামের আজাদের মিছিলে শাওনকে দেখা যাচ্ছে। সবশেষ বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য ও জেলা যুবদলের নেতা সাদেকুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে যোগ দিতে মিছিলের অগ্রভাগে ছিল শাওন।
তিনটি ছবিতে শাওনের রাজনৈতিক পরিচয় ফুটে উঠলেও তাকে যুবলীগ কর্মী বানাতে উঠে পড়ে লেগেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের একটি অংশ।
মজার বিষয় হলো- ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর মাস্টার জানান, শাওন আমাদের এলাকার ছেলে এবং ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীর ভাতিজা। তারা চার ভাইয়ের মধ্যে বড়জনের অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে। আর তিন ভাই তাদের চাচা শওকত আলীর সঙ্গেই থাকেন এবং শাওন যুবলীগের রাজনীতি করেন। আমরা এ হত্যাকান্ডের বিচার চাই। তার মানে পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামীলীগের অবস্থান। যেহেতু পুলিশের গুলিতে শাওন মারা গেছে সেহেতু এখন দেখার বিষয় আওয়ামীলীগ শাওনকে যুবলীগ কর্মী বানিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করে মাঠে নামে কি না। এমন কথা বলছেন অনেকেই।
নিহত শাওনের মা ফরিদা বেগম জানান, শাওন তার চাচা শওকত আলীর সাথে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন। চাচার কথার বাহিরে এক পাও হাটে না। বাড়ির কাছে শহিদুল্লাহর ওয়ার্কসপে কাজ করেন। সকালে কাজে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয় শাওন।
পরিবার ও স্থানীয় নেতারা দাবি করছেন শাওন আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
তবে ওয়ার্কসপ মালিক শহিদুল্লাহর জানান, শাওন আমার এখানে কাজ করে। কোন রাজনীতির সঙ্গে সে জড়িত নয়।
ফলে নিহত শাওনকে নিয়ে রশি টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত কি হয় তা দেখার অপেক্ষায় নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক মহল।