নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৯ মার্চ ২০২৪

নবাগত পুলিশ সুপার ও র‌্যাব-১১ এর হস্তক্ষেপ কামনা এলাকাবাসীর

কুতুবপুরের দুই কুতুব ইমরান-লিমনের নিয়ন্ত্রনে অপরাধ জগত

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০৪:০৯, ২৪ আগস্ট ২০২২

কুতুবপুরের দুই কুতুব ইমরান-লিমনের নিয়ন্ত্রনে অপরাধ জগত

ফতুল্লার পাগলা-কুতুবপুরের বটতলা, বউবাজার, শাহী মহল্লা, আকনপট্টি, প্যারাডাইস সিটি ও মল্লিকের মাঠসহ আশপাশ এলাকা অপরাধ আর অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। সরকারদলীয় সাইনবোর্ড ব্যবহার করে লিমন ও ইমরান পাগলা বটতলায় ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসে এক শ্রেণির পেশাদার অপরাধীদের ব্যবহার করে এলাকাগুলোতে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, নারী দিয়ে ব্যাল্ক মেইলিং, বিচার-শালিসীর নামে অর্থ আত্মসাতসহ নানা উপায়ে চাঁদাবাজী করে যাচ্ছে। কুতুবপুরের দুই কুতুব লিমন ও ইমরানের হাতে কেউ নির্যাতিত বা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ভয়ে কেউ টু শব্দটি পর্যন্ত করেন না।


স্থানীয়দের তথ্য মতে, ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় লিমন, ইমরান ও তাদের সহযোগিরা পাগলা-কুতুবপুরের বটতলা, বউবাজার, শাহী মহল্লা, আকনপট্টি, প্যারাডাইস সিটি ও মল্লিকের মাঠসহ আশপাশ এলাকায় গড়ে তুলেছে বিশাল মাদকের বাজার। এসব এলাকায় অতিতের যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে মাদক হয়ে উঠেছে অতিমাত্রায় সহজলভ্য। প্রতিটি অলি-গলিতে হাত বাড়ালেই মিলছে হালের ক্রেজ খ্যাত ইয়াবা ট্যাবলেট, গাঁজা, ফেনসিডিল, দেশীয় তৈরী মদ, বিয়ার ও হেরোইনসহ নানা মাদকদ্রব্য। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি লিমন-ইমরান বাহিনীর সদস্যরা নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের নামে চাঁদাবাজী, বিচার-শালিসীর নামে অর্থ আত্মসাৎ, সুন্দরী নারী-তরুণী দিয়ে ফ্ল্যাট ব্যবসার পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ধনী, টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে বø্যাক মেইলিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ আদায়ের মতো ভয়ংকর সব অপরাধের জন্ম দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বø্যাক মেইলিং চক্রের এক সুন্দরী তরুনীর নাম ছিলো  আখিঁ। এই আখিকে ব্যবহার করে লিমন ও তার চাচাতো ভাই নাঈম বহুজনকে বø্যাক মেইলিংসহ মাদক বহনের কাজ করাতো। সেই আঁখির লাশ ২০২০ সালে পাওয় যায় কুস্টিয়া জেলার ভেড়ামারা থানা সীমান্ত এলাকার একটি ডোবায়। অজ্ঞাত লাশ হিসেবে মর্গে স্থান হলেও ফিঙ্গার প্রিন্ট এর মাধ্যমে তার পরিচয় পায় পুলিশ। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়লে বেশ কিছুদন আতœগোপনে  চলে যায় লিমন ও তার চাচাতো ভাই নাঈম। কিছুদিন পর আতœগোপন থেকে বেরিয়ে এসে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠে অতীত অপকর্মে। থানা পুলিশের কথিত সোর্সরা আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদেরকে সহোযোগিতা করে থাকে।

 

নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র মতে, এ সকল অপরাধীদের সাথে থানা পুলিশের বেশ কয়েক কর্মকর্তার সাথে রয়েছে গভীর সখ্যতা। সে সকল পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রায় রাতেই দেখা যায়, পাগলা রেললাইন বটতলাস্থ লিমন-ইমরানের অফিসে খোশগল্পে মেতে থাকতে। লিমন-ইমনের রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। তার উপর পুলিশের সাথে গভীর সখ্যতা রয়েছে। ফলে নির্যাতিত ভুক্তভোগীদের কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও নতুন করে এই সন্ত্রাসী বাহিনীর রোষানলের শিকার হবার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ বা আইনি সাহায্য গ্রহণ করার সাহসটুকু পর্যন্ত করেন না।


তথ্য মতে, বউবাজার, বটতলা, শাহীবাজার, আকনপট্টি, প্যারাডাইস সিটি ও মল্লিকের মাঠসহ আশপাশ এলাকার অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণে ইমরান-লিমনের রয়েছে বিশাল এক বাহিনী। এই বাহিনীর উল্লেখ্যযোগ্য সদস্যরা হলো- ইমরানের ডান হাত খ্যাত ইব্রাহিম ওরফে ডিলার ইব্রাহিম, সামাদ, কালা চানঁ, ফোটনা রাসেল, ইমরানের চাচাতো ভাই ইয়াবা ব্যবসায়ী নাঈম। মাদক ব্যবসায়ী, মাদকাসক্ত ও কিশোর গ্যাং লিডার সোহান ওরফে ভাগ্নে সোহান, চাঁদ সিকদারের ভাই জসিম, বউবাজারের ফেন্সিডিলের ডিলার, সোহানের বাবা কালা জাহাঙ্গীর, ইয়াবার ডিলার ফারদিন, সাইফুল, গেমস লিটন, প্লাবন মানিক, সাইফুল ও মোস্তফা।


এছাড়া নাবিল, মদ রনি, জিয়া, লিটন, মোজাম্মেল, গোলাপ, সিরাজ,জাকির, শাওন ডিজে রাকিব, রবি রায়হান, রকি, মোক্তার, ফারদীন ও এসকে শরীফ এরা সকলেই উলে¬খিত এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও এদের প্রায় সবাই কিশোর গ্যাং সদস্য এবং মাদকাসক্ত।


স্থানীয় সকল পেশাজীবি মহলের দাবী ছাত্রলীগ নামধারী ইমরান-লিমনসহ উল্লেখিত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হলে অনেকাংশেই নির্মূল হবে পাগলার রেললাইন বটতলা, শাহী মহল্লা, আকনপট্টি, প্যারাডাইস সিটি ও মল্লিকের মাঠসহ আশপাশ এলাকার অপরাধ। আর তাই তাদেরকে গ্রেফতারে নারায়ণগঞ্জের নবাগত পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল এবং র‌্যাব-১১ এর হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।


আরও পড়ুন:কুতুবপুরে ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা, হাত বাড়ালেই মিলছে

সম্পর্কিত বিষয়: