নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

০৯ মে ২০২৪

ভোটার চুপ, গাজী-তৈমূরে মাঠ গরম

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২২:১৪, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩

ভোটার চুপ, গাজী-তৈমূরে মাঠ গরম

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি। নির্বাচন ঘিরে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। এরমধ্যে রূপগঞ্জের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন উচ্ছাস শুরু না হলেও মাঠ মাতিয়ে রেখেছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার। তারা দুইজন একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা পাল্টি বিশদাগার করেই যাচ্ছেন। যা নিয়ে রূপগঞ্জের চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে সর্বত্র মুখরোচক আলোচনা-সমালোচনা। যদিও প্রতীক বরাদ্দ না হওয়ায় আচরণবিধির কারণে প্রচার প্রচারণায় নামছেন না কোনো প্রার্থী। তবে গোলাম দস্তগীর গাজীর কর্মী-সমর্থকরা ভিন্ন কৌশলে ভোটের মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন। 


এদিকে আজ রোববার (১৭ ডিসেম্বর) মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। বিকাল ৫টার পর পরিস্কার হয়ে যাবে রূপগঞ্জে কার কপাল পুড়বে। কে হবে বলির পাঠা। তৈমূর না গাজী।


ওদিকে তফসিল ঘোষণার পর থেকেই পৈতৃক বাড়িতে অবস্থান করছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব ও এ আসনের দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। একইভাবে নিজের নির্বাচনি এলাকায় সরব রয়েছেন সরকার দলীয় তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। রূপগঞ্জের বাড়িতে নিয়মিত আসা যাওয়া করছেন তিনি। দুইজনই রূপগঞ্জ থেকে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। নানা গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত দুইজনই মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। ফলে মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বরের পর থেকে দুইজন জড়িয়ে পড়েন পাল্টাপাল্টি বাহাসে। তৈমূর আলম খন্দকার বর্তমান এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর নানা দোষত্রুটি তুলে ধরছেন গণমাধ্যমে। আবার গোলাম দস্তগীর গাজীও তৈমূর আলমকে ছেড়ে কথা বলছেন না। অনেকটা তুচ্ছু তাচ্ছিলও করছেন। এ নিয়ে দুই শিবিরে নির্বাচনী উত্তেজনা  ছড়িয়ে পড়লেও সাধারণ ভোটাররা নিশ্চুপ। তাদের নির্বাচনী উচ্ছাস বা আমেজ স্পর্শ করেনি এখনো। 


এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে শুক্রবারও (১৫ ডিসেম্বর) সারাদিন রূপগঞ্জে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এবং তৈমুর আলম খন্দকার। দুই প্রার্থীর বাড়িতেই দেখা গেছে কর্মী-সমর্থকদের আসা যাওয়া। তাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও কুশল বিনিময় করেছেন এই দুই প্রার্থী। এবং দুইজনই মিডিয়ার সামনে আবারো একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। 


তৈমুর আলম খন্দকার নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে সাংবাদিকদের বলেন, নেতা-কর্মীদের বলেছি নির্বাচনে যেখানে ব্যত্যয় ঘটবে সেখানেই মোবাইল ফোনে ভিডিও হবে। সেই ভিডিও দেশব্যাপী ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দেব।


তিনি বলেন, রাষ্ট্রের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কেনা যায়। তাদের কিনেই ভোটকেন্দ্র দখল করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী ও গণমাধ্যমের পক্ষেই এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। গণমাধ্যম কর্মীদের সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে তৈমুর বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্ট যেখানে ব্যত্যয় ঘটবে সেখানেই আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রসঙ্গে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগ প্রেসিডেন্ট। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন একই কমিটির সেক্রেটারি শাহজাহান ভুঁইয়া। উনারা প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি এখন পরস্পর মুখোমুখি। এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নাই। তবে নিজেরা যখন মুখোমুখি হয় তখনতো প্রতিপক্ষের জন্য দরজাটা খোলা। সেই খোলা রাস্তাটা আমি ব্যবহার কেন করবো না? আমি সেভাবেই হাঁটতেছি। জনগণ ব্যবহার করছে এই খোলা রাস্তাটা।
এদিকে, আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণায় না নামলেও নির্বাচনী আচরণবিধিকে গুরুত্ব দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের সাথে যোগেযাগ রক্ষা করে চলছেন সরকার দলীয় প্রার্থী, বর্তমান সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক।


তৈমুর আলম খন্দকারের মন্তব্যের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, তার তো কোনো কর্মী নেই। তিনি নিজেই একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ৮ থেকে ১০ জন লোক নিয়ে সবার কাছে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। কর্মী থাকলেতো বাধা দেওয়ার প্রশ্ন আসে। আমি আজ পর্যন্ত শুনি নাই তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেছে। যার ভোট নাই তার বিরুদ্ধে কেন মানুষ কথা বলবে? তিনি বিএনপির দলছুট। বিএনপি তাকে বহিষ্কার করেছে। সমস্ত বিএনপির লোকজন বলছে তাকে কেউ ভোট দেবে না। তারা বলছে, দল থেকে বহিষ্কৃত লোককে আমরা কোনোদিন বিএনপির বলে মনে করি না। কোথা থেকে তার কর্মী আসবে আর কোথা থেকে তার ভোট আসবে সেটা তিনিই বলতে পারবেন।

আরও পড়ুন:রূপগঞ্জে কে হচ্ছেন বলির পাঠা?


পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, মাত্র এক মাস হলো তারা একটা সংগঠন করেছে। কর্মী বানাতেই তাদের ২০ বছর লাগবে। যাদের কর্মী নাই তারা কীভাবে মাঠে আসবে? তিনি একলা একলাই নির্বাচনের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমি ইতিপূর্বে তিনবার নৌকার নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনমত যাচাই করেই আমাকে আবারও চতুর্থবার মনোনয়ন দিয়েছেন। নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রীর জনমত যাচাইয়ে আমি এগিয়ে আছি। তাই তিনি আমাকে আবারও নৌকার প্রতীক দিয়ে মনোনয়ন দিয়েছেন। তবে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের পর ভোটের মাঠে আসল চিত্র ফুঁটে উঠবে। কে কার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।