নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হাফডজনের বেশি প্রার্থী। তাদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচনী মাঠে নতুন মুখ হলেও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একজন পরিচিত মুখ অধ্যাপক আলিয়ার হোসেন। তিনিই প্রথম টেকসই, স্মার্ট ও আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়তে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৬ দফা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছেন শহর ও বন্দরের ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে। ইশতেহারের ১৬ দফা তুলে ধরে ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা প্রচারপত্রের সঙ্গে তার নির্বাচনী ইশতারও মানুষের মাঝে বিতরণ করেছেন আলিয়ার হোসেন। আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য নানা কায়দায় তার প্রচার-প্রচারণা চলছে।
লন্ডনের নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান আলিয়ার হোসেন নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক হাজী মোজাফ্ফর আলী কন্ট্রাক্টরের নাতি, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব আফজাল হোসেন ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আতাহার হোসেন সামসুর ভাতিজা এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক তিনবারের এমপি এডভোকেট আবুল কালামের ভাগ্নে। বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আলিয়ার হোসেন বাসযোগ্য সুন্দর নগরী গড়তে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চান।
অধ্যাপক আলিয়ার হোসেন বলেন, আমার রাজনীতিতে আসার একটি উদ্দেশ্য হলো সুস্থ রাজনীতি এবং একটি ডেভলপমেন্ট থিংকিং থেকে রাজনীতিতে আমার পদার্পণ। আমি নারায়ণগঞ্জের ছেলে হিসাবে নারায়ণগঞ্জের পরিবর্তন দেখতে চাই। আমার কষ্ট লাগে যখন আমার জন্মস্থানের মানুষগুলো খুব অসুবিধার মধ্যে আছে। তাদের সুখ শান্তি নেই এবং তারা যে সমস্যাগুলো ফেইজ করছে আমি যদি এগুলো কিছু না করতে পারি তখন এটা আমাকে পীড়া দেয়। সেই দায়িত্ববোধ থেকে আমার রাজনীতিতে আসা। তাছাড়া আমি আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের সাথে জড়িত। আমি যদি সেগুলো আন্তর্জাতিকভাবে করতে পারে তাহলে কেন আমার নিজের দেশের জন্য করতে পারবো না। বা নিজের এলাকার জন্য কেন করব না। সেই চিন্তা থেকে আমার রাজনীতিতে আসা। আমি আশি করি রাজনৈতিক পটভূমি যাই হোক না কেন আমি আপনাদের পাশে আছি এবং থাকবো। নারায়ণগঞ্জ এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে আমি সর্বদাই পাশে থাকবো।
নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে নেতৃস্থানীয়, মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা নমিনেশন প্রত্যাশী, আপনারা ভুলে যাবেন না আপনারা প্রত্যেকেই লিডার। আপনারা যে-ই নমিনেশন পান আপনি বা আপনারা অঞ্চল ভিত্তিক পাবেন। দল যাকে নমিনেশন দিবে তখন একটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব নিবেন। সেই দায়িত্ব যদি সঠিকভাবে পালন করতে না পারেন তার জন্য কিন্তু আপনাকে ইহকাল এবং পরকালে জবাবদিহি করতে হবে। একজন গ্রেট লিডার সে-ই হয়, যে তার জনগণকে বুঝতে পারে। যে নিজের স্বার্থের আগে জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়।
তাই আমি বলবো রাজনীতি এক জিনিস আর জনগণকে ম্যানেজ করা বা সামলানো আরেক জিনিস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যু বুঝতে হবে। বুঝতে হবে রাজনীতি, অর্থনীতি। সুতরাং এগুলা কিন্তু আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে বুঝতে হবে। সেই জিনিসগুলো কিন্তু মাথায় রেখেই আপনাদেরকে সামনে এগুতে হবে। আমি সব সময় আপনাদের পাশেই থাকবো দল যেই সিদ্ধান্ত নিবে মাথা পেতে নিব। আর দল যদি আমাকে নমিনেশন দেয় তাহলে আপনাদের সবাইকে নিয়ে আমি সামনে আগাবো।
আলিয়ার হোসেন বলেন, আমরা রাজনীতিতে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখবো। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের ৩১ দফা যদি দেখেন, একত্রে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ না করি তাহলে কোন কিছুই করা সম্ভব হবে না। সততা নিষ্ঠার সঙ্গে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। আমরা যদি নিজেরাই নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করি তাহলে আমাদের নিজেদের পরিবেশ নষ্ট হয়। নিজেরাই নিজেদেরকে শোধরানোর চেষ্টা করেন।

অধ্যাপক আলিয়ার বলেন, জনগণের কাছ থেকে কিন্তু একজন ভালো লিডারশিপ আসবে। আপনারা চার্জ করেন বড়লোক হতে গেলে কিন্তু বাংলাদেশে তিনটা জিনিস লাগে। এক হচ্ছে পৈত্রিক সূত্রে, আরেকটা হচ্ছে দুর্নীতি করে, আরেকটি হচ্ছে ব্যাংক লোন করে। আমি এবং আমাদের জনগণও প্রার্থী বাঁছাইয়ের ক্ষেত্রে অনেক সময় টাকাটাকে প্রাধান্য দেয়। এগুলো দেখা মোটেও ঠিক না। ফাস্ট দেখতে হবে আমাদের যোগ্যতা। আমরা যেমন একজন সন্ত্রাসীকে পছন্দ করি না ঠিক একইভাবে কোন দুর্নীতিবাজ যাদের ব্যাংক লোন রয়েছে, যাদের কাছে আমাদের সম্পদ নিরাপদ না তাদের ক্ষেত্রে এখন থেকে আপনারা প্রেসার ক্রিয়েট করেন।
যেমনি হোক তারা ঠিক হয়ে যাবে না হলেও পরবর্তীতে কোন চান্স থাকবে। আমার মনে হয় আপনাদেরকে অবশ্যই তাদের নিজস্ব ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো দেখা উচিত। শুধু তাই নয়, তাদের ক্যাপাসিটি এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা ও তাদের নৈতিকতা দেখতে হবে। যদি আমরা একটি সুন্দর নারায়ণগঞ্জ ও বাংলাদেশ দেখতে চাই তারেক রহমান সাহেবের স্বপ্ন ৩১ দফাকে বাস্তবায়ন করতে চাই তাহলে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
অধ্যাপক আলিয়ার হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জকে প্রাচ্যের ডান্ডি বলা হয়। নারায়ণগঞ্জ একটি প্রাচীন শহর ছিল এখানে অনেক ঐতিহ্য রয়েছে। আজকে দেখেন আমাদের ঐতিহ্য বলতে তেমন কিছুই নেই। একটি ভালো রাস্তায়ও নেই যেখানে আমাদের জনগণ সুন্দর ভাবে হাঁটা চলাচল করবে। একটা হাসপাতাল নেই। ভালো একটি স্কুল নেই, কলেজ নেই, ভালো ইনডাস্ট্রিয়াল নেই। বিনোদনের জন্য যথাযথ জায়গা নেই। নদীগুলো দূষিত হয়ে যাচ্ছে ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালাইজেশনের কারণে। সব কিছু মিলিয়ে আমি আমার নির্বাচনী ইশতেহারে ১৬টি পয়েন্ট দিয়েছি। আপনারা যদি মনে করেন আমি যোগ্য প্রার্থী তাহলে আমার পাশে থাকবেন, আমাকে অনুপ্রেরণা দেন, আমার জন্য আপনার আওয়াজ তুলুন, আমার জন্য দোয়া করুন। আর আমি যদি নমিনেশন নাও পাই তাহলেও আমি আপনাদের সাথে থাকবো। এবং যারাই নেতৃত্বে থাকবে আমি বলবো আসুন এখন থেকেই আমরা একত্রিত হই, সবাই একসাথে মিলেমিশে আমাদের নারায়ণগঞ্জকে সুন্দরভাবে মানুষের বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলি।


































