ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২ ডিসেম্বর থেকে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে ৮৩ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে ৮ জন, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে ১১ জন, নারায়ণগঞ্জ-৩ ( সোনারগাঁও-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে ১৪ জন, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে ২৮ জন ও নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে ২২ জন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে ৮ জন, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসন থেকে ১১ জন, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসন থেকে ১৪ জন, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসন থেকে সর্বোচ্চ ২৮ জন এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসন থেকে ২২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) :
রূপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-১ আসন। এ আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ৪ হাজার ৪১৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫ হাজার ১০১ জন, নারী ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩১২ জন এবং হিজড়া ২ জন।
আসনটিতে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৮জন প্রার্থী। তারা হলেন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ দুলাল, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের মো. রেহান আফজাল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. ইমদাদুল্লাহ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির মো. মনিরুজ্জামান চন্দন, গণঅধিকার পরিষদের ওয়াসিম উদ্দিন এবং স্বতন্ত্র মো. হামিদুল হক খোকন।
নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার)
আড়াইহাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৪৯ জন। যার মধ্যে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮৩ জন পুরুষ এবং ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৬১ জন নারী। আসনটিতে হিজড়া ভোটার ৫ জন।
আড়াইহাজার আসনে এ পর্যন্ত মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১১জন প্রার্থী। তারা হলেন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মো. আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী মো. ইলিয়াস মোল্লা, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির মো. আবু হানিফ হৃদয় এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. হাবিবুল্লাহসহ অন্যান্যরা।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ)
সোনারগাঁ উপজেলার পাশাপাশি এ বছর সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাযুক্ত করে গঠন করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন। এ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৯৮ হাজার ৩০৮ জন ও নারী ২ লাখ ৮৮ হাজার ৬৫১ জন। এছাড়া ২ জন হিজড়া ভোটারও রয়েছেন।
বর্ধিত এলাকায় নিয়ে গঠিত এ আসনে এ পর্যন্ত মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ১৪ জন প্রার্থী। তারা হলেন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গোলাম মসীহ, গণঅধিকার পরিষদের মো. ওয়াহিদুর রহমান মিল্কী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. আতিকুর রহমান নান্ন মুন্সী, শাহজাহান, বিএনপির মো. আল মুজাহিদ মল্লিক, জনতার দলের আবদুল করীম মুন্সী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. ইকবাল হোসেন ভূইয়া, আমার বাংলাদেশ পার্টির আরিফুল ইসলাম, স্বতন্ত্র পদে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, এনডিএম এর মিঠু মিয়া এবং বাসদের সেলিম মাহমুদ।
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা)
নতুন সীমানা অনুযায়ী সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসন। এ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৭০ হাজার ১৭ জন ও নারী ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩০৪ জন। এছাড়া ৪ জন হিজড়া ভোটারও রয়েছেন।
এ আসনে সর্বাধিক ২৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন, মো. শাহ আলম ও মোহাম্মদ আলী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মনির হোসাইন, এনসিপির আব্দুল্লাহ আল আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী মো. আব্দুর জব্বার, বাসদের সেলিম মাহমুদ, স্বতন্ত্র সেলিম রেজা (শাওন), খেলাফত মজলিসের মো. ইলিয়াস আহম্মেদ, আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির মো. আবু হানিফ হৃদয়, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সুরাইয়া তাবাসসুম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. ইসমাইল হোসেন কাউছার, বিএনপির মো. সুরুজ্জামান, স্বতন্ত্র প্রার্থী কবির হোসেন, মোহাম্মদ মমিনুল হক, কাজী জহিরুল ইসলাম, ডা. মো. আলী আশরাফ খান, মহানগর যুবদলের সদস্যসচিব শেখ মো. মশিউর রহমান রনি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির ইকবাল হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু, গণঅধিকার পরিষদের মো. আরিফ ভূঁইয়া, বাংলাদেশ জাসদের মো. সুলাইমান দেওয়ান, স্বতন্ত্র ফাতেমা মনির, সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিনের ছেলে গোলাম মোহাম্মদ কায়সার, মাহফুজুর রহমান নাঈম এবং মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর দেওয়ান, জাতীয় পার্টির ছালাউদ্দিন খোকা।
নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর)
নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন। তবে সম্প্রতি কিছু সংযোজন ও বিয়োজন হয়েছে। পরিবর্তীত সীমানা অনুযায়ী ভোটার তালিকা অনুযায়ী এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮০ হাজার ২৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪০ হাজার ৮২০ জন এবং নারী ২ লাখ ৩৯ হাজার ৪৫৫। আসনটিতে হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৭ জন।
জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিকে এ পর্যন্ত ২২জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। তারা মধ্যে রয়েছে, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, আতাউর রহমান মুকুল, বিএনপির আবু জাফর আহমেদ বাবুল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী মইনুদ্দিন আহমাদ, গণসংহতি আন্দোলনের তরিকুল সুজন, বাসদের আবু নাঈম খান বিপ্লব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাসুম বিল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদের মো. নাহিদ হোসেন, মুক্তি জোটের এইচ এম আমজাদ হোসেন মোল্লা, খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাকসুদ হোসেন ও মোসা. নারগিস আক্তার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মাহমুদ হোসেন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মো. আল আমিন রাকিব, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির মন্টু চন্দ্র ঘোষ এবং এনসিপির আহমেদুর রহমান তনু, স্বতন্ত্র মুহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম এবং মো. মাহবুব আলম।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে, সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও দাখিলের শেষ দিন। ফলে সোমবারও আরও কেউ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারে। তবে জমা দেয়ার পর জানা যাবে মনোনয়ন লড়াইয়ের কতজন মাঠে রয়েছেন। আর মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি চুড়ান্ত হবে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের প্রার্থী তালিকা।
প্রসঙ্গত: জেলায় মোট ভোটকেন্দ্র ৭৯৭টি। এরমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১৬৩ টি। নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোট কেন্দ্র ১২৯টি, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৩২টি, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে মোট কেন্দ্র ১১৮টি, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৪৪ টি, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মোট কেন্দ্র ২১০ টি, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৩৯ টি, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মোট কেন্দ্র ১৭৭ টি, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ২৭ টি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মোট কেন্দ্র ১৬৩ টি, ঝুঁকিপূর্ণ ২১টি কেন্দ্র ।
