
ঘুষ সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষিতে বাংলা ট্রিবিউনের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি লিখন রাজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
লিখন রাজের কাছে পাঠানো এক অফিসিয়াল চিঠিতে বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট পিবিআই নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল রাশেদের স্বাক্ষরে জারিকৃত নোটিশ অনুযায়ী, “সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের স্বার্থে” তাকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নোটিশ প্রাপ্তির দুই কর্মদিবসের মধ্যে সকাল ১১টায় পিবিআই নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে উপস্থিত হতে হবে এবং অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে পরিদর্শক মিন্টু কুমারের নাম সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে পিবিআই নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল রাশেদ জানান, “পুলিশের বিরুদ্ধে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে যে, সাংবাদিক কীভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছেন, সূত্র কী ছিল, এবং তথ্যের উৎস নির্ভরযোগ্য কিনা—এসব প্রশ্নের উত্তর জানার জন্যই এই নোটিশ। এটি কোনও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে নয়, বরং তথ্য যাচাইয়ের অংশ।”
প্রসঙ্গত, ৩ আগস্ট বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হাফিজুর রহমান একটি মামলার বাদীর কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এর আগে ২ আগস্ট এ সংক্রান্ত একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যা ঘিরে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে ৩ আগস্ট পিবিআই সদর দফতর থেকে হাফিজুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে সেই বরখাস্তের তথ্য গণমাধ্যমকে জানানো হয় ৪ আগস্ট।
এ বিষয়ে লিখন রাজ বলেন, আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে শুধু জনস্বার্থে এবং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ পরিবেশন করেছি। নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগের ভিত্তিতে আমি বাংলা ট্রিবিউনে রিপোর্টটি প্রকাশ করি।
এই ঘটনার পর পিবিআই নারায়ণগঞ্জ থেকে আমাকে একটি চিঠি দিয়ে তাদের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানানো হয়েছে। আমি বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই আমার অফিসকে অবহিত করেছি এবং এখন অফিস থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাংবাদিক হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি এবং আমি বিশ্বাস করি, স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে কেউ যাতে অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়, সেটা নিশ্চিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব।