সংঘাত, প্রতিহিংসা, দলাদলি আর অবিচারে ছেঁয়ে গেছে বিশ্ব। পৃথিবী জুড়ে ক্ষমতার দাম্ভিকতা, শোষণ, নিপিড়ন ও অস্থিরতা। ক্ষমতার দাপট দেখাতে চালায় যুদ্ধ। সেই আক্রমণে বারুদের আঘাতে ফুলের মতো নিষ্পাপ শিশুটিও আগুনে ঝলসে পুড়ে মরছে।
অমানবিক আর নিষ্ঠুরতা ও ধ্বংসের পৃথিবী গড়ে উঠছে। আর দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে মানবতা। তবুও আজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। বিশ্ব জুড়ে ধ্বনিত হচ্ছে মানবিক মানুষের কন্ঠে মানবতার বিজয়ের গান।
তাঁরা বিশ্ব দরবারে আহবান জানান- নিরাপদ জীবন, অধিকারের দাবী ও ন্যায় বিচারের। সেই সাথে অস্থিতিশীল পরিবেশ পরিহার করে বসবাস যোগ্য সুন্দর একটি পৃথিবীর। যুদ্ধ নয় শান্তির।
মানবাধিকার আসলে কি? হয়তো অনেকের কাছে অজানা; মানবাধিকার মানে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ। যা মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র (Universal Declaration of Human Rights - UDHR) নামে পরিচিত।
এটি ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয়েছিলো। মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- বিশ্বজুড়ে সকল মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করার।
এর গুরুত্ব বলতে আমরা জানি, মানবাধিকার হলো- প্রথম বিশ্বব্যাপী ঘোষণা এবং সকল মানুষের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করার একটি ঐতিহাসিক দলিল।
মানবাধিকারের বাস্তবতা বলতে বোঝায়, প্রতিটি মানুষের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা এবং অধিকার নিশ্চিত করা। তবুও বিশ্বজুড়ে এর প্রয়োগে বিশাল ফারাক রয়েছে; যেখানে আইন ও নীতিগত প্রতিশ্রুতি থাকলেও বৈষম্য, নিপীড়ন, বিচারহীনতা ও সহিংসতার কারণে বাস্তবে তা প্রায়শই লঙ্ঘিত হয়। ফলে বাস্তবায়নে মানবাধিকার সংগঠন ও রাষ্ট্রগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবুও জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুরক্ষা ও মর্যাদা পূরণ করার দায়িত্ব সরকারের।
মানবাধিকারের মূল কথা হলো- মানুষ জন্ম থেকেই তাঁর অধিকারগুলো ভোগ করবে। সেটা হবে লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ সকলের জন্য প্রযোজ্য। প্রত্যেকেই অন্যের ক্ষতি না করে, নিজের মর্যাদা ও স্বাধীনতা বজায় রাখা। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন, বৈষম্য পরিহার করা।
এর জন্য সরকার আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বিচার নিশ্চিত করবে এবং সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাধারণ মানুষকে তাদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করবে।
তাই মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভূমিকা হলো- অনিয়মগুলো সনাক্ত করা, সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা। সর্বোপরি বলা যায়- মানবাধিকার একটি আদর্শ। যাহা বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ও সমাজ উভয়েরই সক্রিয় ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
লেখক ও সাংবাদিক
মোঃ শফিকুল ইসলাম আরজু
সভাপতি
আইন সহায়তা তথ্য রিপোর্টার মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা।


































