নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০১:২১, ২ অক্টোবর ২০২২

ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

বন্দর উপজেলার নাসিক ২৫নং ওয়ার্ডে লক্ষনখোলা আলহাজ্ব ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের  সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও জোর করে ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্যদের স্বাক্ষর আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।


এ অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ৬জন সদস্য।


লিখিতঅভিযোগে উল্লেখ করেন বন্দর উপজেলার নাসিক ২৫নং ওয়ার্ডে লক্ষনখোলা আলহাজ্ব ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও কিছু কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম অমান্য করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিদ্যালয় পরিচালনা করছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির পরামর্শে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আলেয়া বেগম। 


বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এজেন্ডা অনুযায়ী মিটিংয়ে সকলের সিদ্ধান্ত পরবর্তী মিটিংয়ে রেজুলেশন না করিয়া তাদের মনমত রেজুলেশন লিখে জোরপূর্বক সম্মানিত সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয় এবং চেষ্টা করে। প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বাছাই কমিটি ও নিয়োগ কমিটি করার কথা থাকলেও তাদের মনমত কমিটি করে।

 

তারপরও বাছাই কমিটি দ্বারা ২য় বার পত্রিকায় প্রকাশিত নিয়োগ দরখাস্ত বাছাই না করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া করছে এমনকি মো. দেলোয়ার হোসেন নামে অত্র বিদ্যালয়ের দরখাস্ত বিধিমত না হওয়ায় জানতে পেরে সে দরখাস্ত সরিয়ে ফেলে কাগজপত্র ঠিক করে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এর মাধ্যমে জমা দেয়। ডিজি অফিসে নিয়োগ কমিটির প্রতিনিধি চেয়ে যে ৪নং সভার রেজুলেশন দেখিয়ে নিয়োগ কমিটি হয়েছে তা মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক না। 


তার প্রমানস্বরূপ পরবর্তী ৪-৫নং মিটিংয়ে আবার বাছাই ও নিয়োগ কমিটি করার জন্য এজেন্ডা আনা হয়। যদি ২য় সভায় বাছাই ও নিয়োগ কমিটি হয়ে থাকে তবে কেন ৫ ও ৬নং সভায় এজেন্ডা আনা হলো। অতএব বিভিন্ন অনিয়ম দূর করে স্বচ্ছলতার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও শিক্ষার মান উন্নয়নে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।


জানা যায়, জনবল অবকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ মোতাবেক আলহাজ্ব ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের  (নিম্ন মাধ্যমিক এমপিওভুক্ত) জন্য প্রধান শিক্ষক ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী আবশ্যক মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। 


বিধি অনুযায়ী পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ড ও দর্শনযোগ্য স্থানে লাগানোর কথা থাকলেও তা না করে গোপন করেছেন সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। 


বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলেয়া বেগম, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আমির হোসেন বাদশা তাদের আত্মীয় ও পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন। 


ম্যানেজিং কমিটির অভিবাবক প্রতিনিধি সদস্য কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলেয়া বেগম আমাদের নিয়োগ বোর্ড ও নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ সর্ম্পকে কোন কিছুই অবগত করেনি। তারা রেজুলেশন না করে তাদের মনমত রেজুলেশন লিখে জোরপূর্বক সম্মানিত কয়েকজন সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়। 


প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বাছাই কমিটি ও নিয়োগ কমিটি করার কথা থাকলেও তারা নিজেদের মনমত কমিটি করছে। মূলত তারা অনৈতিক সুবিধা নিতে আত্মীয় ও পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।


ম্যানেজিং কমিটির আরেক অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য মো. শাহ্ আলম বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। অসুস্থতার কারণে আমি বাসায় অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ করে একদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাকে দেখতে বাসায় আসেন এবং স্বাক্ষর নেয়। 


আমাকে ভূল বুঝিয়ে রেজুলেশনের খালি খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে আমি ক্ষুব্ধ হয়েছি।


ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলেয়া বেগম কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এসব মিথ্যা। যেসব অভিভাবক সদস্য আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। আমরা সব কিছু সঠিক নিয়মে করেছি। কোন অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি। 


তিনি আরও বলেন, কোন অভিভাবক সদস্যের কাজ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। মো. শাহ্ আলম সাহেব জেনে শুনেই রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করেছিলেন।


এবিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির হোসেন বাদশা বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ইউওন বরাবর দেওয়া হয়েছে বলে আমি শুনেছি। তবে আমরা এমন কোনো স্বজনপ্রীতি বা অনিয়ম দুর্নীতি করিনি। তা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে সত্য কিনা মিথ্যা।


এবিষয়ে জানতে চাইলে বন্দর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফুর রহমান এ বিষয়ে আমি অবগত আছি। আমাকেও অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছে সুতরাং আমার এখানে কিছু করার নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


তবে এবিষয়ে জানতে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
 

সম্পর্কিত বিষয়: