নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

০৯ মে ২০২৪

অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার, বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৮:১৫, ২৬ জানুয়ারি ২০২৪

অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার, বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ

ভরা মৌসুমেও অস্থির বাজার। স্বস্তি ফিরছে না কোনো কিছুতেই। চাল ডাল থেকে মাছ মাংস কিংবা সবজি সবকিছুরই বেড়েছে দাম।

আয় না বাড়লেও, প্রতিনিয়ত নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে হিসাব মেলানো কঠিন হয়ে পড়েছে ক্রেতাদের। একের পর এক পণ্য যুক্ত হচ্ছে বাড়তি দামের তালিকায়। এমন অবস্থায় বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ।

বাজারের তালিকা কাটছাঁট করেও, সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ঊর্ধ্বমুখী পণ্যের দামে শুধু গরিব নয়, বাজারের থলি ছোট হয়েছে বেশিরভাগ মধ্যবিত্তের। দাম নিয়ন্ত্রণে নেই তদারকি, সুখবর দিতে পারছে না সরকারি কোনো সংস্থাও।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান পাইকারি বাজার দিগুবাবুর বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েকদিনে চালের দাম বেড়েছে ৬ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে আটা-ময়দা ও ডালের দাম কেজিতে ১০ টাকা ও তেলের দাম লিটারপ্রতি ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

সরু (মিনিকেট) চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৪ টাকা দরে। যা সপ্তাহ দুয়েক আগে ছিল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে সর্বোচ্চ ৬ টাকা বেড়েছে। মাঝারি (বিআর-২৮, পায়জাম) চালের কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা। এছাড়া কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা।

প্রতি ডালে কেজি প্রতি বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। মুগ ডাল ১৬৮ টাকা, বুটের ডাল ১০৮ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৭৫ টাকা, মসুর ডাল ১৪০ টাকা, ছোলার ডাল ৯৬ টাকা, খেসারির ডাল ১০০ টাকা, ডাবলি ৭২ টাকা ও মোটা ডাল ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁপে, মুলা ও শালগম ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজি কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৪০ থেকে আকারভেদে ৬০ টাকা পর্যন্ত। ভরপুর শীতে বাজারে শিমের দামও চড়া; প্রতি কেজি ৮০ টাকা। আর মাঝারি আকারের একটি লাউয়ের দাম ৮০ টাকা, বড় হলে ১০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা। যা গত মাসে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে ছিল। সোনালি জাতের মুরগির দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়। আর গরুর মাংসের দাম ৬৫০ টাকা থেকে লাফিয়ে ৭৫০ টাকা হয়েছে।

এদিকে আমদানিকৃত সব খাদ্যপণ্যের দামও বেড়েছে। বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৭৩ টাকা করা হয়েছে, যা আগে বিক্রি হয়েছে ১৬৯ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকা করা হয়েছে।

একই সঙ্গে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটা ও ময়দার দাম ১০ টাকা এবং চিনির দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি কেজি প্যাকেটের আটার দাম এখন ৬৫ টাকা। ময়দার দাম বেড়েছে হয়েছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা।

চিনির দামেও একই ধরনের অস্থিরতা। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি বাজারে ১৪৮ টাকা মূল্য থাকলেও বিক্রেতারা সেটা খুলে বিক্রি করছেন ১৫০-১৬০ টাকায়।

বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা। এছাড়া বাজারে এখন প্রতি কেজি আদা এবং রসুন একই দামে ২০০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম কমার কথা। কিন্তু দাম না কমে বরং বেড়ে যাওয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। 

ভোক্তাদের অভিযোগ, বাজারে সিন্ডিকেট কাজ করছে। যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যে কারণে এ পরিস্থিতি।

এদিকে, সবজির দাম বাড়ার পেছনে কুয়াশাকে দায়ী করেছেন পাইকারি বিক্রেতা আমান উল্লাহ। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বেশি কুয়াশা পড়ছে। এতে নির্ধারিত সময়ে পণ্যবাহী ট্রাক আসছে না। সে কারণে নারায়ণগঞ্জে তুলনামূলক পণ্য কম আসছে। 
 

সম্পর্কিত বিষয়: