নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪

ম্যান্ডেট ছাড়া সরকার বলেই যা ইচ্ছে তাই করছে : রফিউর রাব্বি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:০৭:১১, ৯ জুন ২০২১

ম্যান্ডেট ছাড়া সরকার বলেই যা ইচ্ছে তাই করছে : রফিউর রাব্বি

তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ৯৯ মাস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন চত্বরে আলোকপ্রজ্বালন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ভবানী শংকর রায়।

অনুষ্ঠানে রফিউর রাব্বি বলেন, আট বছরের পেরিয়ে গেলেও ত্বকী হত্যার বিচার এখনো শুরু হয় নাই। এ দায় যতটানা বিচার ব্যবস্থার তারচেয়ে বেশি সরকারের। কারণ, তদন্তে যখন ত্বকীর ঘাতক সরকার দলীয় চিহ্নিত হলো, তখনি সরকার এ বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। দলীয় সন্ত্রাসীদের রক্ষার জন্য সরকার ত্বকী হত্যায় অঘোষিত ইন্ডেমনিটি জারি করে রেখেছে। দেশে সুশাসন, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচনী ব্যবস্থা, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র সবকিছুই আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সবকিছু দলীয়করণ করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে ধ্বংস করেছে সরকার। বিচার-প্রক্রিয়া ও আইনের স্বভাবিক গতিকে ধ্বংস করেছে। সরকার ত্বকীর ঘাতকদের বিভিন্ন সময় পুরস্কৃত করেছে। 

তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রী-আমলারা টাকা খেয়ে নারায়ণগঞ্জের রাস্তা ও বিভিন্ন স্থাপনার নাম করণ করছে। যে সব মন্ত্রী-আমলারা এ নামকরণ করছেন তাদের কাছে জানতে চাই, যাদের নামে এ নামকরণ করা হয়েছে, দয়া করে আপনারা নারায়ণগঞ্জে বা দেশে তাদের অবদানটা কী তা আমাদের জানান। খুন-খারাবি, লাশ ফালানো এ সব কোন যোগ্যতার মধ্যে পড়ে কিনা তা আমাদের জানান।  নারায়ণগঞ্জের মানুষ হিসেবে তা জানার অধিকার আমাদের আছে। ম্যান্ডেট ছাড়া সরকার বলেই জন মতের তোয়াক্কা না করে যা ইচ্ছে তাই করে চলেছে। নামকরণ নিয়ে সরকার দেশে যা করছে, বিশে^র কোথাও এমন নির্লজ্জ নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না। 

হালিম আজাদ বলেন, প্রধান মন্ত্রী বলেছেন কারা ত্বকীকে হত্যা করেছে তা তিনি জানেন, অথচ তিনি বিচার করছেন না। একজন গডফাদার তার ভাতিজাকে নিয়ে ১১জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। গডফাদারকে রক্ষার জন্যই ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ কওে রাখা হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে এ হত্যার বিচার শুরু করার নির্দেশ দেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

ভবানী শংকর রায বলেন, আজ ত্বকী হত্যার যেমনি ৯৯ মাস তেমনি একটি বিচারহীনতার ও ৯৯ মাস। সরকারের বৈষম্যমূলক বিচার ব্যবস্থার কারণে এ দীর্ঘ সময়েও ত্বকী হত্যার বিচার হয়নি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ সাস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এড. জিয়াউল ইসলাম কাজল, এড. প্রদীপ ঘোষ বাবু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, অমল আকাশ, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদ জেলা কমিটির সমন্বয়ক নিখিল দাস, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা প্রমূখ।

বক্তারা আরও বলেন, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজো পেশ করা হয় নাই। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোকপ্রজ্বালন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। 


 

সম্পর্কিত বিষয়: