বন্দরে নির্মাণাধীন এস, এফ ডেনিম এ্যাপারেলসে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি অফিসার মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে অজ্ঞাতনামা ২৫ জন ডাকাত দলকে আসামী করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে যে কোন সময়ে বন্দর উপজেলার মদনপুর টু মদনগঞ্জ সড়কের তালতলা এলাকায় উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানে এ ডাকাতি ঘটনা ঘটে।
মামলা ও বাদী তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ভোর আনুমানিক ৪টায় কারখানার পূর্বদিকে খোলা জায়গা দিয়ে ২০-২৫ জনের একটি ডাকাতদল প্রতিষ্ঠানের ভিতরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সিকিউরিটি,সুপারভাইজার ও ৪জন নাইট গার্ডকে বেধে তাদের মোবাইল ফোন নিজেদের আওতায় নিয়ে নেয়।
ওই সময় ডাকাতদলের মারধরে সুপারভাইজার জাহাঙ্গীর ও নাইট গার্ড ওমর ফারুক আহত হয়। পরে নাম্বার প্লেটবিহীন ১টি পিকআপ ট্রাকে করে অতঃপর। আনুমানিক অজ্ঞাতনামা ২৫ জনের ডাকাতদল প্রজেক্টে ব্যবহৃত পল্লী বিদ্যুৎ লাইনের ০৩ টি ট্রান্সফরমার (প্রতিটি ২৫ কেভিএ) খুলে নিয়ে যায় যাহার আনুমানিক মূল্য ৩,৬০,০০০/- টাকা।
এছাড়া ডাকাতদলের সংঘবদ্ধ টম ধারাবাহিকভাবে প্রজেক্টের ভিতরে রক্ষিত নিম্নউল্লিখিত মালপত্র এবং নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
লুন্ঠিত মালামাল হলো-
০১) রড প্রায় ০৪ টন (প্রজেক্টে নির্মান কাজে ব্যবহৃত কাটপিছ) যাহার আনুমানিক মূল্য ৩,৫০,০০০/- টাকা।
০২) ০৫ কয়েল বৈদ্যুতিক ক্যাবল (চার আর এম) নাহার আনুমানিক মূল্য ৪৭,৫০০/- টাকা।
০৩) ১০ কয়েল বৈদ্যুতিক ক্যাবল (দশ আর এম) যাহার আনুমানিক মূল্য ১,৮০,০০০/- টাকা।
০৪) ১১০ মিটার গ্রীফেস আরইবি ক্যাবল (সার্ভিস) যাহার আনুমানিক মূল্য ২,২০,০০০/- টাকা।
০৫) ০২ পিছ পেলোডার গাড়ির ব্যাটারী যাহার আনুমানিক মূল্য ৭০,০০০/- টাকা।
০৬) ১০ পিছ হ্যালোজেন লাইট যাহার আনুমানিক মূল্য ৩৪,০০০/- টাকা।
০৭) ০৬ পিছ এলইডি লাইট যাহার আনুমানিক মূল্য ৩,০০০/- টাকা।
০৮) ০৩ হোস পাইপের নজেল যাহার আনুমানিক মূল্য ৭,৫০০/- টাকা।
০৯) ০১ গিছ মোটর পাম্প যাহার আনুমানিক মূল্য ১৬,০০০/- টাকা।
১০) ০১ পিছ লোহার টেবিল যাহার আনুমানিক মূল্য ৫,০০০/- টাকা।
১১) ০৩ পিছ ছাতা, ০১ পিছ ক্যালকুলেটর যাহার আনুমানিক মূল্য ২,০০০/- টাকা।
১২) ০৩ পিছ সিকিউরিটি লাইট যাহার আনুমানিক মূল্য ১,৩৫০/- টাকা।
১৩) ০৬ জন সিকিউরিটি ব্যবহৃত মোবাইল ফোন যাহার আনুমানিক মূল্য ১,৩৪,৫০০/- টাকা
১৪) সিকিউরিটি খাবারের মাসিক বাজার বাবদ রক্ষিত নগদ ক্যাশ ২০,৩৮০/- টাকা
১৫) সিকিউরিটিদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত জিনিসপত্র- ট্রিমার, পাওয়ারব্যাংক, চার্জার, জেকেট, ব্যাগ ও অন্যান্য মালামাল যাহার আনুমানিক মূল্য ১৮,০০০/- টাকা। যাহার সর্বমোট মূল্য- ১৪,৬৯,২০০/- (চৌদ্দ লক্ষ উনসত্তর হাজার দুইশত ত্রিশ) টাকা।
১৬) স্টোরের রক্ষিত অন্যান্য খুচরা মালামাল, যন্ত্রাংশ এবং প্রজেক্টের নির্মানাধীন কাজের হিসাব-নিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ও নথিপত্র। যার মূল্য- ১৪ লাখ ৬৯ হাজার ২৩০ টাকা।
এ ঘটনায় বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোক্তার আশরাফ উদ্দিন জানান, ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। লন্ঠিত মালামাল উদ্ধারসহ ডাকাতদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে’।
স্থানীয়রা জানান, বহু বছর যাবৎ এ সড়কের ইস্পাহানী বাজার থেকে তালতলা স্ট্যান্ড পর্যন্ত অহরহ ডাকাতি ঘটনা ঘটছে। পুলিশি অভিযান না থাকায ডাকাতদল বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরীতে হানা দিয়ে ট্রাকযোগে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন মালামার লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।
ডাকাতের উৎপাত বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে সাধারণ জনগণ ডাকাতির বিষয় নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ও উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও বন্দর থানার ওসির জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।


































