সিদ্ধিরগঞ্জে কোরেস বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবি ও বিনা নোটিশে শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে কাজ বন্ধ রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ বেতন পরিশোধ না করেই কারাখানা বন্ধের পায়তারা চালাচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে শ্রমিকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় কলা গাছ ফেলে অগ্নি সংযোগ করে অবরোধ করে। এতে প্রায় পৌনে ১ ঘন্টা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নিয়ে রাস্তার পাশে গার্মেন্টসের সামনে অবস্থান করছে শ্রমিকরা।
এদিকে শ্রমিকদের অবরোধে মহাসড়কের উভয়পাশে সাইনবোর্ড হতে কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, কোরেশ বাংলাদেশ লিমিটেডে মোট ৩০০ জন শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত। এর মধ্যে ১২৬ জন পুরুষ শ্রমিক, ১২৪ জন নারী শ্রমিক এবং ৬৮ জন স্টাফ রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি সোয়েটার ক্যাটাগরির পোশাক উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত এবং বিজিএমইএভুক্ত একটি কারখানা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, চলতি বছরের নভেম্বর মাসের বেতন এখনো পরিশোধ করা হয়নি। বেতন পরিশোধের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ কোনো সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না দেওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষ বেতন কারাখানা বন্ধের পায়তারা চালাচ্ছেন। এরজেরে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন।
এদিকে মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশ্বাস ও মধ্যস্থতার পর শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে যান। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কোরেস গার্মেন্টসের পরিচালক মেজর মশিউর রহমান বলেন, পেছন থেকে কিছু লোক শ্রমিকদের ইন্ধন দিয়ে এমন কাজ করাচ্ছে। শ্রমিকরা কানাঘুষা করছে ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে যাবে। বিষয়টা আসলে এমন নয়। আমাদের এ মাসে কাজ কম। এজন্য শুধু মাত্র গত নভেম্বর মাসের বেতন বকেয়া আছে।
এছাড়া আমাদের ব্যাংকে ফান্ড রয়েছে। এই মাসে ফান্ড জনিত সমস্যার কারণে বেতন বকেয়া রয়েছে। আমি ফ্যাক্টরিতে যাচ্ছি। শ্রমিকদের সাথে বিষয়টা নিয়ে বসে সমাধান করবো।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারিক, আমরা খবর পেয়ে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেই এবং মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে সমাধানের জন্য বলেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৪ এর নারায়ণগঞ্জ জোনের পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) সেলিম বাদশা বলেন, ১ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। পরে তাদের বুঝিয়ে মহা সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। বিষয়টি সমাধানের জন্য শ্রমিক প্রতিনিধিদের সাথে মালিকপক্ষের বৈঠক চলছে।


































