নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত নারায়ণগঞ্জের জনজীবন  

অপু রহমান

প্রকাশিত:০৪:০৭, ৫ জানুয়ারি ২০২৩

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত নারায়ণগঞ্জের জনজীবন  

নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে গত তিনদিন যাবৎ বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়া এবং তীব্র শীতের হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় কাজকর্ম করতে না পারায় খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর পরিবার পরিজনের মাঝে নানা রকম সমস্যা বিরাজ করছে।


টানা তিন দিন যাবত মৃদু শৈত্য প্রবাহের কারণে তাপমাত্রা কমে যাওয়াসহ ঘন কুয়াশা এবং হিমেল হাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। এই শীত ও ঠান্ডায় অসহায় দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের পাশে সমাজের ধনবান ও বিত্তবানদের দাঁড়ানোর জন্য আহবান জানিয়েছেন এলাকার সুধীসমাজ ও সচেতন মহল।


নারায়ণগঞ্জে শিল্পনগরী হওয়ায় লাখো শ্রমিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিদিন সকালে কাজের জন্য তাদের ঘর থেকে বেরোতে হয় এই শীতকে উপেক্ষা করে কর্মের উদ্দেশ্যে।


অপরদিকে ারায়ণগঞ্জ সদরের তুলনায় রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও বন্দরে শীতের প্রকোপ অনেকটা বেশি। তীব্র শীত উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করছে এসব এলাকার শ্রমজীবী কৃষকেরা। 


অন্যদিকে প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে প্রতিনিয়ত ছোট, বড় নানা ধরনের দূর্ঘটনা রাস্তাঘাটে ঘটেই চলেছে। যা জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে।


বর্তমান পরিস্থিতিতে শীতার্ত মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি বে-সরকারি সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগে অসহায় দরিদ্র ও ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের মাঝে সহায়তার মাধ্যমে পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে অনেকেই মত প্রকাশ করছেন।


গার্মেন্ট শ্রমিক জাহেদুল ইসলাম বলেন, আমরা ডিউটি শেষে ওভার টাইম করে বাড়ি ফিরছি। রাতে তো ঠান্ডায় থাকাই যায় না। এখন সকালে গার্মেন্টসে আসার সময় কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না। শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট আমাদেরই হয়।


শহরের চাষাড়া মোড়ে দাড়িয়ে থাকা রিকশাচালক নজরুল বলেন, 'শীতের কারণে ২/৩ দিন ধরে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে । বিরূপ আবহাওয়ায় লোকজন কম বের হওয়ার তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দৈনিক আয়ও কমে গেছে।'


সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে কৃষিশ্রমিক শহিদুল ও আনোয়ার বলেন, তীব্র শীতে হাত-পা জমে যাওয়ার মতো অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে মাঠে থাকাটাও কষ্টকর।


আড়াইহাজারের এক হতদরিদ্র জানান, ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ক্রমাগত ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করায় ২/৩টা কাঁথা-কম্বল দিয়েও শীত মানানো যাচ্ছে না।


এদিকে চিকিৎসকদের মত, প্রচন্ড শীত এবং ঠান্ডায় নানাবিধ রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার ও আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষকরে বয়স্ক পুরুষ এবং মহিলাদের পাশাপাশি শিশুরাও সর্দিকাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।


স্থানীয় সরকার, নারায়ণগঞ্জ এর উপ-পরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বলেন,  তীব্র এই শীত মোকাবেলায় আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। জায়গায় জায়গায় শীত বন্ত্র কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। 


এছাড়াও আমাদের কাছে কোন বরাদ্দ আসলে সাধারণত কোঠা অনুসারে উপজেলা গুলিতে পাঠিয়ে দেই। সাধারণত ইউএনও স্থানীয় উপজেলার জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান তারা বিতরণ করে থাকেন।


সদর উপজেলার ইউনো রিফাত ফেরদৌস বলেন, আমরা নিয়মিত কম্বল বিতরণ করে যাচ্ছি শীতার্থ মানুষের মাঝে। নারায়ণগঞ্জের ভাসমান মানুষের সংখ্যা বেশি। 


সঠিকভাবে যেন সবাই পায় সেজন্য আমরা ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করে জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কয়েকটি ইউনিটে ভাগ করে প্রতিটি ইউনিয়নে এই কম্বল বিতরণ করে যাচ্ছি। কোথাও কোথাও আমি নিজে গিয়ে বিতরণ করছি।

সম্পর্কিত বিষয়: