নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে নিত্যপণ্যের বাজারে দফায় দফায় দাম বৃদ্ধি, কঠিন হয়ে পড়ছে জীবনযাত্রা 

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:০২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে নিত্যপণ্যের বাজারে দফায় দফায় দাম বৃদ্ধি, কঠিন হয়ে পড়ছে জীবনযাত্রা 

নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীতে নিত্যপণ্যের বাজারে দফায় দফায় দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে আলু ছাড়া প্রায় সব সবজির দাম চড়া। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। তবে ডিমের দামে সামান্য স্বস্তি এসেছে।

বাজারে দফায় দফায় দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অনেকেই বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াচ্ছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছ, শাক, ডাল, আটা, ময়দা ও চা পাতার দামও গত দুই সপ্তাহে বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা বেড়ে ১৮০-২০০ টাকায় উঠেছে।

তবে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০-৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পশুর সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় মাংসের দাম বাড়েনি।

এদিকে বাজারে সবজির দামেও অস্থিরতা। আলু ও পেঁপে ছাড়া প্রায় সব সবজিই কেজিপ্রতি ৮০ টাকার আশেপাশে। গোল বেগুন ১০০-১৪০ টাকা, বরবটি, করলা, চিচিঙ্গা ও কচুর লতি ১০০-১২০ টাকা, ধুন্দল ৮০-১০০ টাকা, ঝিঙ্গা, পটল ও ঢ্যাঁড়স ৮০ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হচ্ছে। সহনীয় পর্যায়ে আছে কেবল আলু (২৫-৩০ টাকা) ও পেঁপে (৩৫-৪০ টাকা)।

শাকের দামও বেশি। লালশাক, কলমি ও হেলেঞ্চা শাকের আঁটি ২০ টাকা, আর পুঁইশাক ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে চালের দামও বাড়তি রয়ে গেছে। বর্তমানে মিনিকেট চাল ৭২-৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৭৫-৯৫ টাকা, ব্রি-২৮ চাল ৬২ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা ৫৮-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে বাজারে সামুদ্রিক ও নদী-খালের মাছের দামও চড়া। কোরাল বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়, আইড় ৬০০-৭৫০ টাকায় এবং চিংড়ি আকারভেদে ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। ছোট চিংড়ির দামও ১০০০-১২০০ টাকা কেজি। 

চাষের রুইয়ের দাম ৩৫০-৫৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০-২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০-২৮০ টাকা, কৈ ২০০-২২০ টাকা, পাঙাস ও সিলভার কার্প ২৫০-২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। লাল ব্রয়লার ডিম প্রতি ডজন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৫০ টাকা। কিছু দোকানে এখনো এক হালি ডিম ৫০ টাকা রাখা হলেও সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

সবজির দাম বৃদ্ধি নিয়ে নিয়ে জানতে চাইলে বিক্রেতা ইশান বলেন, আমরা বেশি দামে কিনেছি। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ পুল বাজারের এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, সবজি-মাছসহ অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বেশি। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে মুরগির দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত স্বাভাবিক বলা যায়।

গার্মেন্ট কর্মী রেহেনা বলেন, যেহারে বাজারে কাঁচাবাজারসহ নিত্য পন্যের দাম বাড়ছে সে হারে বেতন ভাতা বৃদ্ধি না হওয়ায় জীবনযাত্রা ক্রমশ দুর্বিসহ হয়ে পড়ছে। একদিনের চাহিদার বাজার তিন চারদিন ভাগ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। 

দিগুবাবুর কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা ফারুক হোসেন বলেন, সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কেনাও কমিয়ে দিয়েছি। বরবটি কিনতে গেলাম। দাম শুনে হাফ কেজি নিয়েছি মেয়ে পছন্দ করে বলে। নাহয়, নিতাম না।

এই বাজারের মাহফুজ নামে এক বিক্রেতা বলেন, আমি কমে কিনতে পারলেই তো কাস্টমাররে কমে দিমু। এখন দাম চড়া। এর মধ্যে হাত ঘুরে-ঘুরে আসায় দাম আরও বেশি বেড়ে যায়। 

তিনি আরও বলেন, মাসখানেক পর ধীরে-ধীরে শীতকালীন সবজি বাজারে ঢুকতে শুরু করবে। তখন হয়তো দামটা কমে আসবে।
 

সম্পর্কিত বিষয়: