নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার হাঁড়িধোয়া নদী। এক সময় যে নদীতে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ ছিল। কৃষি কাজে ব্যবহার হতো নদীর পানি । নদীর স্বচ্ছ পানি পানি এখন বিবর্ণ আকার ধারণ করেছে। যেন আলকাতরার কালো রং। শুধু তাই নয়, কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও বাজারের ময়লা-আর্বজনায় ভয়াবহ দূষণের শিকার হাঁড়িধোয়া নদী। কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যে প্রতিনিয়তই বাড়ছে দূষণ।
জানা গেছে, হাঁড়িধোয়া নদী বিশনন্দীর মেঘনা ঘাট থেকে শুরু হয়ে খাগকান্দা মেঘনা ঘাটে গিয়ে শেষ হয়েছে। নদীর দুইপাশে রয়েছে অনেক গ্রাম। বিশনন্দী, গাজীপুরা, কড়ইতলা, শরিফপুর, চৈতনকান্দা, দয়াকান্দা, গোপালদী, দাইরাদী, রামচন্দ্রদী, খাসেরকান্দি, গহরদী, উচিত্পুরা, রায়পুরা এবং জাঙ্গালিয়া বাজার অংশের চারপাশ থেকে নদীতে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। নদীর দুই পাশে বিশাল বর্জ্যের স্তূপে; যাতে জনজীবন বিপর্যস্ত।
কড়ইতলার স্থানীয় বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘ছোটবেলায় আমরা এই নদীতে মাছ শিকার ও গোসল করেছি। বর্তমানে নদীটি দূষণের ফলে সব ঐতিহ্য হারিয়েছে। আশপাশের বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য প্রতিদিনই নদীতে নামছে। তা ছাড়া নদীপাড়ে বসবাসরতরা নিজেদের বাড়ির আবর্জনা ফেলছে নদীতে।’ তিনি আরো বলেন, ‘হাঁড়িধোয়া নদীর পানি থেকে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধের জন্য নদীর পাড় দিয়ে হাঁটাচলা কষ্টকর হচ্ছে।’
রামচন্দ্রদীর রোহেল সিকদার বলেন, ‘হাঁড়িধোয়া নদীটি একসময় মিঠা পানির মাছের জন্য বিখ্যাত ছিল। এই নদীর মাছ ছিল খুব সুস্বাদু। রুই, কাতল, মৃগেল, পুঁটি, চিতল, বোয়াল, মলা, ঢেলা, চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। সবাই দলবেঁধে এসে মাছ ধরতাম। একসময় নদীর পাড়ে বসে মানুষ আড্ডা দিত। কিন্তু সেই দিন এখন আর নেই। দূষণের কারণে এলাকায় কৃষিকাজে এই পানি ব্যবহার করা হচ্ছে না। ফলে পানির অভাবে অনেক জমি চাষ করা বন্ধ।’
বিশনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম জানান, আড়াইহাজারের হাঁড়িধোয়া নদীতে একসময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছিল। এখন দূষণের কারণে মাছ মরে ভেসে উঠছে। মিল কারখানার মালিকরা রাসায়নিক বর্জ্য ফেলে দূষিত করছেন নদীর পানি।