নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

মঙ্গলবার,

২১ অক্টোবর ২০২৫

বন্দরে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৫, আটক ৫ 

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৮:৪৩, ২০ অক্টোবর ২০২৫

বন্দরে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৫, আটক ৫ 

বন্দরে ১নং খেয়াঘাটে আধিপত্য ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিয়ে মহানগর বিএনপি আহবায়ক এড: শাখাওয়াত গ্রুপ ও সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাউছার আশার অনুসারীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মহিলাসহ উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছে। 

আহতরা হলো সনাগর (২৮) তার মা লুৎফা বেগম (৫৩) তার বড় ছেলের স্ত্রী মীম (২৯) ছোট ছেলের স্ত্রী  খাদিজা বেগম (২৪) ও অজিত দাস ৪০)। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন  হাসপাতলে প্রেরণ করেছে। 

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে  উভয় পক্ষের ৫ জনকে আটক করেছে। আটকৃতরা হলো বন্দর থানার লেজারার্স আবাসিক এলাকার মৃত আব্দুল মালেক মিয়ার ছেলে আব্দুল সাত্তার (৬৫) একই এলাকার মৃত মতি মিয়ার ছেলে পলাশ (৪৯) একই এলাকার কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের ছেলে অনিক দাস (২৪) বন্দর থানার সালেহনগর এলাকার মহিউদ্দিন মিয়ার ছেলে বিল্পব হোসেন (৩৪) ও হাসিবুল হাসান (৩০)। 

এ ঘটনায় আব্দুল সাত্তার ও অজিত দাস বাদী হয়ে বন্দর থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আটককৃতদের উল্লেখিত পৃথক মামলায় সোমবার (২০ অক্টোবর)  দুপুরে এদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে । এরআগে রোববার (১৯ অক্টোবর) রাত ৯টায় বন্দর থানার লেজারার্স এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

মামলার বাদী আব্দুল ছাত্তারের দায়েরকৃত এজাহারের  তথ্য সূত্রে জানা  গেছে, বাদী ছেলে সাগর পেশায় একজন ব্যবসায়ী। বন্দর লেজারার্সস্থ বাসুর ডকইয়ার্ডের সামনে বাদী একটি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান রয়েছে। গত রোববার  রাত ৮টায় বন্দর থানার সালেহনগর এলাকার বাদল দাসের ছেলে অজিত দাস একই এলাকার মহিউদ্দিন মিয়ার ছেলে বিল্পব ও বন্দর লেজারার্স  এলাকার কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের ছেলে অনিক দাস, পাপ্পু, হুমায়ন,শ্যামল, শান্ত, আরিফ, আকাশ, সুরুজ, শাওন, ইমন, লিটন ও ইবুসহ অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জন দুর্বৃত্তরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বে আইনি জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাইমা বিল্ডার্স নামীয় গ্যাস সিলিন্ডার দোকানে অনাধিকার প্রবেশ করে বাদী ছেলে সাগরকে লোহার রড ও এসএস পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে নিলাফুলা জখম করে। 

পরে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা দোকানের সামনে রক্ষিত একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে ৬০ হাজার টাকা ক্ষতিসাধনসহ ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকাসহ ৭০টি গ্যাস সিলিন্ডার চুরি করে অটো যোগে নিয়ে যায়। ওই সময় বাদীর  ছেলের ডাক চিৎকারের শব্দ পেয়ে তার মা লুৎফা বেগম ও দুই ছেলে স্ত্রী মীম ও খাদিজা বেগম দ্রুত ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারিরা তাদেরকে এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে নিলাফুলা জখমসহ শ্লীতাহানি করে।

অপরদিকে অজিত দাসের দায়েরকৃত মামলার এজাহারের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সুচিয়ারবন এলাকার আমান উল্লাহ মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান জনী ওরফে ব্লাক জনী একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী।

এ ছাড়াও একই ইউনিয়নের দিঘলদী এলাকার মৃত রহমত উল্লাহ মিয়ার ছেলে নব্য যুবদল নেতা মিনহাজ মিঠু ও বন্দর লেজারার্স এলাকার আব্দুল সাত্তার মিয়ার ছেলে সাগর একই এলাকার মৃত আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে আব্দুল সাত্তার একই এলাকার মৃত মতি মিয়ার ছেলে পলাশ, আবুল মিয়ার ছেলে সাহাদাত হোসেন,  জামান মিয়ার ছেলে অলক, পুইক্কা মিয়ার ছেলে রিফাত, জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে ছোট রিফাত ওরপে পাগলা রিফাত বন্দর রেলী আবাসিক এলাকার সেলিম প্রধানের ছেলে হাসিবুল প্রধান কলাগাছিয়া চর ধলেরশ্বরী এলাকার হবিনুর মিয়ার ছেলে শিপন ও ঘারমোড়া এলাকার মৃত লিটন মিয়ার ছেলে তুহিনসহ অজ্ঞাত নামা ৪০/৫০ জন মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দাতা ও কিশোর গ্যাংর হোতা। 

মাদক ব্যবসায়ী ব্লাক জনীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গত ১৬ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১২টায় সংবাদ কর্মী শামীমকে খুন জখমের হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী বাদী হয়ে বন্দর থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি জিডি এন্ট্রি করে।

এ ঘটনার জের ধরে গত রোববার রাত ৯টায় মাদক সম্রাট ব্লাক জনী ও চাঁদাবাজ নব্য যুবদল নেতা মিনহাজ মিঠুর হুকুমে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা বন্দর ১নং খেয়াঘাট ও লেজারার্স এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার সময় অজিত দাস ভিডিও ধারন করে। ওই সময় উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। ওই সন্ত্রাসীরা ৪ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ও নগদ ২১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

এলাকাবাসী তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর ১নং খেয়াঘাটের অবৈধ দোকানপাট থেকে চাঁদা আদায়ের টাকা ভাগবাটোয়ারা  ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহবায়ক এড: শাখাওয়াত গ্রুপের মিনহাজ মিঠু  ও মহানগর বিএনপি সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাউছার আশার অনুসারী অজিত দাসের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে মহিলাসহ উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়।

বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় দুইপক্ষের ৫ জনকে আটক করে উল্লেখিত মামলায় এদেরকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।