নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

০৫ অক্টোবর ২০২৪

অরক্ষিত ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক, বেড়েছে ডাকাত চক্রের তৎপরতা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:৪৫, ১৯ মার্চ ২০২৩

অরক্ষিত ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক, বেড়েছে ডাকাত চক্রের তৎপরতা

অরক্ষিত হয়ে পড়েছে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক। হঠাৎ করে বেড়েছে ডাকাত চক্রের তৎপরতা। যাত্রীবাাহি মালাবাহি যানবাহন শুধু নয় সম্প্রতি দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা সাদা পোষাকে থাকা র‌্যাব সদস্যদের গাড়ি ঘেরাও করে ডাকাতির চেষ্টা করেছে।

 

এতে ৮জন ডাকাত দলের সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি গার্মেন্টস পন্য বহনকারী বেশি টার্গেট থাকে ডাকাত দলের সদস্যদের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা প্রায়ই অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করলেও এদের অপতৎপরতা রোধ করা যাচ্ছে না। তবে মহাসড়ক অপরাধমুক্ত করতে আগামী ২৬ মার্চ  চালু হচ্ছে সিসি ক্যামরা।


সূত্র জানায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি থকে শুরু করে চট্রগ্রামের মিরশরাই পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ষ্পটে ডাকাত দলের সদস্যদের মহড়া চলে। বিশেষ করে শনি আখড়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জের সীমানা এলাকা বেশি অরক্ষিত মনে করছে ভুক্তভোগিরা। 


মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ন  বলছেন তারা।  সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে চিটাগাং রোড পর্যন্ত ভয়ঙ্কর ডাকাত দলের প্রধান রাজু বাহিনীকে কোন ভাবেই  দমন করা যাচ্ছে না। ফলে সাইনবোর্ড, পারিজাত মার্কেট, সানারপাড় মৌচাকসহ এসব এলাকা পার হওয়ার সময় ডাকাত রাজু বাহিনী আতংকে থাকে ভুক্তভোগীরা।

 

র‌্যাবের গাড়ি ঘিরে ধরে ডাকাতির চেষ্টা : 

র‌্যাব১১ এর সিপিসি ১ এর স্কোয়াড্রন লিডার একেএম মুনিরুল আলম জানান, র‌্যাব  ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ টি অভিযান চালিয়ে গত ১ বছরে ১১৪ ডাকাতকে বিপুল পরিমান অস্ত্রসস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করেছে। 


ডাকাতি নিরসনে র‌্যাব-১১ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত অভিযান ও টহল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং বিগত এক বছরে ডাকাতির বিরুদ্ধে ৩৫ টি অভিযান পরিচালনা করেছে এবং মোট ১১৪ জন ডাকাতকে বিপুল পরিমান অস্ত্রসস্ত্রসহ গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।


গত ১৬ মার্চ দিবাগত রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া থানাধীন চর বাউসিয়া থেকে ডাকাতিকালীন সময়ে মহাসড়ক ডাকাত চক্রের ৮ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড  এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। এসময় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে


র‌্যাব জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৬ মার্চ সাদা পোষাকে এবং পোষাক পরিহিত অবস্থায় দুটি দলে বিভক্ত হয়ে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে করতে কাঁচপুর থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত যায়। দাউদকান্দি থেকে পুনরায় ফেরত আসার পথে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন চর বাউসিয়া এলাকায় পৌছালে র‌্যাব-১১ এর সাদা পোষাকের আভিযানিক দলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকা মুখী নিজ্জর্ন অন্ধকারাছন্ন জায়গায় যানজটে পড়ে। 


এ সময়ে সাধারণ যাত্রীবাহি গাড়ী মনে করে ১০/১২ জন দুর্ধর্ষ ডাকাত দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সাদা পোষাকে থাকা র‌্যাব সদস্যদের গাড়িটিকে ঘেরাও করে। তখন র‌্যাব  সদস্যরা গাড়ী থেকে নেমে ধাওয়া করে কৌশলে এই ডাকাত দলের দলনেতা সহ আটজন সদস্যকে বিভিন্ন ধরণের দেশীয় অস্ত্রসহ হাতেনাতে আটক করতে সক্ষম হয় এবং আরো ৩/৪ অজ্ঞাতনামা ডাকাত দৌড়ে পালিয়ে যায়।


আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে  র‌্যাব জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র এবং তাদের দলের সদস্য সংখ্যা ১২/১৫ জন। ডাকাত সর্দার মোঃ সুজন ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারের যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ডাকাতি করে আসছিল। গত দুই বছরে তারা এই মহাসড়কে প্রায় ৫০টির অধিক ডাকাতি করেছে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। 


ভয়ঙ্কর ডাকাত রাজু  ও তার বাহিনীকে গ্রেফতারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের : 
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় ভয়ঙ্কর ডাকাত দলের সর্দার রাজু ও তার বাহিনীকে গ্রেপ্তারের জন্য নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়। মন্ত্রনালয়ের উপসচিব ফেীজিয়া খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে (স্মারক নং ৪৪.০০.০০০০.০৫৬.২৪,০১৪,২০২১-১৬৪২) র‌্যাবের মাধ্যমে ভয়ঙ্কর ডাকাত রাজু ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশনা দেয়া হয়।


জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ সানারপাড় এলাকার হোসনে আরা বেগম নামের এক ভুক্তভোগী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তার বিভাগে ভয়ঙ্কর ডাকাত রাজু ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর মন্ত্রনালয় থেকে এ আদেশ দেয়া হয়। 


অভিযোগে বলা হয়, মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ কান্দাপাড়া বুস গার্ডেন এলাকার রুকু হাজীর পুত্র ডাকাত সর্দার রাজু তার বাহিনীর অন্যতম সদস্য ভুইগড় এলাকার শওকত খন্দকারের পুত্র জসীম খন্দকার,সাহেব পাড়ার জাহাঙ্গীরের পুত্র মিঠু ওরফে ধলা মিঠু ভুট্টু, আলিম, রতনসহ প্রায় ১০/১৫ জনের একটি ডাকাত দল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ডাকাতি করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকার পরও গ্রেপ্তার না হওয়ায় মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী। 


সূত্র জানায়, ডাকাত দলের সর্দার রাজু ও বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ফের অপতৎপতার চালাচ্ছে। ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের প্রারম্ভিক সীমানা সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে সোনারগাওয়ের মেঘনা পর্যন্ত ডাকাত রাজু বাহিনী অপতৎপরতা বেড়েছে।

 

মহাসড়কে ২৬ মার্চ বসছে সিসি ক্যামরা:

জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানসহ প্রায় ৪০ হাজার যানবাহন নিয়মিত চলাচল করে। এ সব যানবাহনে রফতানিসহ বিভিন্ন পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে আনা—নেয়া করা হয়। কিন্তু মাঝে—মধ্যে মহাসড়কের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে গভীর রাতে মালামাল চুরি, ডাকাতি ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।


তবে রপ্তানির পোশাক চুরিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ঠেকাতে ঢাকা—চট্টগ্রাম মহাসড়কে বসানো ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা আংশিকভাবে চালু হচ্ছে। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা চালু করে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে।


হাইওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, ২০২১ সালের জুনে ‘হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন ঢাকা—চট্টগ্রাম মহাসড়কে ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়। মহাসড়কের ২৬৫ কিলোমিটারের মধ্যে চুরি—ডাকাতি, চাঁদাবাজি রোধের পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা যানবাহনের বেপরোয়া গতি নজরদারি করতে ৪৯০টি স্থানে ১ হাজার ৪২৭টি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।


এসব ক্যামেরার মাধ্যমে যানবাহনের নম্বরপ্লেট, গতিপথ, সন্দেহজনক অনুপ্রবেশ, স্লো ট্রাফিক এলাকা, বেপরোয়া গতিসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শনাক্ত করা যাবে। ক্যামেরাগুলোর মধ্যে আছে লং ভিশন ক্যামেরা, পিটিজেড ডোম ক্যামেরা, চেকপয়েন্ট ক্যামেরা ও বুলেট ক্যামেরা। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।


গত বছরের জুনে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে যে অংশের কাজ শেষ হয়েছে, সেই অংশের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো চালু করে নজরদারি শুরু করার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।


এ প্রকল্পের পরিচালক হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক বরকত উল্লাহ খান সাংবাদিকদের বলেন, মহাসড়ক নিরাপদ করতেই সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। মহাসড়কে অপরাধ দমন বিশেষ করে রপ্তানির পোশাক চুরি, দুর্ঘটনা রোধ, দুর্ঘটনা হলে দায়ী যানবাহন শনাক্ত এবং পুরো এলাকা নজরদারি আওতায় আনতেই এ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।


হাইওয়ে পুলিশ জানায়, রাজধানীর সাইনবোর্ড থেকে চট্টগ্রামের সিটিগেট এলাকা পর্যন্ত দুটি অঞ্চলে বিভক্ত হাইওয়ে পুলিশ। দাউদকান্দি থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত গাজীপুর অঞ্চল এবং বাকি অংশ কুমিল্লা অঞ্চল মহাসড়কে লাগানো ৪৯০টি পোল (ক্যামেরা লাগানোর খুঁটি) ৫টি মনিটরিং সেন্টার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।


ক্যামেরা থেকে ডেটা সংরক্ষণের জন্য মেঘনাঘাট এলাকায় একটি দ্বিতল ডেটা সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। একতলায় একটি ডেটা সেন্টার এবং অন্য তলায় একটি মনিটরিং সেন্টার থাকবে। এ ছাড়া গাজীপুর অঞ্চলে একটি মনিটরিং সেন্টার হবে। আর কুমিল্লা অঞ্চলে চারটি মনিটরিং সেন্টারের মধ্যে মেঘনাঘাট ছাড়াও দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা, কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয় ও বার আউলিয়া হাইওয়ে থানায়ও একটি করে মনিটরিং সেন্টার হবে।

রপ্তানির পোশাক ছিনিয়ে নিতে সক্রিয় ১০টি চক্র :

এদিকে মহাসড়কে রপ্তানির পোশাক ছিনিয়ে নিতে  সক্রিয় ১০টি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। অধিকাংশ ঘটনায় ঘুরেফিরে এই চক্রগুলোর নামই উঠে আসছে। এসব চক্রের অনেকেই বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছেন। তবে কিছুদিন পর জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারও তাঁরা চুরিতে জড়িয়ে পড়ছেন।


রপ্তানির পণ্য চুরির ঘটনায় ছায়াতদন্ত করতে গিয়ে গত এক বছরে ৫টি অভিযানে ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা বলছে, রপ্তানির পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার পথে ঢাকা—চট্টগ্রাম মহাসড়কে গড়ে প্রতি মাসে ৪২ থেকে ৪৫টি চুরির ঘটনা ঘটছে। এই হিসাবে বছরে পাঁচ শতাধিক  ঘটনা ঘটে। তবে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) বলছে, গত বছর রপ্তানির পোশাক চুরির ঘটনা মাত্র ২২টি।


আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, পণ্য চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম মো. সাহেদ ওরফে সিলেটি সাঈদ। সর্বশেষ ৩ ফেব্রুয়ারি তিন সহযোগীসহ সাহেদকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে। এর আগে সাহেদ আটবার গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৭/১৮টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। 


এদিকে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও ঢাকার ডেমরা থেকে পৃথক দুটি অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন মো. রিপন ওরফে ছোট রিপন এবং তাওহীদুল ইসলাম। এর আগেও তারা একাধিকবার গ্রেপ্তার হন। এসব চক্রের বাইরে কুমিল্লার সোহাগ, চট্টগ্রামের বাবু, বড় রিপন ও জুয়েল সমাদ্দারের নেতৃত্বে রপ্তানির পোশাক চুরির ঘটনা ঘটছে।


বাংলাদেশ ট্রাক চালক শ্রমিক ফেডারেশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, মহাসড়কে চাঁদাবাজি ডাকাতিতে অতিষ্ঠ হয়ে আমরাই হাইওয়ে পুলিশ গঠনের জন্য আন্দোলন পর্যন্ত করেছি। অথচ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বরং প্রাণ হাতে নিয়ে আমাদের চালকরা সড়কে গাড়ি চালান। অনেকেই হত্যার শিকার হয়েছেন। মহাসড়ক ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।