নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৬ এপ্রিল ২০২৪

পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব সমস্যা প্রতিকারে হো‌মিওপ্যা‌থি

গাজী খায়রুজ্জামান

প্রকাশিত:০২:৩৩, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব সমস্যা প্রতিকারে হো‌মিওপ্যা‌থি

পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব (Menstruation) সমস্যা প্রতিকারে হো‌মিওপ্যা‌থি (পার্ট - ১):

১১-১৯ বছর পর্যন্ত বয়সকে কৈ‌শোরকাল ব‌লে। কৈ‌শোরকালে মে‌য়ে‌দের‌কে কি‌শোরী বলা হয়। এ সময়‌কে বয়ঃস‌ন্ধিকালও ব‌লে। সাধারণত ১১-১৩ বছর বয়‌সের ম‌ধ্যে বয়ঃস‌ন্ধিকাল শুরু হয়। এ সময়ে কি‌শো‌রীদের শরীর নারীর শরী‌রে প‌রিণত হওয়ার প্র‌ক্রিয়া শুরু হয়। সাধারণত এ সময়ই মে‌য়ে‌দের যো‌নি দি‌য়ে ঋতুস্রাব শুরু হয়। প্রথম ঋতুস্রাব প্রকাশ মা‌নেই মে‌য়ে‌টি  সাবা‌লিগা হ‌য়ে‌ছে । অর্থাৎ তার যৌব‌নের আগমন ঘ‌টে‌ছে। আবহাওয়া, স্হান, কাল, খাদ্য গ্রহ‌ণের প‌রিমাণ ও মা‌নের তারত‌ম্যের কার‌ণে কা‌রো কা‌রো ক্ষে‌ত্রে ঋতুস্রাব একটু আ‌গে বা প‌রে হ‌তে পা‌রে। 


সাবা‌লিগা মে‌য়ে‌দের যৌবন আগম‌নের শুরু থে‌কে (৪৫-৫০) বছর বয়স পর্যন্ত প্র‌তি মা‌সে নারীদের যো‌নি দি‌য়ে স্বাভা‌বিকভা‌বে যে রক্তস্রাব হয়, তা‌কে পি‌রিয়ড বা ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব বা মা‌সিক ব‌লে। ইং‌রে‌জি‌তে এ‌টি‌কে  মিন্স বা মিনস্ট্রু‌য়েশন অথবা পি‌রিয়ড ব‌লে। এ‌টি কারো কা‌রো ক্ষে‌ত্রে ৫৫ বছর পর্যন্ত চল‌তে পা‌রে। তা‌বে  তার সংখ্যা খুবই কম।


ঋতুস্রাব হওয়ার সময় সকল নারীই তলপেটে ব্যথা  অনুভব করে৷ ত‌বে এই ব্যথা নিয়মিত ও স্বাভা‌বিক ঋতুস্রাবের ক্ষে‌ত্রে একবা‌রেই  মৃদু ও সহনীয় এবং এ‌টি মাসিক শুরু হওয়ার দুই একদিন আগে থেকে মাসিক চলাকালীন সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে৷ আবার কা‌রো কা‌রো ক্ষে‌ত্রে অ‌নেক সময় এই ব্যথা অনুভবই হয় না। 


 মিনস্ট্রু‌য়েশন সাই‌কেল (ঋতুস্রাব চক্র) :

সাধারণত ১২-১৩ বছর বয়স থেকে ৪৫-৫০ বছর অবধি একজন নারীর প্রজননকাল। অর্থাৎ সন্তান ধারণের জন্য তাঁর শরীরে এই সময়ে প্রতি মাসে ডিম্বাণু তৈরি হয়। পুরু‌ষের যৌন মিল‌নের মাধ্য‌মে শুক্রাণুর সংস্পর্শে সেই ডিম্বাণু নিষিক্ত না হলে সেটি নি‌র্দিষ্ট দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে নষ্ট হ‌য়ে যায় ও জরায়ু‌তে নে‌মে আ‌সে। তখন জরায়ুর প্রা‌চি‌রে জমা রক্ত, জরায়ু ঝিল্লির মিউকাস, নষ্ট ডিম্ব‌ প্রভৃ‌তিসহ  ‌যো‌নি দি‌য়ে র‌ক্তের মত তরল এক ধর‌ণের স্রাব বে‌রিয়ে আ‌সে। এটিই  ঋতুস্রাব। এ‌টি  সুস্হ্য নারী‌দের ৩-৭‌দিন  চল‌তে থা‌কে। এরপর সন্তান ধার‌ণের জন্য আবার ডিম্বানু তৈ‌রি হয় এবং তা য‌দি পুরু‌ষের যৌন মিল‌নের মাধ্য‌মে শুক্রাণুর সংস্পর্শ না পায়, তাহ‌লে সে‌টি আবারও নি‌র্দিষ্ট দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে নষ্ট হ‌য়ে যায় ও জরায়ু‌তে নে‌মে আ‌সে। তখন জরায়ুর প্রা‌চি‌রে জমা রক্ত,জরায়ু ঝিল্লির মিউকাস ,নষ্ট ডিম্ব‌ প্রভৃ‌তিসহ  ‌যো‌নি দি‌য়ে র‌ক্তের মত তরল এক ধর‌ণের স্রাব (ঋতুস্রাব) বে‌রিয়ে আ‌সে। এভা‌বে সুস্হ্য নারী‌দের ২১-২৮‌দিন পরপর প্র‌তিমা‌সে ৩-৭‌দিন ঋতুস্রাব চল‌তে থা‌কে।আর এ‌টি যৌবন আগম‌নের প্রারম্ভ থে‌কে মে‌নোপজের পূর্ব পর্যন্ত চক্রা‌কা‌রে চল‌তে থা‌কে। যা‌কে ঋতুস্রাব চক্র বা মা‌সিক চক্র ব‌লে। বেশিরভাগ   প্রাপ্তবয়স্ক সুস্হ্য নারীর ঋতুচক্র প্রায় একই থাকে।


ই‌রিগুলার মিনস্ট্রু‌য়েশন (অনিয়মিত ঋতুস্রাব):

একজন নারীর মা‌সিক ঋতুচক্র  শুরু হওয়ার পর থেকে প্র‌তি ২১- ৩৫ দিনের মধ্যে যে ঋতুস্রাব হয়, তাকে নিয়মিত ঋতুস্রাব ব‌লে। আর নিয়মিত ও সময়মতো স্বাভা‌বিক ঋতুস্রাব হওয়া একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর সু-স্বাস্থ্যের লক্ষণ। আর যদি ২১ দিনের আগে ও ৩৫ দিনের পরে ঋতুস্রাব হয়, তবে সেটিকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে। অনিয়মিত ঋতুস্রাবটি য‌দি নি‌র্দিষ্ট তা‌রিখের পূ‌র্বে হয়, ত‌বে সে‌টি‌কে শীঘ্র ঋতুস্রাব ব‌লে, আর য‌দি নির্দিষ্ট তা‌রিখের প‌রে হয়, ত‌বে সে‌টি‌কে বিল‌ম্বিত ঋতুস্রাব ব‌লে। অনিয়মিত ঋতুস্রাব সাধারণত যৌবনের প্রারম্ভে এবং যৌবন শেষে (মেনোপজ শুরু হওয়ার আগে) হতে পারে। যৌবনের প্রারম্ভে সাধারণত ১২ থেকে ২০ বছর বয়সে কারো শরীরের ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন অপরিপক্ব (প্রিমেচিউর) থাকলে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়।


বিলম্বিত বা অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণ:

শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের তারতম্য, বিবাহিত নারীরা হঠাৎ জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ বন্ধ করে দিলে, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করলে, অত্যা‌ধিক মানসিক চাপ, ডিম্বাশয়ের ত্রুটি, জরায়ুর ইন‌ফেকশন, টিউমার, ‌সিষ্টসহ বিভিন্ন ধর‌ণের জটিলতা, যৌন মিল‌নের মাধ্য‌মে গনোরিয়া, সিফিলিসের মত অর্জিত রোগ, প্রি-মেনোপজের সময়, যেসব নারী শিশুদের বুকের দুধ পান কারান সেসব নারীরদের, স্হূলতা ও মাত্রা‌তি‌রিক্ত ওজন বেড়ে গেলে বা মাত্রা‌তি‌রিক্ত ওজন হ্রাস পে‌লে, পুষ্টিহীনতা, টিউমার ও ক্যান্সার, রক্তশুন্যতা (এনিমিয়া) প্রভৃ‌তি কার‌ণে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হ‌তে পা‌রে। ঠাণ্ডা, সর্দি,থাইরয়েডের সমস্যা, গলার ইনফেকশন এ ধরনের সমস্যায় পিরিয়ড লেট বা বিলম্ব হতে পারে। 

অনিয়মিত ঋতুস্রাবের লক্ষণ:

প্রতিমাসে নিয়মিত ঋতুস্রাব হয় না এবং এক মাসে  হলে আরেক মাসে হয় না। এ‌টি কখ‌নো  শীঘ্র শীঘ্র হয় আবার কখ‌নো দুই-তিন মাস বা তারও বে‌শি সময় পরপর হয়। এ‌টি কখ‌নো দি‌নে হয়, রা‌তে হয় না আবার রা‌তে হয়, দি‌নে হয় না। এ‌টি কখ‌নো শুইয়ে থাক‌লে হয়, ব‌সে থাক‌লে বা হাটা চলা কর‌লে বন্ধ হ‌য়ে যায়, আবার কখ‌নো দুই সপ্তাহ পরে হয়।স্রাব চটচ‌টে ও শ্লেষ্মাপূর্ণ, কা‌লো, ধূসর, মাছ বা মাংস ধোয়া জ‌লের মত নোংড়া বি‌শ্রি ও দুর্গন্ধযুক্ত হ‌তে পার। কখনো  অল্প রক্তপাত হয় আবার কখনোও বেশি হয়। এ‌টি কখ‌নো বেশি সময় ধরে হয় আবার কখ‌নো ২-১দিন প‌রে বন্ধ হ‌য়ে যায়।।কখ‌নো কা‌লো চাপ চাপ সামান্য রক্তস্রাব হয়  আবার কখ‌নো মি‌ন্সের রক্ত কাপ‌ড়ে লাগ‌লে কাল‌চে দাগ প‌ড়ে যায়, যা ধুই‌লেও উঠ‌তে চায় না। কা‌রো কা‌রো ঋতুস্রাব বন্ধ থে‌কে নাক দি‌য়ে রক্তস্রাব হয় বা মাথা ব্যথা তৈ‌রি ক‌রে এবং একটু রক্তস্রা‌ব হ‌লেই মাথা ব্যথার উপশম হয়। কখ‌নো দুই ঋতুস্রা‌বের মধ্যব‌র্তি সম‌য়ে মিন্স হয় আবার কখ‌নো নি‌র্দিষ্ট সম‌য়ের অনেক আ‌গে বা প‌রে হয়। কা‌রো কা‌রো মিনসের আ‌গে প‌রে প্রচুর সাদাস্রাব হয়, যা চুলকা‌নি যুক্ত হ‌তে পা‌রে এবং কাপ‌ড়ে লাগ‌লে, কাপড়ে হলদে বা সাদা দাগ প‌ড়ে। এ ছাড়াও মেজাজ খিটখিটে, মাথা ঘুরা‌নো, শরীর মেজ‌মেজ করা, দুর্বলতা, অস্বস্তিবোধ, অ‌নিদ্রা, হাত-পা সহ শরীর জ্বালা পোড়া ও ঝিম‌ঝিম করা, ব‌মি ও ব‌মি-ব‌মিভাব, তল‌পেটে ভা‌রবোধ,‌ মিন‌সের পূ‌র্বে স্ত‌নে প্রদাহ ও  ব্যথা‌বোধ,শীতশীত‌বোধ, কোষ্ঠকা‌ঠিন্য প্রভৃ‌তি লক্ষণ প্রকা‌শিত হয়।


চি‌কিৎসা:

হো‌মিওপ্যা‌থি চি‌কিৎসায় রো‌গের না‌মের ওপর কো‌নো ওষুধ প্র‌য়োগ করা যায়-না, ‌কেউ কর‌লেও তা‌তে ভাল ফল পাওয়া যায়-না। কারণ এই চি‌কিৎসায় রো‌গ ও রোগীর লক্ষণসম‌স্টির  মাধ্য‌মে ওষুধ নির্বাচন করে চি‌কিৎসা দি‌তে হয়। অ‌নিয়‌মিত ঋতুস্রা‌বের বেলায় মিন্স লেট বা বিলম্ব বা বন্ধ থাকার ক্ষে‌ত্রে একজন চি‌কিৎস‌কের সর্বপ্রথম স্মরণ রাখ‌তে হ‌বে, কন‌সিভ হওয়ার কার‌ণে এমন‌টি হ‌য়ে‌ছে কি-না। এ‌ক্ষে‌ত্রে প্রাথ‌মিক পরীক্ষা ক‌রে নি‌শ্চিত হ‌তে হ‌বে। য‌দি কনসেপ্ট হওয়ার কার‌ণে একজন নারীর মিন্স বিল‌ম্বিত বা বন্ধ থা‌কে, তা হো‌মিও চি‌কিৎসায় কো‌নো কাজই হ‌বে না। তাই কন‌সেপ্ট ব্যতিত যে কার‌ণেই অনিয়‌মিত রজঃস্রাব হোক না কেন, তা স‌ঠিক ওষুধ নির্বাচ‌নের মাধ্য‌মে চি‌কিৎসা দি‌তে পার‌লে অতি দ্রুত ও স্বল্প সম‌য়ে রোগ‌টি আ‌রোগ্য করা সম্ভব। অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, রোগ ও রোগীর লক্ষণানুসা‌রে স‌ঠিক ওষুধ প্র‌য়ো‌গের প্রথম ১-২ সপ্তা‌হের ম‌ধেই ‌বিল‌ম্বিত বা বন্ধ মিন্স প্রকা‌শিত হয়ে মা‌সিক চক্র  নিয়‌মিতভা‌বে চল‌তে থা‌কে। আর য‌দি অন্য কো‌নো রো‌গের কারণে  অনিয়‌মিত ঋতুস্রাব হয় বা রজঃস্রাব বন্ধ থাকে,‌ তা হ‌লে, সে‌টির লক্ষণানুসা‌রে চি‌কিৎসা দি‌তে হ‌বে এবং সেই রোগ‌টি আ‌রোগ্য হ‌লেই মিন্স আবার নিয়‌মিত হ‌য়ে যা‌বে। প্রাথমিকভা‌বে Bryonia Alb, Pulsetilla, Fer phos, Fer Met, platina, sepia, kreosote, Chamomilla, Cimicifuga, China Off, Milifolium, Hamamalis, Ipecac, প্রভৃ‌তি ওষুধ লক্ষণানুসা‌রে যে‌কোন ১টি বা ২টি ওষুধ চি‌কিৎস‌কের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন কর‌তে পা‌রেন কিন্তু রো‌গের তীব্রতা, হ্রাস-বৃ‌দ্ধি,‌ রো‌গের কারণ ও উৎস অনুসন্ধান,‌ রোগীর আহার, নিদ্রা-অ‌নিদ্রা, রুচি-অরু‌চি, ঠান্ডা-গরমে ও নড়াচড়ায় রোগের হ্রাস-বৃদ্ধি, ধাতুগত ও মান‌সিক লক্ষণ ইত্যা‌দি উপসর্গ অ‌নুসা‌রে উক্ত ওষু‌ধের ডোজ, মাত্রা, শ‌ক্তি, একজন চি‌কিৎসকই নির্ধারণ কর‌তে পা‌রেন। তাই চি‌কিৎস‌কের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা দরকার।

পরীক্ষা:

কন‌সেপ্ট হওয়ার কার‌ণে মিন্স বিলম্বিত বা বন্ধ আ‌ছে কি-না, তা নি‌শ্চিত হওয়ার জন্য প্রাথ‌মিকভা‌বে কন‌সেপ্ট কনফার‌মেশ‌ন ফর ইউ‌রিন টেষ্ট, আল্ট্রাস‌নোগ্রা‌ফি করা‌নো হয়।‌ এছাড়া হো‌মিওপ্যা‌থি‌ চি‌কিৎসায় তেমন কোনো প‌রীক্ষার প্র‌য়োজন হয় না। কারণ রোগী ও রোগের লক্ষণ সমস্টির  চি‌কিৎসা পদ্ধ‌তি এ‌টি। অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, সাধারণত হো‌মিও চি‌কিৎসায় অনিয়‌মিত ঋতুস্রাব, নিয়‌মিত বা স্বাভা‌বিক হ‌তে বে‌শি সময় লা‌গে না। কিছু‌দিন নিয়‌মিত ওষুধ সেবন কর‌লে, পরব‌র্তি মিন্স নিয়‌মিত ও স্বাভা‌বিক হ‌য়ে যা‌য়, য‌দি না হয় বা অনেক দিন ধ‌রে অ‌নিয়মিতভা‌বে চল‌তে থা‌কে এবং কো‌নো ওষু‌ধেই  উপকার না হ‌লে,‌ রোগ ও রোগীর ই‌তিহাস পর্যা‌লোচনা ক‌রে, জরায়ু, ওভা‌রি ও ইউ‌টেরা‌সে কো‌নো সমস্যা, ইন‌ফেকশন, টিমার, ‌সিষ্ট, মা‌য়োমা বা ক্যান্সাসা‌রের মত কো‌নোকিছু স‌ন্দেহ হ‌লে ‌কিছু পরীক্ষা করার প্র‌য়োজন হয়।‌ যেমন- ভি‌ডিআরএল, সিবিসি, বা‌য়োপ‌সি সহ আরও উচ্চতর  অন্যান্য  পরীক্ষা ক‌রে রোগ সম্প‌র্কে নি‌শ্চিৎ থাকাই ভা‌লো।

পরামর্শ:

ঋতুস্রাবের সময় খুব ব্যথা হলে এবং সাত দিনের বেশি সময় ধরে ঋতুস্রাব চল‌তে থাক‌লে, অব‌হেলা না ক‌রে চি‌কিৎস‌কের পরামর্শ নিন। ঋতুস্রাব চলাকা‌লিন ভারী কো‌নো কাজ ও মাত্রা‌তি‌রিক্ত মান‌সিক প‌রিশ্রম করা উ‌চিৎ নয় বরং বিশ্রা‌মে থাকা উ‌চিৎ। শরীরের ওজন সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখুন।মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা স্বাভা‌বিক রজঃস্রাব‌কে প্রভা‌বিত ক‌রে, তাই মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা  একেবারে দূর না করা গেলেও সহনীয় পর্যায় নিয়ে আসতে হবে। নিয়‌মিত ও সময়মত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। আয়রন জাতীয় খাবার রক্তশূন্যতা পূর‌ণ ক‌রে, তাই আয়রন জাতীয় খাবার বে‌শি ক‌রে খা‌বেন। মাত্রা‌তি‌রিক্ত মশলাযুক্ত ও গুরুপাক জাতীয় এবং উ‌ত্তেজক কো‌নো খাবার খাবেন না। প‌রিমান মত পা‌নি পান করুন। জীবন চর্চায় খাড়াপ কো‌নো বদ অভ্যাস ও নেশা স্বাভা‌বিক রজঃস্রাব‌কে প্রভা‌বিত ক‌রে,তাই সুস্হ্য থাকার জন্য এগু‌লো প‌রিহার কর‌তে হ‌বে। কন‌সেপ্ট হ‌লে একজন নারীরর মিন্স বন্ধ হ‌য়ে যায়। তাই কন‌সেপ্ট হওয়ার কার‌ণে মিন্স বন্ধ হ‌য়ে‌গে‌ছে কি-না, তা সর্বপ্রথম নি‌শ্চিত হ‌তে হ‌বে।

এ‌ক্ষে‌ত্রে একজন নারী কুইক বে‌বি চেকার দি‌য়ে প্রস্রাব চেক আপ ক‌রে, প্রাথ‌মিকভা‌বে নি‌শ্চিত হ‌তে পা‌রেন অথবা চি‌কিৎস‌কের পরামর্শ নি‌য়ে কন‌সিপ্ট সম্প‌র্কে নি‌শ্চিত হ‌তে পা‌রেন। য‌দি কন‌সিপ্ট হওয়ার কার‌ণে  মিন্স বিল‌ম্বিত বা বন্ধ হ‌য়ে যায়, তা একমাত্র এ‌লোপ্যা‌থি চি‌কিৎসা ব্য‌তিত হো‌মিও চি‌কিৎসায় কো‌নো কাজই হ‌বে না। অনিয়‌মিত ঋতুস্রা‌বের কার‌ণে সন্তান ধর‌ণের ক্ষমতা হ্রাস পায় বা অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ হতে পারে এবং শারী‌রিক বি‌ভিন্ন জ‌টিলতা তৈ‌রি করতে পা‌রে। তাই অনিয়‌মিত ঋতুস্রা‌বের স‌ঠিক চি‌কিৎসা করা‌নো দরকার। প্রকৃতপক্ষে হোমিওচিকিৎসায় রোগটি দ্রুত আরোগ্য করা সম্ভব। তাই রোগীদের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাই নেওয়া দরকার।

ধুমপানসহ নেশাগ্রস্তরা নেশা পরিহার করুণ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন, সুস্থ থাকুন এবং প্রাকৃ‌তিক বস্তু গ্রহণ করুন, সুস্থ জীবনযাপন করুন। 

-লেখক :
ডা. গাজী খায়রুজ্জামান
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কলামিস্ট।
মোবাইল : ০১৭৪৩ ৮৩ ৪৮ ১৬

সম্পর্কিত বিষয়: