নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকালে প্রেস ক্লাবের সভাকক্ষে আয়োজিত জরুরী যৌথ সভায় এ আল্টিমেটাম দেন তাঁরা।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দীপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ জরুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ আইউব, হাবিবুর রহমান বাদল, মাহবুবুর রহমান মাসুম, রুমন রেজা, খন্দকার শাহ্ আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা করিম, নাফিজ আশরাফ, প্রেস ক্লাবের, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ (বিএফইউজে)’র সভাপতি আবু সাউদ মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আহসান সাদিক শাওন, প্রেস ক্লাব কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, কার্যকরী সদস্য আফজাল হোসেন পন্টি, ক্লাবের সিনিয়র সদস্য ফজলুল বারী, নাহিদ আজাদ, এম আর কামাল, রফিকুল ইসলাম রফিক, শফিকুল ইসলাম সোহেল, প্রণব কৃষ্ণ রায়, শওকত আলী সৈকত, হাসান উল রাকিব, শফিকুল আলম সুজন এবং শফিউল আলম প্রমুখ।
সভায় ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ এবং কার্যকরী পরিষদের নেতৃবৃন্দরা বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই প্রেস ক্লাবের ৫৮ বছরের ইতিহাসে এ ধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
একইসাথে প্রশাসনের ভুমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, প্রেস ক্লাবে হামলার আশঙ্কা করে হামলা হওয়ার দেড় ঘন্টা আগে পুলিশ সুপারসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানালেও তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরবর্তীতে হামলাকারীদের হামলায় ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ আহত হলে ক্লাবের অন্য সদস্যরা এবং ক্লাব স্টাফরা হামলার নেতৃত্বদানকারীকে আটক করে পুলিশে দেয়।
কিন্তু উল্টো হামলাকারীদের পক্ষে মিথ্যা মামলা গ্রহন করায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত মামলার আসামীদের গ্রেফতার এবং হামলাকারীদের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দেন তাঁরা। অন্যথায়, পুলিশ সুপার ও নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসির প্রত্যাহার দাবিসহ বৃহত্তর কর্মসূচী দেয়ার ঘোষণা দেয় নেতৃবৃন্দরা।
একইসাথে, হামলাকারীদের ইন্ধনদাতা হিসেবে যাদের নাম প্রকাশ পেয়েছে তাদের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দরা। তাঁরা বলেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে গঠিত এই নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব বিগত ৫৮ বছর যাবত স্বাধীনভাবে চলে আসছে। কোনো রাজনৈতিক সংগঠন বা ব্যক্তি প্রেস ক্লাবের কার্যক্রমে কখনোই হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেনি।
এমনকি গত ১৫ বছরে আওয়ামী শাসনামলেও তৎকালীণ এমপি-মন্ত্রী-মেয়র কিংবা নেতাকর্মীরা ক্লাবের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের দু:সাহস দেখায়নি। তবে, সম্প্রতি ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর একটি রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতাদের ইন্ধনে ঐ দলের নাম ভাঙ্গিয়ে সন্ত্রাসী ও দুস্কৃতিকারীরা প্রেস ক্লাবে হামলা চালায়, যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও গর্হিত কাজ। ফলে, এই হামলার পেছনের ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এছাড়াও, যে সকল রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের ব্যক্তিরা এ ধরনের নামবিহীন ব্যক্তি ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন, তাদেরকে এ কর্ম থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, তাদের সকল প্রকার সংবাদ বর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


































