 
				
					সিদ্ধিরগঞ্জে জমি দখলে নিতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত লিলি বেগম (৫০) মারা গেছেন। সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এই হামলায় আহত হয়েছে নিহতের স্বামী আশরাফ মিয়া (৫২) ও তার ৪ ছেলে। তারা হলো-রুমান হাসান (২২), ইমামুল ইসলাম ইমু (২৫), মো. নাজেমুল ইসলাম (২৮) ও নাঈম হাসান (৩০)। রোববার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলা এলাকায় তাদের কুপিয়ে জখম করা হয়।
হামলার শিকার শিমরাইল টেকপাড়ার আশাবুদ্দিন অভিযোগ করেন নয়াআটি মুক্তিনগর এলাকায় তার একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল একই এলাকার চান্দু মাধবরের সঙ্গে। আদালতে মামলায় আশাবুদ্দিন রায় পান। পরে রোববার সকালে আশাবুদ্দিন ওই জমিতে গেলে প্রতিপক্ষ চান্দু মাধবর ও তার ছেলে মনিরের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন বহিরাগত লোক নিয়ে আশাবুদ্দিন ও তার পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পিটিয়ে ও কুপিয়ে ৬ জনকে গুরুতর আহত করে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই মাহবুবসহ একদল পুলিশের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আশাবুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের সাহায্য চেয়েও পাইনি। উল্টো পুলিশ আমাদের ৬ জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ ভ্যানে তুলে আদমজী এলাকায় নিয়ে ছেড়ে দেয়।  
নিহতের মেয়ে নাসরিন বলেন, আমাদের প্রতিবেশী চান্দ মাদবরে সঙ্গে জমি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছিল। আমাদের জমি তারা নিয়ে যেতে চায়। রোববার চান্দু মাদবর, মনির, অদুত, নাজমুল ও গনি মিয়ারা আমাদের জমি দখল নেওয়ার চেষ্টা করলে আমরা যখন বাঁধা দেই তখন আমার মাসহ পুরো পরিবারের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। তখন মাসহ ৬ জনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। হামলার পর থেকে অসুস্থ অবস্থায় মাকে চিটাগাংরোডস্থ সুগন্ধা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আজ সোমবার দুপুরে তিনি মৃত্যুবরণ করে।

বিএনপি নেতা আয়ুব আলীর কথায় পুলিশ মামলা নেয়নি অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতা আয়ুব আলী মুন্সির সেল্টারে হামলাকারীরা হামলা চালিয়েছে। আমাদের জমির উপর আয়ুব আলীর টার্গেট। সে পরিকল্পিতভাবে হামলা করিয়েছে। ঘটনার পর আমরা পুলিশের কাছে মামলার জন্য গেলে পুলিশ আয়ুব আলীর কথা ছাড়া মামলা নিবে না বলে জানিয়ে দেয়।
এদিকে লিলি বেগমের মৃত্যুর খবরে তার শুভাকাঙ্ক্ষী ও স্বজনরা অভিযুক্ত চান্দ মাদবরের বাড়িতে হামলা চালায়। একপর্যায়ে বিক্ষুদ্ধরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে ১৫ মিনিটের মতো অবস্থান নিয়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে।
হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয় জানতে (নাসিক) ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আয়ুব আলী মুন্সির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রোববার চান্দ মাদবর ওই মহিলার পরিবারের সঙ্গে ঝামেলা হইছে। আমি কারো পক্ষের লোক না। চান্দু মাদবরা উল্টো আমার শত্রু পক্ষের নূর হোসেনের লোক। আমার লোক তারা না। আমি হামলার নেতৃত্ব দেইনি।
হামলা চালানোর পরও মামলা নেয়নি এমন অভিযোগের সত্যতা জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেছেন, আমাদের কাছে দুপক্ষেরই দুটি অভিযোগ এসেছে। আমরা বলেছি তদন্ত করে মামলা নেওয়া হবে। মূলত যিনি মারা গেছেন উনার পরিবার যখন অভিযোগ দেওয়ার জন্যে থানায় এসেছিল তখন মৃত নারীর নাম ছিল না। তাকে ছাড়া ৫ জনকে আহত দেখানো হয়েছিল। এবং অপর পক্ষ এর আগেই একটি অভিযোগ করেছেন। একদিনেই দুটি অভিযোগ হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত আশাবুদ্দিন বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে থানার ওসি আল মামুন মামলা নেয়নি। পুলিশের সামনে হামলা ও গাড়িতে তুলে নিয়ে আদমজীতে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে এসআই মাহবুব বলেন, আমি তাদের সহযোগিতা করেছি।
 

 
				

































 
									 
									 
									 
									 
									 
									 
									