
সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো বিশ্ব গোডাউনের চোরাই গমের ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিয়ে বিএনপির সমর্থক ২ গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে উভয় পক্ষের আহত হয়েছে অন্তত ৮ জন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত সাড়ে ৮ টায় সাইলো গেইট এলাকায় সোহেল-জুয়েল ও সুজন-সোহেল গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে আলা উদ্দিন (৭০), তার ছেলে সোহেল (৪০) জুয়েল (৩৫), আলী হোসেন (৬০) ও সুজনের নাম জানা গেছে।
জানা গেছে, নাসিক ৫ নং ওয়ার্ডের সাইলো গেইট এলাকার আলী হোসেন, আলা উদ্দিন তার ছেলে সোহেল ও জুয়েল গত ৫ আগস্টের পর থেকে সাইলো বিশ্ব গোডাউনের চোরাই গমের ব্যবসা করে আসছে।
এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিতে চাইছে ওমরপুর এলাকার তারাজুল ইসলামের ছেলে সুজন ও মৃত নূর উদ্দিন মেম্বারের ছেলে সোহেল। এনিয়ে গত বেশ কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বিএনপি নেতা জানান, চোরাই গম ব্যবসার পাশাপাশি সাইলো এলাকায় লাখ লাখ টাকার সরকারি গম বেচা কিনা হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাস্তা মেরামত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসায় সরকারিভাবে বরাদ্ধকৃত গম বেচা কিনা হচ্ছে।
বরাদ্দকৃত গম বিশ্ব গোডাউন থেকে যথাযত প্রক্রিয়ায় বের হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাইলো এলাকার সিণ্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কাছে গম বিক্রি করে দেয়। ফলে এসব গম যথাস্থানে না গিয়ে নারায়ণগঞ্জ নিতাইগঞ্জ চলে যায়।
সরকারি এসব গম বেচা কেনার আয়ের অংশ প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নেতাসহ বিভিন্ন মহল পেয়ে থাকেন। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই সাইলো এলাকায় গমের রমরমা বাণিজ্য চলে আসছে। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সে দলের নেতাকর্মীরাই এসব গম বেচা কেনার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে। আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপির একাধিক গ্রুপ গম বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ নিতে তৎপর রয়েছে।
আলাউদ্দিনের অভিযোগ, সুজন ও সোহেলের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তাদের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাড়ি ভাঙচুর ও নারী-পুরুষসহ ৬-৭ জনকে কুপিয়ে আহত করে।
সুজন জানায়, আলাউদ্দিন ও তার ছেলেরা চোরাই গমের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। এর আগেও তার বাড়ি থেকে সরকারি গম উদ্ধার করা হয়েছে। চোরাই গমের ব্যবসা না করতে নিষেধ করা হলেও তারা বন্ধ করছে না।
আলাউদ্দিনের বাড়িতে সরকারি গম রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যার দিকে তার বাড়িতে যাই। বাড়ির যে কক্ষে গম রাখা হয়েছে সে কক্ষের তালা খুলতে বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের উপর হামলা করে। এখবর পেয়ে আমাদের লোকজন গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, মারামারির ঘটনা আমার জানা নেই। কেউ লিখিত কোন অভিযোগ করেনি।