নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

১৬ জুলাই ২০২৫

অবশেষে বদলি হলেন সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মোস্তাফিজ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:৩০, ১৫ জুলাই ২০২৫

অবশেষে বদলি হলেন সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মোস্তাফিজ

সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসা আবাসিক মেডিকেল অফিসার (জগঙ) ডা. মোস্তাফিজুর রহমান দিগন্ত শেষ পর্যন্ত বদলি হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) তাকে বদলি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি, কমিশন বাণিজ্য, দালাল সিন্ডিকেট পরিচালনা, সরকারি হাসপাতালকে ব্যক্তিগত চেম্বারে রূপান্তরের অভিযোগ উঠে আসছিল। এ নিয়ে হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ এলাকাবাসীর মধ্যেও ছিল চরম অসন্তোষ।


হাসপাতালের সামনে অবস্থিত দুইটি ডায়গনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে তার মাসিক চুক্তিতে কমিশন বাণিজ্য ছিল বহুল আলোচিত। রোগী টেস্ট করুক বা না করুক সেন্টারগুলোকে মাসিক নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হতো তাকে।

এসব চুক্তির আওতায় পরিচালিত দালাল চক্র হাসপাতালের অভ্যন্তর থেকেই রোগীদের টেনে নিয়ে যেত ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলোতে।

বিশেষ করে হাসপাতালের পাশে অবস্থিত ‘নিরাময় ডায়গনস্টিক সেন্টার’-এ তিনি নিয়মিত প্রাইভেট রোগী দেখতেন। অভিযোগ রয়েছে, অফিস চলাকালীন সরকারি দায়িত্ব পালন না করে ওই সেন্টারে রোগী পাঠাতে বাধ্য করা হতো।

এমনকি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ছোটখাটো অপারেশন, ইনজেকশন ও প্লাস্টার বন্ধ করে তিনি এসব সেবা তার ব্যক্তিগত চেম্বারে চালু করেন-বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করতেন।

একটি ৬০ টাকার ইনজেকশন জয়েন্টে পুশ করে তিন থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করতেন তিনি। প্লাস্টার করার বিনিময়ে রোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হতো চার-পাঁচ হাজার টাকা। সরকারি ওষুধ সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও নিয়মিতভাবে প্রেসক্রিপশনে লেখা হতো বাহিরের দামি ওষুধ- আর এসব ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে নেওয়া হতো বড় অঙ্কের সুবিধা।

সরকারি ফিট সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে আসা রোগীদেরও পাঠানো হতো তার প্রাইভেট চেম্বারে, যেখানে ব্যক্তিগত প্যাডে দুই-তিন হাজার টাকার বিনিময়ে সরবরাহ করতেন সেই সার্টিফিকেট।

হাসপাতালের কিছু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও স্টাফদের সঙ্গে গড়ে তোলা একটি প্রভাবশালী চক্রের মাধ্যমে তিনি হাসপাতালজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করেন। কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই সেই চক্রের মাধ্যমে শোকজ, বদলি বা অপপ্রচারে নিপতিত হতেন সংশ্লিষ্টরা।

এমনকি স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সমালোচকদের হুমকি, ভয়ভীতি এবং অশালীন ভাষায় দমন করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আহমেদ তিথির মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
 

সম্পর্কিত বিষয়: