
আড়াইহাজারে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন টেঁটাবিদ্ধসহ প্রায় ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এদের মধ্যে টেটাবিদ্ধ মঞ্জুর হোসেন, মকবুল ও জসিমসহ ৫জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। অন্যদের স্থানীয় বিভিন্ন সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
সংঘর্ষের সময় গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কয়েক গ্রামে। সংঘর্ষের জের ধরে ব্যাপক বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ আনতে ব্যার্থ হয়। পরে যৌথবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্তণে আনেন।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের বাহেরচর ও কাকাইলমোড়া গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দীর্ঘদিন থেকে খাগকান্দা ইউনিয়ণ বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক একে অপরকে আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে বলয় ভারী করার অভিযোগ করেন।
এরজের ধরে মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেন অনুসারী কাকাইলমোড়ার ইদ্রিস আলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়ার লোকজন দা, ছুরি, টেটা বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্রেসজ্জে সজ্জিত হয়ে একে অপরের উপর হামলা করে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, খাগকান্দা ইউনিয়নের বাহেরচর ও কাকাইল মোড়া গ্রামবাসীর মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে মামলা মোকদ্ধমা, গ্রাম্য দলাদলি এবং আধিপত্য নিয়ে দ্ধন্ধ চলে আসছিল। সেই দ্বন্ধকে কেন্দ্র করে তুচ্ছ ঘটনা নিয়েই বিএনপির দু’গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের সুত্রপাত।
বর্তমানে উক্ত দুই গ্রামে মধ্যে ১৫/২০টি মামলা চলমান রয়েছে। এর আগেও বেশ কয়েকবার এলাকায় সংঘর্ষের এরকম ঘটনা ঘটে। এতে করে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। যেকোন সময় ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে।
মনির নামে আহত একজন বলেন, আমি একজন খামারি। আমার খামারে ১ হাজার পিস ডিমের মুরগী ছিল। এগুলো সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এসময় আমার ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা আমার বাড়িতে ব্যাপকভাবে লুটপাট করেছে। এতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সধারণ সম্পাদক জাকারিয়া বলেন, ইদ্রিস আলী আওয়ামীলীগের লোক। সে স্থানীয় সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মঞ্জর হোসেনসহ তার দল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সে কোন সময়ই বিএনপি করে নাই।
ইদ্রিস আলী জানান, জাকারিয়া খাগকান্দা ইউনিয়ন ওলামা লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনসহ আওয়ামীলীগের ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাদের দশটি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, এলাকার প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ আমাদের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আমরা যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবো।