সোনারগাঁয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে উমায়ের হাসান (২৫) নামে এক যুবককে হত্যা করে তার লাশ মেঘনা নদীতে ফেলে গুম করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। নিহত উমায়ের হাসান উপজেলার চর কিশোরগঞ্জ মুন্সিবাড়ী এলাকার বাসিন্দা।
স্বজনদের দাবি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। এ ঘটনায় তার মা মোসাঃ আনার কলি বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্তরা উমায়েরের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। গত ২৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে অভিযুক্ত মো. সোহাগ মোবাইল ফোনে উমায়ের হাসানকে বাড়ির বাইরে ডেকে নেয়।
সরল বিশ্বাসে উমায়ের ঘর থেকে বের হলে তিনি আর ফিরে আসেননি। এরপর গত ২৮ ডিসেম্বর রোববার দুপুরে নিহতের পরিবার জানতে পারে, মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া ঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে একটি অজ্ঞাত পুরুষের মরদেহ ভাসছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উমায়ের হাসানের বলে সনাক্ত করেন।
নিহতের মা মোসা. আনার কলি অভিযোগ করে বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী শহিদ, ফারুক, সোহাগ, বায়েজিদ, অহিদ, নাজিমুদ্দিনসহ আরও ১০-১২ জন মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছে। এখনো তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের স্ত্রী আরিফা আক্তার (২০) বলেন, আমি বর্তমানে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাবার বাড়িতে অবস্থানকালে রাতের আঁধারে অভিযুক্তরা মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে আমার স্বামীকে হত্যা করে এবং প্রমাণ নষ্ট করতে লাশ নদীতে ফেলে দেয়।
এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামিরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত ফারুক বলেন, উমায়ের আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করতো। তার মা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
মূলত উমায়ের ও তার সঙ্গীরা নদীতে ডাকাতি করতে গিয়েছিল। সে সময় সে পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয়। পরে নৌ-পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিবুল্লাহ বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।


































