নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ওয়াকফকৃত জমিতে নির্মিত মসজিদ ভেঙে ফেলায় সাবেক যুবদল নেতা শহিদুল ইসলামের শাস্তির দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বাদ জুম্মা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সালু হাজী রোড এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বক্তরা বলেন, মসজিদ ভাঙার মূলহোতা শহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে ক্ষামা চাইতে হবে। তারা নিজ অর্থে পুনরায় মসজিদ নির্মাণ করে দিতে হবে। পাশাপাশি এমন জগন্ন কাজ করার অপরাধে তাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যতায় ধর্মপ্রাণ মানুষ চুপ করে বসে থাকবে না।
কর্মসূচি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্থানীয় বাসিন্দা গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির গৃহায়ন ভূমি ও পুনর্বাসন সম্পাদক আবুল খায়ের শান্ত বলেন, আমরা প্রথমে ধারণা করেছিলাম সরকারিভাবে পুন:নির্মাণের জন্য মসজিদটি ভাঙা হচ্ছে।
পরে জানতে পারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সাবেক যুগ্নসম্পাদক দাবিদার ভূমি খেকো শহিদুল ইসলামের নেতৃতে আব্দুল হান্নান ও সুমন সন্ত্রাসী কায়দায় মসজিদ ভেঙে বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।
তখন মসজিদ ভাঙার কারণ জানতে চাইলে শহিদুল ইসলাম জমির মালিক দাবি করেন। এ নিয়ে বারাবারি না করার জন্য বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেন।
স্থানীয় মার্কাজুল আজিজ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ১৯৯২ সালে মসজিদের জন্য ৭ শতাংশ জমি দান করেন শিল্পপতি হাজী সালাউদ্দিন মিয়া।
স্থানীয় বাসিন্দা ও তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নামাজ আদায় করার জন্য ওই জমিতে একটি দুতলা মসজিদ নির্মাণ করেন তিনি। পরে ২০০২ সালের ৪ এপ্রিল ৫ শতাংশ জমি মসজিদের নামে ওয়াকফ করে দেন।
শহিদুল ইসলাম জাল দলিল সৃজন করে জমির মালিকানা দাবি করে কিছুদিন আগে মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিনকে হুমকি ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। মসজিদের জমি দাতার ছেলে মোতওয়াল্লি জসিম মিয়াসহ এলাকার কাউকে না জানিয়ে মসজিদ ভেঙে ফেলে।
স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন বলেন, মসজিদ ভেঙে ফেলা হলেও এ জমিতে কোন ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। কারণ এটা ওয়াকফ করা মসজিদের জমি। কেউ যদি সহায়তা নাও করে আমি আমার নিজের অর্থ দিয়ে হলেও পুনরায় মসজিদ নির্মাণ করবো।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, মসজিদটি নিচু হয়ে গেছে। বর্ষকালে পানি উঠে। তাই পুনঃনির্মাণের জন্য ভাঙা হয়েছে। সামাজিকভাবে আলোচনা না করে আপনি একক সিদ্ধান্তে ভেঙেছেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্রয়সূত্রে এ জমির মালিক আমি।
এখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। তবে নিচ ও দ্বিতীয় তলাটি মসজিদ হিসেবেই থাকবে। মসজিদের দেখা শোনা আমিই করবো। স্থানীয় কিছু লোকজন তা মানছেন না।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন, মুফতি বশির উল্লাহ, হাফেজ জাহের আলী, মাওলানা নূর হোসেন নুরানী, মুফতি আহসান উল্লাহ, মাওলানা কাশেম আল হোসাইন, মাওলানা জুনায়েদ, গণ অধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের এমপি প্রার্থী ওয়াহিদুর রহমান মিল্কি, ৪ আসনের এমপি প্রার্থী আরিফ ভূঁইয়া, স্থানীয় ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন প্রমুখ।


































