নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৬ এপ্রিল ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে এই মাদক বিক্রেতাকে রুখবে কে?

প্রকাশিত:১৫:২৭, ৬ মে ২০২১

সিদ্ধিরগঞ্জে এই মাদক বিক্রেতাকে রুখবে কে?

সিদ্ধিরগঞ্জের মাদক সম্রাট টাইগার ফারুক কারাবন্দি হওয়ার পর নড়ে চড়ে বসেছে অপর মাদক বিক্রেতারা। আড়ালে থেকে তারা এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছেন।

স্থানীয় প্রশাসন মাদক বিক্রেতাদের গ্রেপ্তারে উৎসাহী না হলেও ঢাকার র‌্যাব-২ ও ৩ সিদ্ধিরগঞ্জে প্রায়ই অভিযান চালিয়ে মাদকসহ মাদক বিক্রেতাদের গ্রেপ্তার করছে।

ফলে র‌্যাবের তৎপরতায় মাদক বিক্রেতাদের কেউ কেউ গা ঢাকা দিয়েছে। টাইগার ফারুকের ১০ সহযোগি র‌্যাবের হাতে বিপুল মাদক দ্রব্যসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর আলোচনায় আসে সিদ্ধিরগঞ্জের মাদক সিন্ডিকেট।

এছাড়া আরেক মাদক বিক্রেতা জুয়েল রানার অন্যতম সহযোগি আশিকুল করিমসহ ৩জন র‌্যাব-২ এর হাতে সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়। ঢাকার কাওয়ান বাজার টিসিবি ভবনের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে ৩১ কেজি গাঁজা ও ৫৯৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার এবং একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাস জব্দ করে র‌্যাব। আশিকুল করিম গ্রেপ্তার হওয়ার পর জুয়েল রানার নাম আলোচনায় আসে সিদ্ধিরগঞ্জে।

পরে জুয়েল রানা গা ঢাকা দিয়েছে। তবে তার মাদক বিক্রি বন্ধ নেই। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে মাদক সিন্ডিকেটের আরেকটি গ্রুপের নাম জানা যাবে বলে মনে করছেন মিজমিজি মুজিববাগ এলাকার মানুষ।

এলাকাবাসী জানায়, জুয়েল রানা মুজিববাগের একটি বহুতল ভবনে ভাড়া থাকে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের তৎপরতা শুরু হলে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুত কেন্দ্রের ভেতর সে তার শ্বশুর বাবুল মিয়ার বাসায় আশ্রয় নেয়।

কারণ সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কেপিআই (সংরক্ষিত) এলাকা হওয়ায় পারমিশন ছাড়া পুলিশ কোন অভিযান চালাতে পারে না। আর এই সুযোগটি নিয়েছে মাদক বিক্রেতা জুয়েল রানা।

ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত এই জুয়েল রানা মাদক বিক্রির টাকা দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়।

তারা আরও জানায়, অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা এই মাদক বিক্রেতা অত্যন্ত চতুর। সে এমন ভাব করে যে, ‘ভাজা মাছ উল্টে’ খেতে পারে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বেশ কয়েকটি ভুয়া আইডি রয়েছে।

এই আইডিগুলো দিয়ে একদিকে সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় অন্যদিকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করে মাদক বিক্রি করে। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।

এলাকাবাসী আরও জানায়, তার বড় ভাই জসিম একজন পেশাদার ছিনতাইকারী, মাদক সেবক ও মাদক বিক্রেতা। সম্প্রতি ছিনতাই করার সময় হাতে গ্রেফতার হয় পুলিশের হাতে।

এছাড়া এক নারী শ্রমিককে চাকরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ চেষ্টা চালায় ছিনতাইকারী এই জসিম। পরে ভুক্তভোগি ওই নারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় জসিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করে। জামিনে বেরিয়ে এসে কারাবন্দি টাইগার ফারুকের শেল্টারে বীরদর্পে আগে মতো অপকর্ম শুরু করে।

জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি মুজিববাগে একটি দশতলা ভবনে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে জুয়েল রানা। প্রতিবেশী একাধিক ব্যক্তি জানান, রস্যজনকভাবে মাসের অধিকাংশ সময় জুয়েল বাসায় থাকে না। কোথায় থাকে তার স্ত্রীও কারো কাছে বলে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তারা।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, জুয়েল রানার বিরুদ্ধে হেফাজতের ২টি মামলাসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।