
বন্দরে বিচার শালিস বৈঠক চলাকালিন সময়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হোসেয়ারী কর্মী ও ২১নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সভাপতি আলমগীর হোসেন (৫০)কে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে নিহতের ছোট বোন কল্পনা বেগম বাদী হয়ে সোয়েব, আশরাফুল প্রকাশ কালু ও পারভেজসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি। যার মামলা নং-৭(১০)২৫ইং।
এর আগে গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় বন্দর থানার সালেহনগরস্থ ৩নং আসামী পারভেজ এর অটোরিক্সা গ্যারেজ এর ভিতর ও গ্যারেজর সামনে পাকা রাস্তার উপরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।
নিহত হোসিয়ারী শ্রমিক আলমগীর হোসেন বন্দর শাহীমসজিদ এলাকার মৃত সোহবান মিয়ার ছেলে ও মালেক সিকদারের বাড়ি ভাড়াটিয়া।
মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম মৃত আলমগীর হোসেন (৫০) বাদিনীর আপন ভাই। বাদিনীর ভাতিজা মুন্নার এর সাথে বিবাদী জুয়েলের দীর্ঘ দিন ধরে টাকা পয়সা লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলছিল।
উক্ত টাকা পয়সার লেনদেনের বিষয় নিয়ে গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে বন্দর থানার সালেহনগর বাড়ৈপাড়া সাকিনস্থ জনৈক মালেক এর বাড়ির পিছনে ৩নং আসামী পারভেজ এর অটোরিক্সা গ্যারেজের ভিতর দরবার শালিস বসে। উক্ত শালিসে বাদিনী ও তার ভাতিজা মুন্না ও সকল আসামীগন এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিল।
বাদিনী ভাই আলমগীর হোসেন (৫০) শালিসে আসতে দেরি করায় ১১, ১৩, ১৫, ১৮নং আসামী আমার ভাইকে তার ভাড়া বাসা হইতে ধরে নিয়ে আসে। শালিস চলাকালে বাদিনীর ভাই ও ভাতিজা মুন্না ৫নং আসামী মোঃ জুয়েলের নিকট তাদের পাওনা টাকা চাইলে ওই সময় আসামী জুয়েল টাকা ফেরৎ দিতে পারিবেনা বলিয়া জানায় এবং খারাপ আচারন শুরু করে।
একই দিন সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় বাদিনীসহ তার ভাই ও ভাতিজা প্রতিবাদ করায় ১ ও ৪নং আসামী বাদিনীর ভাই আলমগীর হোসেনকে মারপিট শুরু করে এবং মারতে মারতে গ্যারেজের ভিতর হইতে রাস্তায় নিয়ে আসে।
রাস্তায় আনার পর সকল আসামীগন তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামীরা একে অপরের সহায়তায় ও যোগসাজসে একই উদ্দেশ্যে বাদিনী ভাইকে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে মারপিট করিয়া মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে।
ওই সময় হামলাকারি সুমন হত্যার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে আমার ভাইয়ের মাথায় আঘাত করিয়া ফাটা রক্তাক্ত জখম করে। এ ছাড়াও অপর হামলাকারি রুবেল হত্যার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা সুইচ গিয়ার দিয়ে বাদিনী ভাইয়ের মাথার পিছনের অংশে ঘাই মারে যার ফলে বাদিনীর ভাইয়ের মাথার খুলি ছিদ্র হয়ে মারাত্বক রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়।
ওই সময় বাদিনী ভাই মাটিতে পড়ে গেলে সকল আসামীগন তাদের হাতে থাকা লাঠি সোটা, এসএস পাইপ দিয়ে আঘাত করিয়া আমার ভাইয়ের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। বাদিনীসহ তার ভাতিজা ডাকচিৎকার করলে ওই সময় আসামীরা বাদিনীসহ তার ভাতিজাকে প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে।
পরে বাদিনী ও তার ভাতিজা মুন্না লোকজনের সহায়তায় জখমী ভাইকে উদ্ধার করে প্রথমে বন্দর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার বাদিনী ভাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
তাৎক্ষনিক আমি লোকজনের সহায়তায় আমার ভাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত শনিবার (৪ অক্টোবর) গত ০ সকাল পৌনে ৮টায় আলমগীর হোসেন মৃত্যু বরন করে।
ডিএমপি শাহাবাগ থানার পুলিশ আমার ভাইয়ের মৃতদেহের সুরহহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করিয়া ময়না তদন্ত শেষে নিহতের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।