নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৪ অক্টোবর ২০২৫

শিক্ষক পরিবারের আর্তনাদ “বাঁচতে চাই, ন্যায়ের বিচার চাই”

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৯:২৮, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

শিক্ষক পরিবারের আর্তনাদ “বাঁচতে চাই, ন্যায়ের বিচার চাই”

সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে জাতীয় পার্টির নেতা মকবুল হোসেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক নিরীহ শিক্ষক পরিবারের পৈতৃক সম্পত্তি দখল, চাঁদাবাজি ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, মৃত হাসমত আলীর চার পুত্রের নামে থাকা ২৩ শতাংশ জমি (চরগোবিন্দপুর মৌজার এস.এস ৪৩৪, ৪৩৫ ও আর.এস ৬৯৭ নং খতিয়ানভুক্ত) দীর্ঘদিন ধরে মকবুল ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। তারা বাধা দিতে গেলে একাধিকবার দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে নারী-পুরুষসহ পরিবারের সদস্যদের মারধর ও আহত করা হয়।

পরিবারটি বিষয়টি লিখিতভাবে সোনারগাঁ থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে সালিশি উদ্যোগ নিলে মকবুল ও তার সহযোগীরা স্থানীয় ব্যক্তিদেরও অপমান ও লাঞ্ছিত করেন এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, “মকবুল জাতীয় পার্টির নেতা হলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ব্যবহার করে বহুদিন ধরে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। তার অন্যায়, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনে আমরা অতিষ্ঠ।”

আরেক স্থানীয় মো. শফিউল্লাহ বলেন, “সে যুব উন্নয়ন অফিসে চাকরি করে। রাজনৈতিক প্রভাব ও কিছু কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় সব অপকর্ম করে বেড়ায়।”

প্রত্যক্ষদর্শী জাকারিয়া জানান, “মকবুল ও তার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় ভয়ভীতি ছড়িয়ে রেখেছে। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মকবুল শুধু ভূমিদস্যুই নয়, বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভয়ভীতি ও হামলার শিকার হন। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. কবির হোসেন বলেন, “প্রতিটি নির্বাচনের সময় সে তার লোকজন নিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করত এবং অনেককেই বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছে।”

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, মকবুলের দোসররা প্রায়ই দোকান ও বাড়িঘরে গিয়ে চাঁদা দাবি করে; না দিলে হুমকি দেয় বা মারধর করে। এতে সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন প্লাবন বলেন, “আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায়ের বিচার চাই। যেন মকবুল ও তার দোসরদের অন্যায় দখল, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অবসান ঘটে এবং এলাকায় শান্তি ফিরে আসে।”

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদটি শূন্য থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।