রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচজন নিহতের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে নিরাপদ নৌপথ চাই নামের একটি সংগঠন।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৫নং ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যার তীরে মানববন্ধনটি অনু্ষ্ঠিত হয়। নিরাপদ নৌপথ চাই সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি জুয়েল প্রধানের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি সবুজ শিকদার।
সংঠনের সম্পাদক কবির হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিআইডব্লিউটিসির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন চুন্ন মাস্টার প্রমুখ।
মানববন্ধনে সবুজ শিকদার বলেন, পবিত্র রমজান মাসে বিআইডব্লিউটিএ নৌ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মিটিংয়ে আমরা লঞ্চগুলোর শিডিউল নিয়ে হুড়োহুড়ি করে প্রাণহানির বিষয় নিয়ে সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু তখন লঞ্চ মালিকরা বিষয়টা হেসেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এই এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের মালিক বরিশালের সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপু। তিনি বিগত দিনে নৌ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে অনেক অনিয়ম করেছেন।
লঞ্চ মালিকরা মানুষকে মানুষ হিসেবে মনে করেনা। তারা যাত্রীদেরকে পণ্য মনে করে। তারা দীর্ঘদিন ধরে রামরাজত্ব সৃষ্টি করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
একজন যাত্রী তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীকে নিরাপদে গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য ভীড় এড়াতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সদরঘাটে স্বপরিবারে এসেছিলেন।
কিন্তু দুটি লঞ্চের শিডিউল নিয়ে প্রতিযোগিতায় অর্থাৎ কে কার আগে যাবে এই প্রতিযোগিতায় একই পরিবারের ৩ জনসহ ৫ জনের প্রাণ গেল। এটা কোন দুর্ঘটনা নয় এটা একটা হত্যাকান্ড। এর দায় লঞ্চ মালিকদেরও।
কারণ তারা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা শিডিউল নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেনা। ৫ জন প্রাণহানির ঘটনায় শুধু লঞ্চের মাস্টার ম্যানেজারদের গ্রেফতার করলে হবেনা নেপথ্যে যারা দায়ী তাদেরও খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত কমিটির কাছে দাবি জানাচ্ছি।
বিগত দিনে অনেক তদন্ত রিপোর্ট পর্দার আড়ালে ধামাচাপা পড়ে গেছে। এবারও যাতে এমনটি না হয়।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন বিকেল ৩টার দিকে সদরঘাট ১১ নং পন্টুনের সামনে এমভি তাশরিফ-৪ নামে একটি লঞ্চ ও এমভি পূবালী-১ নামে আরও একটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল।
এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে এমভি ফারহান–৬ নামে আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় তাশরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে গেলে পাঁচ যাত্রী লঞ্চে ওঠার সময় গুরুতর আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।


































