
ফতুল্লার পাগলা এলাকার ৮ম শ্রেণির ছাত্রী রেহানা আক্তার (ছদ্ম নাম) (১৩) অপহরণের ঘটনায় জড়িত মূলহোতা আল আমিন (২৮) কে দীর্ঘ ৮ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকার কদমতলী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল বাতেন মিয়া। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত শুনানী শেষে ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
মামলার তথ্যমতে, রেহানা আক্তার (ছদ্ম নাম) (১৩) ফতুল্লার মাসদাইরস্থ সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে পড়াশোনা করতো। সে প্রতিদিন স্কুলে আসা যাওয়ার পথে আসামি আল আমিন তাকে বিরক্ত করতো এবং বিভিন্ন ধরণের কু-প্রস্তাব দিতো।
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীর বাবা মোঃ রুহুল আমিন আলি আমিনের মামা মোঃ রানা মিয়ার (৩২) নিকট নালিশ করেন। এতে মোঃ রানা মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে রুহুল আমিনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, এ বিষয় নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করলে রেহানা আক্তার (১৩) কে অপহরণ করা হবে।
এমতাবস্থায় ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল সকাল ৯টায় রেহানা আক্তার স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলে সকাল অনুমান সাড়ে ৯টায় আল-আমিন (২৮) অন্যদের সহযোগীতায় ফতুল্লার পাগলা মসজিদ মার্কেটের সামনে থেকে রেহানা আক্তারকে জোড়পূর্বক অপহরণ করে।
এ ঘটনায় ২০ এপ্রিল ফতুল্লা মডেল থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্তকরাকালীন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল ফতুল্লার পাগলা এলাকা হতে রেহানা আক্তারকে উদ্ধার করেন এবং দুইজন আসামীকে গ্রেফতার করেন। পূর্ববর্তী তদন্তকারী কর্মকর্তা স্কুল ছাত্রী রেহেনার ধর্ষণ সংক্রান্তে ডাক্তারী পরীক্ষা, ডাক্তারী সনদ সংগ্রহ করে উক্ত ঘটনায় মামলার মূল আসামী গ্রেফতার এবং মূল রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। বাদী বিজ্ঞ আদালতে নারাজীর আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত বাদীর নারাজীর আবেদন মঞ্জুর করে অত্র মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মো: মোস্তফা কামাল রাশেদ জানান, আদালতের নির্দেশ পেয়ে ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল বাতেন মিয়াকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ এবং গোপন তদন্তের মাধ্যমে আত্মগোপনে থাকা স্কুল ছাত্রী রেহানা আক্তারকে অপহরণকারী মুলহোতা আল আমিনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আল আমিন স্বীকার করেছে যে, প্রেমের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অপরাপর সহযোগী আসামীদের সহায়তায় ভিকটিম রেহানা আক্তারকে অপহরণ করে।’
পলাতক আসামীদের গ্রেফতার ও মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) আল আমিনকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত শুনানী শেষে ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।