![সিদ্ধিরগঞ্জে মাদ্রাসায় ২ ছাত্রকে পিটিয়ে জখম সিদ্ধিরগঞ্জে মাদ্রাসায় ২ ছাত্রকে পিটিয়ে জখম](https://www.narayanganjtimes.com/media/imgAll/2021May/Untitled-3-copy-2402242034.jpg)
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুটি মাদ্রাসায় জুবায়েরের (১০) ও আমির হামজা (৯) দুই ছাত্রকে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করেছে শিক্ষক। এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীদের অভিবাবকরা আইনের আশ্রয় নিতে চাইলেও প্রভাবশালীদের চাপে তারা সমাঝোতার অযুহাতে নিশ্চুপ রয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনায় এ মিশ্র পতিক্রিয়া ও আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। মাদ্রাসা দুটি হলো- মিজমিজি দক্ষিনপাড়া জামালুল কোরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদ্রাসা ও কদমতলী মদিনাবাগ এলাকার সবুরা খাতুন ইসলামিয়া মাদ্রাসা।
জানাগেছে, কদমতলী মদিনাবাগ এলাকার সবুরা খাতুন ইসলামিয়া মাদ্রাসায় নাজেরা বিভাগের ছাত্র জুবায়েরের (১০) কে শুক্রবার পিটিয়ে জখম করে ওই মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষক রাকিবুল ইসলাম। এ ঘটনার পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করে রাখে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
পরে এ ঘটনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রের পরিবারকে স্থানীয়দের সহায়তায় ম্যানেজ করে কৌশলে অভিযুক্ত শিক্ষককে এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসায় গেলে মাদ্রাসার মালিক মো. আলমগীর বেপারী ও পরিচালক মো. নাঈম বেপারী ওই শিক্ষকের বিষয়ে কোন তথ্য সাংবাদিকদের না দিয়ে তারা জানান, প্রায় ১৩ দিন পূর্বে অভিযুক্ত শিক্ষক রাকিবুল ইসলামকে মাদ্রাসায় নিয়োগ দেওয়া হয়।
শুক্রবার ছাত্র পিটিয়ে জখমের ঘটনায় পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইলে পরদিন শনিবার তাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এদিকে নাম না প্রকাশের শর্তে একটি সূত্র জানায়, নির্মম এ ঘটনার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ভুক্তভোগীর পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করে এক’শ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে আপস-মিমাংসা করে।
যাতে পরিবারের সদস্যরা আইনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারে। বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে পরে জানাজানি হয়। এর আগেও একই মাদ্রায় আরো ৪/৫ জন শিক্ষার্থীর সাথেও একই ধরণের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা গিয়াস উদ্দিন কোনো কিছু বলতে অপারগত প্রকাশ করলেও তিনি ছেলেকে মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলে এখন বাসায় আছে। তারা অনেক অনুরোধ করেছে, তাই তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি।
অপরদিকে মিজমিজি দক্ষিনপাড়া জামালুল কোরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আমির হামজাকে পিটিয়ে জখম করেছে মাদ্রাসার শিক্ষক জাবের আহম্মেদ। এখানেও ভুক্তভোগী ওই ছাত্রের পরিবারকে প্রভাবশালী স্থানীয়রা কৌশলে চাপ সৃষ্টি করে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন।
ওই শিক্ষার্থী আমির হামজার অপরাধ ছিলো সে তার মায়ের সাথে বেড়াতে যাওয়ার কারনে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত ছিলো। পরের দিন ১৭ ফেব্রুয়ারি মা নিজে মাদ্রাসায় যেয়ে ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসেন, পরবর্তীতে বিশেষ কারনে মা এবং দাদী দেখা করতে গেলে, তাদের সাথে দেখা করতে দেননি মাদ্রাসার নামেমাত্র ঐই শিক্ষক !!
এরপর আমির হামজার শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাড়িতে আসলে মা তার সন্তানের এমন অবস্থা দেখতে পান। এবং তার ছেলের মুখে এই নির্মমতার কথা শুনে নির্বাক হয়ে যান। পরবর্তীতে তার পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে প্রভাবশালী মহলের চাপে নিশ্চুপ হয়ে পড়েন।
এদিকে আমির হামজার উপর এমন নির্মতার প্রতিবাদ জানিয়ে এম. এস. সানি নামে এক ব্যক্তি তার ফেইস বুক স্ট্যাটাসে লিখেন- এমন সব কসাইয় মার্কা শিক্ষকের কারনে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তদন্ত কর্মকর্তার নিকট বিনীত অনুরোধ-- এদের’কে আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এবিষয়ে এখনও কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেন নি। তারপরও খোঁজ খবর নিচ্ছি। অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।