নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

১৮ এপ্রিল ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার পাল্টা জিডি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০৩:৫৭, ২৮ আগস্ট ২০২১

সিদ্ধিরগঞ্জে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার পাল্টা জিডি

বাম পাশে মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মো. দ্বীন ইসলাম। ডান পাশে অধ্যক্ষ মীর মোসাদ্দেক হোসেন।

সিদ্ধিরগঞ্জে গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মীর মোসাদ্দেক হোসেনের বিরুদ্ধে পাল্টা জিডি করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক।  বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী (নং ১২৬৬) করেন মো. দ্বীন ইসলাম।

 

এর আগে গত বুধবার (২৫ আগস্ট) প্রাণ নাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগে দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন কলেজটির অধ্যক্ষ মীর মোসাদ্দেক হোসেন।


দ্বীন ইসলাম জিডিতে উল্লেখ করেন, গত ২৫ আগস্ট দুপুর আনুমানিক সোয়া ২ টায় গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজের শিক্ষার্থী তানভীন ইসলামের সাথে আমার হিরাঝিল এলাকায় দেখা হয়। তখন তানভীন ইসলাম কান্না করছিল। আমি কান্নার বিষয় জানতে চাইলে সে আমাকে জানায়, “সে (তানভীন) এইচএসসি-২০২১ এর ফরম ফিলাপ করতে পারছেনা। 


কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক স্যার তাকে জানান এ বছর সে পরীক্ষা দিতে পারবেনা। কিন্তু তার কলেজের বেতন, ল্যাবরেটরীসহ যাবতীয় ফি পরিশোধ করা আছে। তার কাছে কলেজের কোন বকেয়া নেই। সে নিয়মিত কলেজের নিয়মানুযায়ী সকল এসাইনমেন্ট জমা দিয়েছে। বুধাবার বিকেল ৫টায় ফরম ফিলাপের টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ।”


তানভীন আমার পূর্ব পরিচিত এবং সে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। আমি তার কথা শুনে মানবিক দিক বিবেচনা করে স্যারকে প্রথমে ফোন দেই, কথা বলতে চাই। পরে স্যার আমাকে কলেজে আসতে বলে। প্রথমে আমি স্যারের অনুমতি নিয়ে অফিসে প্রবেশ করি। স্যার আমার পরিচয় জানতে চায়। 


তারপর আমি আমার স্থানীয়, পারিবারিক এবং রাজনৈতিক পরিচয় স্যারকে পেশ করি। তিনি আমার পরিচয় শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তারপরও আমি স্যারকে বারবার অনুরোধ করি, যাতে সে তানভীনকে এইচএসসির ফরম ফিলাপ করতে দেন।


তখন তিনি আমাকে বলেন- এই কলেজ আমার নিয়মে চলে; এটা তোলারাম কলেজ না। ছাত্রলীগ সভাপতি এলে আমার সাথে বসে থাকে। তুই আসছিস আমার সাথে কথা বলতে! এখনি আমার রুম থেকে বের হয়ে যা। তখন আমি স্যারকে বিনয়ের সাথে বলি, আপনি আমার সাথে এমন ব্যবহার করতে পারেন না। 


তিনি আমার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে রুমে অবস্থানরত অন্যান্য শিক্ষকসহ ছাত্রদল নেতা মো. শাকিল ও অন্যান্য বহিরাগত যারা তার আশপাশে বসা ছিল, তাদেরকে বাহিরে নিয়ে গিয়ে আমাকে মারার জন্য বলে এবং গালাগালি করতে থাকে এবং বলে তুই কার অনুমতি নিয়ে কলেজে আসছিস। 


তখন তাদের মধ্যে আমি যাদের চিনতে পেরেছি তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ছাত্রদল নেতা মো. শাকিল, কলেজের শিক্ষক নিলয় ও আবু তাহের। তারা আমার হাত ধরে ফেলে এবং আমাকে প্রহার করতে উদ্যত হয়।


এক পর্যায়ে আমি তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করি, এখানেতো আমার দোষ নেই, আপনারা এমন করছেন কেন? কিন্তু তখনও মোসাদ্দেক স্যার বলছিলেন, ওরে মার ওরে বুঝাইয়া দে আমি কে!!

 

তারপর আমি কোনমতে মোসাদ্দেক স্যার এর রুম থেকে বের হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় আমার রাস্তা আটকিয়ে দেয় এবং আমার পেছনে আসতে থাকা শাকিলকে বলে আমি যেন কোনভাবে সিঁড়ি দিয়ে নামতে না পারি এবং আমাকে গুলি করে মেরে পুকুরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। 


এমতাবস্থায় আমি কোন উপায় না পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ রিপন স্যারকে ফোন দেই এবং আমাকে উদ্ধার করতে বলি। ফোন দিতে দেখে তখন তারা অফিসে ঢুকে যায়। এই সুযোগে আমি কোন রকম নিজের জীবন বাঁচিয়ে বের হয়ে চলে আসি।


এদিকে এই ঘটনার খন্ডিত ভিডিও ফুটেজ কাঁটা-ছেড়া করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।


এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ আবু বকর সিদ্দীক জানান, উভয় পক্ষ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।