নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪

লকডাউন আরও কঠোর হওয়া দরকার

মীর আব্দুল আলীম

প্রকাশিত:১৯:৪১, ৬ জুলাই ২০২১

লকডাউন আরও কঠোর হওয়া দরকার

রাজধানীর কোল ঘেঁষা রূপগঞ্জের এক আধুনিক যুবক এ কি বলছেন!“করোনা আছে বিশ^াসই করি না” আমার গ্রামের ভাতিজা মুখে এমন কথা শুনেতো আমি রিতিমতো হতবাক!  আসলে গ্রামের অনেক মানুষই এমন কথা বলে। তাই শহর থেকে কোভিটের আক্রন্ত এখন গ্রামের মানুষ বেশি।

 

দেশজুড়ে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভাইরেন্ট। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের অর্ধেকেরও বেশি গ্রামের মানুষ। হাসপাতালে আসা অধিকাংশ রোগীর অবস্থাই নাজুক ।

 

করোনার তীব্রতা অনেক বেশি হলেই হাসপাতালে আসছেন এসব রোগীরা। সারা দেশেঅক্রান্তের হার প্রায় ৩০ শতাংশ। কোনকোন জেলায় তা ১০০ শতাংশও পাওয়া গেছে। যা কিনা রিতিমত ভয়ংকর!


দেশে কোভিড রোগীর চাপ বাড়ায়হাসপাতালগুলোর করোনাইউনিটে অক্সিজেন ও আইসিইউর জন্য হাহাকার চলছে। করোনা ওয়ার্ডে মারা যাচ্ছে রোগী। রোগীর স্বজনদের আর্তনাদ আর আহাজারি হাসপাতালের পরিবেশ ভারী করে তুলেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ কমাতে না পারলে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়বে।

 

নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পরবে। কারণ যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে সেই হারে কোভিড চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ অবস্থায়ও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। মৃত্যুর সংখ্যা টানা কয়েকদিন ধরেই একশ’র ওপরে থাকছে। দুই’শ ছুঁই ছুঁই। কোভিড শুরুর পর থেকে গত ১৫ মাসে এমনটি দেখা যায়নি। বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে কঠিন ও ভয়ঙ্কর সময় পার করছে দেশ।

 

একসঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের হার আগে কখনই এত বেশি দেখা যায়নি। ঢাকার বাইরের জেলা শহরগুলোতেও করোনাভাইরাস এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। এমনকি কিছুকাল আগে গ্রামাঞ্চলেও এত করোনা রোগী শনাক্ত হননি। 


এমন পরিস্থিতিতে সরকার কঠোর লাকডাউন দিতে বাধ্য হয়েছে। লকডাউনের জন্য সরকারকে দুষছেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছেন গরিবের পেটে নাকি লাথি মারা হচ্ছে। লকডাউনেতো সরকারেরই বেশি ক্ষতি। অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয় দেশ। সব কিছু স্থবির হয়ে পরে। তা ছাড়া দেশের জনগনের ক্ষতিতো সরকারেরই ক্ষতি। এটা সত্য যে, লকডাউনের ভেতর দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরই কষ্ট বেশি। তাদের খাদ্য সংকটও দুর করা দরকার।

 

মহামারীর এই সঙ্কটকালে একজন মানুষও যেন অভুক্ত না থাকে, একজন অসুস্থ মানুষও যেন চিকিৎসা না পেয়ে মারা না যায় সেজন্য অবশ্যই সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। মানুষ যেন মনুষ্যত্ববোধের কল্যাণধারা থেকে বঞ্চিত না হয় সেটা সরকারকে যেমন ভাববে তা দেশের বিত্তবানদেরও ভাবায় থাকা দরকার। এ দুঃসময় কিন্তু থাকবে না।

 

আধার কেঁটে যাবেই, তখন যেন আমরা উঁচুগলায় বলতে পারি, আমরা মহামারী অতিক্রম করেছি পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধে, চিরায়ত মানবিকতায়, মানবসম্মত মনুষ্যত্ববোধে। যাদের যেমন সামর্থ আছে তারা তেমনই ভাবে অসহায় মানুষ এবং স্বজনদে পাশে থাকতে হবে। একটা উদাহরন এখানে আমাকে টানতে হচ্ছে।

 

সেদিন জরুরী প্রয়োজনে বাসা থেকে রিক্সায় মতিঝিল যাচ্ছিলাম। রিক্ষাচালকের বয়স একটু বেশিই। ৬০ এর কম নয়। হঠাৎ দেখি রিক্সা পাশে দাঁড় করালেন। রাস্তায় শুয়ে থাকা এক অসুস্থ্য বৃদ্ধকে তিনি পকেট থেকে ১০ টাকা বের করে দিলেন।  আসলে অনেকের কাছ থেকেই আমাদেও অনেক কিছু শিখতে হয়। সেদিন তাঁরকাছেও কিছু শিখলাম। আমরা এই রিক্সাওয়ালা ভাইয়ের মতো যারযার মতো করে এমন দু:সময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞা করতে পারি।


বর্তমান নভেল করোনার যে ভাইরেন্ট ছড়াচ্ছে তাতে কঠোর লকডাউনে যাওয়া ছাড়া সরকারের কোন গতি ছিলো না। মানুষের জীবন বাঁচাতে চাই সর্বাত্মক প্রতিরোধ। আর সেজন্য লকডাউনের শতভাগ সফলতা নিশ্চিত করতে হবে। এতে প্রশাসনের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি প্রতিটি নাগরিকেরও করণীয় রয়েছে।

 

কঠোর লকডাউনের পরও জনগন কিন্তু সচেতন নয়। অনেকে মাস্কু বেব্যহার করেন না।তাই অসনচেতনতায় কোভিড শহর ছেড়ে গ্রামগঞ্জেও ছড়িয়ে পরেছে। আমরা মনে করি লকডাউনের ব্যাপারে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। নইলে যে হারে করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে তাতে হাসপাতাল গুলোতে আর চিকিৎসার জায়গা থাকবে না।

 

ভারতের চেয়ে ভয়াবহ হতে পারে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। জনগন যত সমালোচনাই করুক লকডাউনে শিথিলতা কোনভাবেই কাম্য নয়। আমাদের দেশেই কেবল ঢিলেঢালা লকডাউন পলিত হয়। এদেশে হুঙ্কার বেশি; কাজ কম। বিশে^র অধিকাংশ দেশেই নতুন করে লকডাউন চলছে। আমাদের দেশে রাস্তাঘাটে,খাবারের দোকান বসে।

 

ভারতের কিছু অঞ্চল ছাড়া সারা বিশে^ এমনটা আর কোথাও নেই। খাবারের হোটেলে ভিড় হচ্ছে বেশি। লকডাউনে খাবারের দোকান থেকে খাবার আনার নিয়ম আছ তাই এই সুযোগে হোটেলে খাবার আনতে গিয়ে জটলা করছে। চায়ের আড্ডায় মানুষ যাচ্ছে। খাবারের দোকান (হোটেল) খোলা রাখা সরকারের সমোচিন হচ্ছে না। কাঁচাবাজার, মুদিদোকান, ঔষধ নিদৃষ্ট সময়ের জন্য খোলা রেখে কঠোর লকডাউনে সরকার না গেলে আরও অনেক বেশি ক্ষতি হবে।

 

জরুরী কাজে কিছু পরিবহন, নিয়ম মেনে সীমিত রিক্সা চলতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে শিল্পকারখানা, গার্মেন্টস বন্ধ রাখা উচিৎ। অন্তত তা ১৫ দিন। তাতে হয়তো অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে না। ১৫ দিন কঠোর লকডাউনে গেলে কোভিড পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতিহতে পারেবলে বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। আর সরকারকে তাই করা উচিৎ। 


দেশে কঠোর লকডাউন চলছে এটা বলা যাবে না। লকডাউন চলছে অনেকটাই ঢিলেঢালা। এই লকডাউনে কিছুটা কাজ হয়েছে; পুরোটা নয়। দেশের মানুষ বড় বেশিদায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। বাজারে, রাস্তায়, চা-পানের দোকানে অড্ডা জমছে। মিটিং মিছিলও হচ্ছে কোথাও কোথাও। বিয়ে-সাদী, এমনকি শুটিংয়ের খবরও ছেপেছে আমাদের পত্রিকাগুলো।

 

কি অদ্ভত দেশে আমরা বাস করি,লকডাউন কেমন হচ্ছে এটি দেখার জন্য রাস্তায় দলে দলে মানুষ বেরিয়ে আসে। এখনও ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস বিষয়ে মানুষ যেন হেলাফেলা করে চলছে। আসলে এভাবে হবে না কঠোর লকডাউনে গিয়ে আইন অমান্যকারীদের কাছ থেকে অধিক অর্থদন্ড আদায় করতেহবে।

 

প্রয়োজনে সে অর্থ করোনা রোগিদের চিকিৎসায় ব্যয়করা যেতে পারে। সাজা বাড়লে জনগন সচেতন হবে। পাশের দেশ ভারতের মানুষও হেলাফেলা করে সর্বনাশ করেছে। সেখানে ৪ লাখেরও বেশিলোক করোনায় মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে সারে তিন কোটি মানুষ। ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকার কঠোর হয়েছে। অসচেতন মানুষকে অর্থদন্ডসহ গণহারে পিটুনি দিয়ে আতংক তৈরি করেছে।

 

আমাদের দেশেও তা করা উচিত। মনে রাখতে হবে মানুষের জীবন রক্ষার জন্য কঠোর হওয়া ছাড়া বিকল্প নাই। সেসঙ্গে নিষ্ঠুরও হতে হবে। জীবীকার একটা বিষয় আছে এটা আমরা বুঝি এটাও সত্য মানুষের জীবন আগে। জীবন না বাঁচলে জীবিকা দিয়ে কি হবে?

 

নিয়মমাফিক ১৫ কিংবা তার কিছু বেশি সময় দেশ কঠোর লকডাউনে গেলে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে সারাদেশে তার আওতায় আনতে হবে। আগত ঈদকে ঘিরে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপার সরকারকে এখনই নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।


তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। এভাবে চলতে থাকলে সরকারের হাতে আর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। লকডাউনকে উপেক্ষা করে দায়িত্বহীন হয়ে ঘরের বাইরে গেলে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করলে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি সঙ্কটাপন্ন হয়ে উঠতে পারে।

 

সেজন্যই লডাউনের বড় ধরনের সফলতা অত্যাবশ্যক। যৌক্তিক কারণ ছাড়া ঘর থেকে মানুষ বের হচ্ছে। পুলিশের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে যে, প্রধান প্রধান সড়কগুলোর চেয়ে অলিগলিতে মানুষের চলাচল ছিল বেশি। গলিতে আড্ডাও দিতে দেখা গেছে অনেককে। এটিই আশঙ্কাজনক ও হতাশার। কোভিড-১৯ আছে এটা তারা বিশ^সই করে না। তাই নিয়ম মানেনা। মাস্ক পরে না।

 

যত্রতত্রর নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়। নতুন করেকোভিড যেখানে সারা বিশ^কে কাঁপিয়ে দিচ্ছে, মানুষ মরে ছাফ হয়ে যাচ্ছে সেটা তাঁদের চিন্তাতেই নেই। নিয়ম না মানার কারনে আমাদের যা হবার তাই হচ্ছে। প্রতিদিন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, অক্সিজেন, ভেন্টিলেশন, আইসিইও পাচ্ছে না। বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়েও মরছে।


লকডাউনে ব্যাপারে মানুষ সরকারকে দুষছে। লকডাউনে গেলে সরকারের কি লাভ? লকডাউনে দেশের অর্থনীতির চরম ক্ষতি হয়। লকডাউন চলতে থাকলে যে ক্ষতি হবে সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে কিন তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তবুও মানুষের জীবনের কথা ভেবে সরকারকে লকডাউনের কথা ভাবতেই হয়।

 

আসলে লকডাউনেও দেশটা লক নেই দেশের অজ্ঞ মানুষ লকডাউন না মেনে যত্রতত্রর মাস্কবিহীন চলাফেরা করছে। এ পরিস্থিতিতে লকডাউন যে কারনে দেয়া হয়েছে তার সফলতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। লকডাউনের পরও যদি কোভিড আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে তাহলে হয়তো সরকার আরও দীর্র্ঘ লকডাউনে যেতে পারে দেশ তাতেদেশ এবং মানুষের াারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

 

বেশি ক্ষতি হবে দিন এন দিন খাওয়া মানুষ গুলোর। তাই সবার উচিত সরকারের নির্দেশনা মানা এবং সকল স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা। সরকার কিন্তু বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনেই চলছে। এ নিয়ম আমাদেও মানা উচিৎ।


তবে সরকারেরও কিছু ভুল আছে। তাতে খিসারৎও দিতে হচ্ছে। আরও আগে থেকেই কঠোর লকডাউনে যাওয়া দরকার ছিলো। নিদেন পক্ষে কঠোর নিষেধাজ্ঞায় দেশ চললে করোনা এভাবে সারা দেশে ছড়িয়ে পরতো না। সবইকে মাস্ক পরত বাধ্য করা দরকার ছিলো। এদেশের মানুষ আসলে নিয়ম মানতে চয় না।

 

তাদের নিয়ম মানতে বাধ্য করতে হয়। জরিমানা করে প্রয়োজনে পিটিয়ে নিয়ম মানতে বাধ্য করা দরকার ছিলো যা কিনা অনেক দেশ করছে। এক পুলিশ বাহিনী দিয়ে আইন মানানো যাবে না। পুলিশে লোক সল্পতা রয়েছে। তা ছাড়া পুলিশ আইনশৃঙ্কলা রক্ষার জন্য অন্য কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এ ক্ষেত্রে যৌথ বাহিনী নামানো প্রয়োজন। অবশ্য মাঠে সেনাবাহিনী আছে তাদেও আরও দ্বায়িত্ব দিতে হবে। তাদের কঠের হতে নির্দেশ দিতে হবে।


আসলে আমরা সতর্ক নই বললেই চলে। লকডাউনেও হাটবাজার পুরোদমেই চলছে। গার্মেন্ট, কলকারখানা নিয়মনীতি না মেনেই জমজমাট। রাস্তাঘাট, মসজিদে, বাজারে মানুষ। জনসমাগম সবখানেই হচ্ছে। মানুষের হুঁশ নেই। টাটকা তরিতরকারী, মাছ, মাংস কিনতে মানুষ বাজারে ছুটছে। চায়ের দোকানের আড্ডাও বেশ জমছে। লোক জড়ো করে দান-খয়রাত, ফটোসেশন কোনটাই বন্ধ নেই।

 

অন্ধ মানুষ, বন্ধ বিবেক। পত্রপত্রিকায় দেখছি, কর্মহীন মানুষ কোথাও কোথাও খোলা মঠে জুয়ার আড্ডায়ও মেতেছে। মানুষ যেন আগের চেয়ে বেশ সচল।এদেশে কি আইনকানুন মানে কেউ। আইনানুন মানাতে হয়। যারা মানাববার দ্বায়িত্বে থাকেন তাদের অনেকে ঘরে আরাম আয়েশ করেন। কোভিডে জীবনের ঝুকি নিতে চাননা। যাকনা সব গোল্লায় তাতে তাদের কি। এই অবস্থা।


জবাবদিহিতাতো নেই এদেশে। সরকার যখন লকযাউন কিংবা কোন জরুরী অবস্থার কথা ভাববেন তখন সরকারের আরেকটা বিষয় ভাবনায় থাকা জরুরী। আইন মানতে বাধ্য করার মতো লোক রাস্তায় নামানো। পাঠক মনে আছে নিশ্চয় ম্যাজিষ্ট্রেট রোকন-উ-দ্দৌলার কথা। তিনি আমার খুব কাছের মানুষ। পারিবারিক সম্পর্কও রয়েছে তাঁর সাথে।

 

তাঁর কথা একারনে এ লেখায় টানলাম এমন সৎ মানুষ সরকারে অনেক আছেন। সরকারের যারা আছেন তারা সবাই অসৎ নন। বেছে বেছে এলাকা ভিত্তিক জেলা কিংবা উপজেলা ভিত্তিক এসব সৎ মানুষদের মনিটরিংয়ের দ্বায়িতে রাখা গেলে ফলাফলটা যে ভালো হবে সেটা নিশ্চিৎ। 


আসলে আমাদের ভাবনাটা কম। সবার কথাই ভাবতে হবে। লকডাউনতো মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্যই। তাই মানুষের সার্বিকভাবনাটা সরকারকে ভাবতেই হবে। বিশেষ করে দিনআনে দিন খাওয়া মানুসের কথা। এ সময় তাদেরই বেশি কষ্ট হয়। যারা রাজনীতি করেন তাদের বলছি। রাজনীতির খাতায় নাম লেখাতে পারলেতো এদেশে কামাইরোজগার বেশ ভালোই হয়।

 

তবে সব রাজনৈদিক নেতার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। অনেক গুণী এবং সৎ, জনদরদী নেতাও আছে অনেক। যারা এপথে ওপথে কামাই রোজগার করেন তাদের বলছি। দয়া করে জনগনের কথা ভাবুন একটু। লকডাউনে গরিব অনেক কষ্ট হবে। না খেয়ে থাকবে অনেকে।

 

তাদের সীমাহীন ধনভান্ডার থেকে কিছু দানখয়রাত করবেন প্লিজ। যেভাবে কোভিডে মানুষ আক্রন্ত হচ্ছে আর মানুষ মারা যাবার ঘটনা গটছে তাতে সরকারে লকডাউন না দেওযা ছাড়া উপায় ছিলো না। লকডাউনে সরকার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই দেশের স্বার্থে সকারকে সহায়তা করুন। যার যতটুকু সঙ্গতী আছে সে অনুসাওে পাশে থাকুন।


মসজীদ উপাশনালয় গুলোতেও আমরা ভিড় করছি। অসাবধানতা অবলম্বন করছি। ইসলাম ধর্মে কিন্তু এসব রোগ-বালাইয়ের ব্যাপাওে স্পষ্টই আমাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আল-কোরআনে মহামারী হলে যে যার স্থানে থাকার কথা বলা আছে। অন্য ধর্মেও রোগের ক্ষেত্রে সতর্ক করা আছে। প্রয়োজন না হলে ক’দিন নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, অন্যের জন্য ঘর থেকে বাহিরে না যাওয়াই ভালো।

 

প্রয়োজন থাকলে কী আর করা! মনে রাখবেন, এ সমস্যা কিন্তু অনেক দিন ধরে থাকবে না। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করবেনই। কিছুদিন যারা সতর্ক থাকতে পারবেন, সবকিছু ঠিকঠক মেনে চলবেন তারা হয়তো এ বিপদ থেকে অনেকটা মুক্ত থাকতে পারবেন। তবে আমরা বেশিই অসাবধান মনে হয়। কোনো কিছুকেই গুরুত্ব দিতে চাই না কখনো। কোনো কিছু মানতে চাই না। এ অবস্থায় কি আমাদের রক্ষা হবে?


করোনায় করুণা করছে না কাউকে। সবচেয়ে ধনি দেশগুলো করোনায় কুপকাত। উন্নত প্রযুক্তি, গবেষণা, করোনার ভ্রাক্সিন, কোনটাই কাজে আসছে না। মানুষ মরছে প্রতিদিন। আমাদের আরও প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা কতটা প্রস্তুত? আর কতটা সতর্ক? সতর্কতা খুবই কম। মানুষ কথা শুনতেই চায় না। সরকারের নিয়মের তোয়াক্কা করে না।

 

স্বাস্ত্যবিধী মেনে চলে না।তাতে অনেক ভয়ংকর রুপে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে। তাতে সামাল দেয়া কঠিনই হবে। এখনই তা হচ্ছে।সতর্কতার অভাবে করোনাভাইরাসে সারাদেশে মানুষ এমনকি বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনেক ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। দিনদিন বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। অরক্ষিত অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 


এ অবস্থায় হয়তো সামনে সুসংবাদ নেই। ভয়াবহ দিন আসছে। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর মিছিলে অসংখ্য মানুষ যুক্ত হচ্ছে। এসময় চিকিৎসকদেরই সবচেয়ে দরকার। চিকিৎসকরা যাতে সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত না হয়ে পরে সে ব্যাপারে সরকার সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দিতে হবে। এ সময় তাদের নিরাপদ রাখা খুব জরুরী।

 

তাই আগে চিকিৎসকদের বাঁচান। চিকিৎসক বেঁচে থাকলে রোগীদের বাঁচানো যাবে। দেশে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। গত দেড় বছরে ইন্টারর্নী চিকিৎসকের বেপক ঘাটতি দেখাদিয়েছে। মেডিকেল কলেজ গুলো সচল রাখা দরকার। নিয়ম মেনে তাঁদেও পরীক্ষা নেয়া হলে এও ঘাটতি হয়তো হতো না। এ বিষয়টিও সরকারকে ভাবতে হবে। 


যেভাবেই বলি, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আমাদের যুদ্ধে নামতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। ঘুরতে না যাওয়ার, বেশি মানুষ এক জায়গায় না হওয়ার, চায়ের দোকান, বেশি বেশি বাজার করা, আড্ডাবাজি বন্ধ করতে হবে। করোনা নামক শত্রু এদেশে ঢুকে পড়েছে।

 

হালে ভয়ঙ্কও ডেলল্টা ভাইরেন্ট দেশে ঢুকে পরেছে। সবাই সতর্কতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে না পড়লে আমরা হয়তো এ যুদ্ধে হেরে যাব। আসুন, সবাই সতর্ক হই। যেকোন মহামারীতে সতর্কতার বিকল্প নাই। মনে রাখবেন, ভাইরাস থেকে রক্ষার একটাই পথ, সতর্কতা।

 

লেখক- 
 সাংবাদিক, কলামিস্ট ও  সমাজ গবেষক। 

সম্পর্কিত বিষয়: