
সিদ্ধিরগঞ্জে সাইফুল ইসলাম সাজ্জাদ (২৪) নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধী যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় ৩৫ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ের অভিযোগ উঠেছে নিহত যুবকের পরিবারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ জনকে পুলিশ আটক করার পর গত রবিবার থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত আসামীপক্ষের সাথে বাদিপক্ষের জোর টানাপোড়েন চোখে পড়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও আশেপাশের এলাকায়।
সাজ্জাদ হোসেন নামে ওই যুবক হত্যার পর মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে নিহতের স্বজন ও আসামিপক্ষের মধ্যে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা ও টানাপোড়েন। দীর্ঘ সময় দুই পক্ষের তোড়জোড় শেষে একপর্যায়ে বাদিপক্ষ আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করতে অপারগতা জানায় পুলিশকে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, নিহত যুবকের পরিবারের লোকজন আসামীপক্ষের একাধিক ব্যক্তির কাছে থানায় মামলা না করার শর্তে মোটা অঙ্কের টাকা দাবিও করেছে।
এক সময় আর্থিক লেনদের বিনিময়ে বাদিপক্ষ আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি, উল্টো আসামিপক্ষই টাকা দিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব দিচ্ছে।
এদিকে ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও নিহতের পরিবার এখনো মামলা করেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বলেন, মানসিক প্রতিবন্ধী সাজ্জাদ হত্যার ঘটনায় আমি নিরলসভাবে কাজ করছি। ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
নিহতের পরিবারকে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ (এজাহার) দিতে অনুরোধ করেছি, কিন্তু তারা বারবার মত পাল্টাচ্ছেন। কেন তারা মামলা করতে গড়িমসি করছেন তা আমার বোধগম্য নয়।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের এক স্বজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নিহতের পরিবার তাদের একজনকে বাদ দেওয়ার শর্তে ২ লাখ টাকা দাবি করেছে। দর-কষাকষির একপর্যায়ে ১ লাখ টাকা দিতে রাজি হলেও সমঝোতা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়ার আইলপাড়া এলাকায় ক্রাউন সিমেন্ট কারাখানার সামনে ঐ মানসিক প্রতিবন্ধী যুবক সাজ্জাদ গাড়িতে ঢিল ছুড়ে গ্লাস ভেঙে ফেলে।
এসময় গাড়ির চালক-হেলপার ঐ যুবককে ছিনতাইকারী আক্ষা দিয়ে ক্রাউন সিমেন্ট কারখানার ভেতরে ধরে নিয়ে যায়। পরে চালক-হেলপার তাদের সহযোগীদের নিয়ে ঐ যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনায় খবর পেয়ে পরদিন সকালে ঘটনাস্থলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িতে সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা মামলা দায়ের না করায় পরে তাদের ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।