
নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ২০২৩ সালে আমাদের নেতা ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন যে স্বৈরাচার চলে যাওয়ার পরে স্বৈরাচার দ্বারা বিধ্বস্ত এই বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে সংস্কার ছাড়া সম্ভব নয়।
সেজন্য ৩১দফা কর্মসূচি দিয়ে সারা বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে আমরা পৌঁছে দিয়েছি যে স্বৈরাচার চলে যাওয়ার পরে এই ৩১দফা কর্মসূচি বিএনপি বাস্তবায়ন করবে ইনশাল্লাহ।
আজকে সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করার একটা ষড়যন্ত্র চলছে। এটা আমাদের দেশের মানুষের কাম্য না। দেশের মানুষ চায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনা স্বৈরাচার যেভাবে তিন তিনটি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। দেশের জনগণ এখন গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়।
সেই কারণে আমরা বলছি দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। এই নির্বাচন এবং বিচারকে ব্যাহত করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং অপশক্তি যারা পরাজিত হয়েছেন পালিয়ে গেছে তারা এখন ষড়যন্ত্র করছে কিভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাকাণ্ড ছড়িয়ে প্রচার করা যায়। মানুষ থেকে বিএনপিকে কিভাবে দূরে সরানো যায়।
আমাদের প্রিয় নেতা যেখানে সারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে ইতিহাস বর্তমান ধারা যারা নেতৃত্ব দেয় তাদের সবচাইতে বেশি প্রিয় একজন নেতা হচ্ছে আমাদের তারেক রহমান।
ষড়যন্ত্র করেছে স্বৈরাচার ১৬ বছর বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য বিএনপিকে বিভক্ত করার জন্য। তারেক রহমানের দিকনির্দেশনা ও সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে তারা পারে নাই। আজকেও তারা ষড়যন্ত্র করছে এজন্য যে তারেক রহমানের রাজনৈতিক মোকাবেলা করে তারা পারছে না।
বিএনপির জনপ্রিয়তা তারা ধ্বংস করতে পারছে না। এইজন্য তারা কিছু মিথ্যা গল্প কাহিনী তৈরি করে বিএনপি'র বিরুদ্ধে কথা বলা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলা। তারা লুটপাট করছে এখনো।
দেশজুড়ে অব্যাহত সন্ত্রাস চাদাবাঁজদের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ডে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টার সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় গিয়াসউদ্দিন আরও বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশনা তার দলের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালিয়েছিল পুলিশ, র্যাব বিজিপি সহ শেখ হাসিনার সময়ে সরকারি প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে বেপরোয়া হয়ে সাধারণ মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে ছিল তার পরিমণ্ডলে এই এলাকায় যে নারকীয় ঘটনার সৃষ্টি হয়েছিল নিশ্চয়ই আপনাদের স্মরণে আছে। অসংখ্য মানুষের বুকে গুলি চালিয়েছিল তারা। শিশু ও নারীসহ তাদের এই নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পায়নি। এই রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে আন্দোলন সংগ্রামকারীর জনতার রক্তে।
যারা এই আন্দোলনে আত্মহতি দিয়েছে, শাহাদাত বরণ করেছে, যারা পঙ্গু হয়েছে, তাদের প্রতি যেমন আমাদের শ্রদ্ধা যারা দুনিয়া থেকে চির বিদায় নিয়ে গেছেন মহান আল্লাহতালার কাছে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করি। সেই দিনের কথাগুলো যদি আমাদের মনে থাকে আপনারা নিশ্চয়ই আজকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট সেই হত্যাযজ্ঞের এবং গণহত্যা ও এই দেশকে যারা শোষন করেছে, লুণ্ঠন করেছে, এই অপরাধীদের বিচার চাই।
এই বিচার করার দায়িত্ব এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীরে ধীরে হলেও বিচার কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা শুরু করেছেন। কিন্তু এতে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারছি না। এত হত্যাযজ্ঞ নিষ্ঠুরতা ও লুণ্ঠন করার পরে এই মন্থর গতিতে যে বিচার হচ্ছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এতে সন্তুষ্ট না।
আমরা চাই অপরাধীদের তড়িৎ বিচার হোক। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ অপরাধ করতে সাহস না পায়। এই বিচারের দৃষ্টান্ত যেন হয় আগামী দিনের সংস্কারের সবচেয়ে বড় একটি উদাহরণ। নিজে থেকে নিজে যখন অনুতপ্ত হবে। ভীতি ভয় যখন কাজ করবে। অনেক সংস্কারই ব্যক্তি জীবনের চারিত্রিক গুণাবলীর পরিবর্তন এর মধ্যে দিয়ে হয়ে যাবে।
আমাদের দলের প্রিয় নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে এই দাবি বারবার করে আসছে যে স্বৈরাশাসক অন্যায় অপরাধ করে গেছে। হত্যাযজ্ঞ করে গেছে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গ করে গেছে। পক্ষান্তরে দেশের সম্পদ বিদেশের সব পাচার করেছে। এদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে ধন সম্পদ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে তড়িৎ বিচার যেমন চাচ্ছেন তিনি তেমনি চাচ্ছেন সংস্কার করার বিষয়টিও।
তিনি আরও বলেন, এইখানে ছিল গডফাদার শামীম ওসমান তার সবচাইতে বড় সিপাহ-শালা ছিল ৭ খুনের সাজা প্রাপ্ত আসামি ফাঁসির আসামি নূর হোসেন। তার লোকজন সে সময় লুটতরাজ করেছে।
এখনো তাদের লোকজনকে ছদ্মবেশে এখানে মিশিয়ে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করছে এখানে। ছোট-খাটো ব্যবসা-বাণিজ্য করা যারা রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় টং দোকান বসিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছে।
আমরা প্রতিনিয়ত খবর পাচ্ছি এখানে বরিশালের এক ছেলে সে নাকি আন্দোলনকারী ছাত্রনেতা হিসেবে নিজেকে দাবি করে বরিশালের ওই ছেলেটা এখানে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই বিএনপি দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। বিএনপির কাজ আগামীতে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা যা ধ্বংসস্তূপ রেখে গেছে সেখান থেকে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে।
যারা যেখানে চাঁদাবাজির সাথে জড়িত আমি আহ্বান করব ট্রান্সপোর্টের সাথে জড়িত কেউ কাউকে এক টাকা চাঁদা দেবেন না। যারা রাস্তার ধারে সরকারি সম্পদের মধ্যে আপনারা ব্যবসা-বাণিজ্য করেন হকার ও ছোট পুজি নিয়ে যারা ব্যবসা করছেন। এটা কারো বাবার জায়গা না। এটা সরকারি জায়গা।
কেউ যদি চাঁদা চায় তাদের হাত-পা ভেঙে গুড়া করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দেবেন। আপনারা যদি ভয় পান আমাদেরকে জানাবেন আমরা আপনাদের পাশে থাকবো। বিএনপি সব সময় আপনাদের পাশে আছে।ৎৎ
আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন এদেশে চাঁদাবাজি চলতে পারবে না। মাস্তানি চলতে পারবে না। কোন অন্যায় কাজ চলতে পারবে না। এবং বিএনপির যেন কোন বদনাম না হয়। সেই জন্য আমরা রাজপথে নেমে এসেছি। আমার নেতা নির্দেশে আজকে আমরা চাঁদাবাজ মুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লাসহ নারায়ণগঞ্জ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
চাঁদাবাজ যে দলেরই হোক না কেন সেটা যদি আমাদের দলেরও হয় তার কোন রেহাই নেই। আপনারা দেখেছেন আমাদের দলের যারা বিপথগামী হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কিভাবে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা দল থেকে গ্রহণ করা হচ্ছে জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে।
আগামীতে এটা আরো জোরদার করা হবে। আমরা খোঁজ খবর নিয়েছি কে কোথায় কিভাবে চাঁদাবাজের সাথে জড়িত। মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলা হবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। আমরা স্বৈরাচার দূর করেছি এখন আরেকবার রাজপথে আন্দোলন করতে হবে চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে।
সমগ্র বিএনপিকে নামতে হবে লাঠি হাতে নিয়ে নামতে হবে। এমন প্রতিবাদ দিয়ে নামতে হবে যে কোন চাঁদাবাজকে এই বাংলাদেশের কোন স্থান করে দেওয়া যাবে না। একটি ক্ষুদ্র দোকানদার দোকানদারি করে চলে, একজন ফেরিওয়ালা ফেরির কাজ করে খায়, তার থেকে চাঁদা নেয় কত অসভ্য জানোয়ার মানুষ হলে করতে পারে।
এটা কি ওদের বাপ-দাদার সম্পত্তি যে এখান থেকে ওরা চাঁদা নেবে। এটা সরকারের সম্পত্তি জনগণের অধিকার। সরকার যদি উৎখাত করে দেয় তারা চলে যাবে। সরকার যতদিন ব্যবসা করতে দেবে এটা বৈধতার সাথেই সে সেখানে ব্যবসা করতে পারবে।
তাদের থেকে যারা চাঁদা নেয় তারা মানুষের বাচ্চা না অমানুষের বাচ্চা। পশুর থেকে খারাপ নির্লজ্জ কুকুরের চেয়েও খারাপ এই কুকুরদের কিভাবে তাড়া করতে হয় আপনারা জানেন। এই কুকুরদেরকে লাঠি হাতে তাড়া করতে হবে। প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে হবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপি সিনিয়র সহ সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা,সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ও নাসিক সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল, মহানগর শ্রমিকদলের আহবায়ক এস এম আসলাম,থানার সহ সভাপতি রওশন আলী, থানার সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, যুবদলের সাবেক আহবায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু,জেলা তরুন দলের সভাপতি টি এইচ তোফা, মহানগর যুবদলের সিনিয়র নেতা শাহজালাল কালু ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পলাশ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন প্রমুখ।