মীরজুমলা সড়কটি নগরের বঙ্গবন্ধু সড়ক ও সিরাজউদ্দৌলা সড়কের মধ্যবর্তী সংযোগ স্থাপনকারী একটি সড়ক। একই সঙ্গে শহরের সর্ববহৎ দিগুবাবুর বাজারের ভেতর দিয়ে চলমান গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারনায় মুখরিত। কিন্তু দিগুবাবুর বাজারে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ বর্জ্য মীর জুমলা সড়কের একপাশে স্তূপ করা হয় নিত্যদিন। ডাম্পিং স্পট পরিসরে ছোট হওয়ায় ডাম্পিং স্পট উপচে বর্জ্য গিয়ে পড়ছে সড়কে। ফলে আবর্জনার স্তূপ ও দুর্গন্ধের কারণে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। নিরুপায় হয়ে যারা চলছেন তাদের দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়।
মীরজুমলা সড়কের পূর্ব-পশ্চিমে রয়েছে স্কুল-কলেজসহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বাজারের পাশে হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ যাতায়াত করেন। বাজারের বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় পথচারীদের ভোগান্তি বাড়লেও কোনো নজরদারি ও উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের।
প্রতিদিন শহর ও শহরের বাহিরে বিপুল সংখ্যক মানুষ নিজেদের দৈনন্দিন পন্য এই বাজার থেকে ক্রয় করেন।
সোমবার (৭ জুন) সড়কটি সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারের দোকানের আবর্জনা সড়কে ছোট ছোট স্তূপ আকারে রাখা হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আবর্জনা সড়কে ফেলা হয়। রাস্তা দখল হওয়ায় ডাম্পিং স্পটের প্রশস্ত কমে গেছে। সারাদিনের জমানো আবর্জনা বিকালে উঠিয়ে রাস্তার একাংশে ফেলে রাখা হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চরম ভোগান্তির শিকার হয় পথচারীরা। বৃষ্টি হলে এই সমস্যা বেড়ে হয় দ্বিগুণ। সেদিন সড়কের আরো বেহাল পরিস্থিতি হয়। সড়কের অন্য অংশ পড়ে আছে দখলে। ফলে স্বল্প দৈর্ঘ্যরে এই সড়কটির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে প্রায় আধ ঘন্টার মতো সময় প্রয়োজন হয়। যাতায়াতের পথ হলেও সড়কটিতে সারাদিন বাজারের দোকানের উচ্ছিষ্ট আবর্জনা ফেলায় বিপাকে পড়েন পথচারীরা।
সড়ক পার্শ¦বর্তী এলাকাবাসীদের অভিযোগ, বাজারের দোকানীরা পুরো সড়কে সারাদিনের বর্জ্য ছোট ছোট স্তূপ করে রাখে। প্রতিদিন আমাদের ময়লার ভাগাড় পেরিয়ে কাজে যেতে হয়। সন্ধ্যা হলেই দরজা-জানালা বন্ধ করে দিতে হয়। না হলে মশার যন্ত্রণায় রাতে ঘুমানো দায় হয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী বোরহান উদ্দিন নিতাইগঞ্জের বাসিন্ধা। তিনি রিকশায় থেকে দোকানিকে ৫ কেজি আলু দিতে বলেন। সড়কে ময়লা-আবর্জনা থাকায় রিকশা থেকে নামেননি তিনি। তার সাথে হলে তিনি বলেন, পুরো সড়কের যে অবস্থা মানুষের রাস্তায় হাঁটার কোন অবস্থা রাখেনি। নয়তো টাকা খরচ করে রিকশায় বসে তো বাজার করা লাগে না। পুরো সড়কে ময়লা-আবজর্না। পুরো সড়কটাই তো ডাস্টবিন করে রাখে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ মডেল কলেজের শিক্ষার্থী আসিফ বলেন, আমাদের কলেজ থেকে বের হয়ে বাজারের এই রাস্তা দ্রুত দেওভোগ যাওয়া যায়। কিন্তু সড়কের যেই অবস্থা এই সড়ক দিয়ে হাঁটা যায়না। বিশেষ করে যেখানে মাছ-মাংস বিক্রি করে। সেখানের ময়লার দুর্গন্ধ সর্বাধিক। বাজারের সবাই রাস্তায় ময়লা ফেলে রাখে এটা কি কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে? বাজার থাকায় তো রাস্তা দখল করে এই অবস্থায় রাখতে পারে না। এই বিষয়ে আমাদের জেলার প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।
বাজারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বাজার কর্মকর্তা জহিরুল আলমের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন হিরন এই বিষয়ে বলেন, দিগু বাবু বাজারে নির্দিষ্ট একটি স্থান করে দিয়েছি। কিন্তু ডাম্পিং স্পটটা বাজারের দোকানীদের দখলের কারণে ছোট হয়ে গেছে। ময়লা রাস্তার উপরে ডাম্পিং স্পট পেরিয়ে সড়কে চলে আসে। এ কারণেই মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তবে আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।
আরও পড়ুন : ফতুল্লায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে প্রেমিকের মৃত্যু