নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

০৯ মে ২০২৪

গভীর শ্রদ্ধায় সাহিত্যিক মির্জা মোতালেবকে স্মরণ 

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:১০, ১৩ জুলাই ২০২৩

গভীর শ্রদ্ধায় সাহিত্যিক মির্জা মোতালেবকে স্মরণ 

চলে গেলেন সাহিত্যিক মির্জা মোতালেব। গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে তিনি ঢাকা ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।  তার বড় ভাগ্নে প্রিন্স জানান, মামা মির্জা মোতালেব এর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর।

 

তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে, ভাই, বোন, ভাগ্নে, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯০ সালে বাংলা সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রী নেন।


মির্জা মোতালেব একাধারে একজন কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সংগঠক, কলাম লেখক, সাংবাদিক, জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন। তিনি পেশা হিসেবে শিক্ষক তাকে বেছে নিয়ে ছিলেন। মির্জা মোতালেব মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ঢাকা মনিপুর স্কুল এন্ড কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন।

 

মির্জা মোতালেব সিরাজগঞ্জ জেলার “মুক্তিযোদ্ধা পরিবার” ঐতিহাসিক “মির্জাপরিবারে” জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় উত্তরবঙ্গে মির্জা পরিবারের বিশেষ অবদান রয়েছে। তার চাচাবীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ মির্জা মহান মুক্তিযুদ্ধেও সময়ে ৭ নং সেক্টর ভুক্ত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহৎ এবং উত্তরবঙ্গের পরাক্রমশালী “গেরিলাবাহিনী” “ পলাশ ডাঙ্গা যুবশিবিরের” সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন।

 

তিনি পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও নওগাঁ অঞ্চলে বিভিন্ন সম্মুখ যুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব প্রদান করায় মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিজয়ের পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজিজ মির্জাকে স্বর্ণপদক সম্মাননা প্রদান করেন।

 

মির্জা মোতালেব এর পিতা মির্জা আক্কাস আলী নারায়ণগঞ্জ এর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজ সেবক, শিল্পপতি, ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্টে এসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান, ১৯৮২ সালে এফবিসিসিআই এর সদস্য ও ১৯৭৩ সালে মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।

 

তার ভাইবীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা সিরাজগঞ্জ - ৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য, শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন। 


মির্জা মোতালেব ব্যক্তি জীবনে সৎ, সহজ সরল ও প্রচার বিমুখ একজন মানুষ ছিলেন। তিনি তার কর্ম জীবনে অসংখ্য গুণগ্রাহী কৃতিছাত্র বির্নিমানে ভূমিকা রেখেছেন। মির্জা মোতালেব অত্যন্ত জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অসংখ্য সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।

 

মির্জা মোতালেব নির্লোভ, সাদামনের একজন ভালো, ধর্মভীরু মানুষ ছিলেন। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে বেচেঁ থাকবেন আজীবন।


১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে “উর্মি” ও “বিথী” নামে দু’টি লিটল ম্যাগপত্রিকার সম্পাদক ছিলেন মির্জা মোতালেব। ১৯৮৩ সালে নারায়নগঞ্জ আলী আহম্মদ চুনকা মিলনায়তনে “আমরা ক’জন” নামে দেয়াল পত্রিকার সম্পাদনা ও প্রকাশনাকরতেনতিনি।

 

“প্রজন্ম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিকসংগঠন, “ধ্রুব” সাহিত্য পত্র ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত “বর্ণ সাহিত্য পত্রের” উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। তিনি ১৯৯৯ সালে “এসিডনিক্ষেপ নিরোধ আন্দোলনের ”নারায়নগঞ্জ জেলা শাখার উপদেষ্টা ছিলেন। মির্জা মোতালেব ১৯৯৩ সালে “দৈনিক যায়যায় দিন” ও ১৯৯৪ সালে দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন।

 

তিনি উত্তরবঙ্গ বহুমূখী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ২০০২ সালে “দৈনিক মানব জমিন” পত্রিকার পাঠক ফোরাম“ পাঠক জমিন নারায়নগঞ্জ” জেলা শাখার উপদেষ্টা ছিলেন। জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও দেয়াল পত্রিকায় অসংখ্য লেখা প্রকাশিত হয়েছে তার।

 

মির্জা মোতালেব দীর্ঘদিনপরিবেশবাদীসংগঠন“গ্রীন ফর পিস্”ভাইস প্রেসিডেন্টএর দায়িত্ব পালনকরেন।


মির্জা মোতালেবের মৃত্যু সংবাদে শোক নেমে আসে সাহিত্য সাংস্কৃতিক অঙ্গণে ও শিক্ষক মহলে। মির্জা মোতালেব এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন, পাবনা-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোমকবুল হোসেন।

 

স্থানীয় পৌর মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল, ঢাকা পুলিশ সদর দপ্তরের এডিশনাল ডি.আই.জি গাজী মোজাম্মেল হক, ঢাকা মনিপুর স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব মো. ইসমাইল মোল্লা, ঢাকা গুলশান প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, নারায়নগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, বর্ণ সাহিত্য পত্রের সম্পাদক আবু রায়হান প্রিন্স, সিরাজগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ, উল্লাপাড়া আওয়ামীলীগের সহ সাধারণ সম্পাদক মির্জা সেলিনা মুক্তি, রবি টেলিভিশনের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবীন আহসান, আরও যারা শোক প্রকাশ করেন, তারা হলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কল্যান ট্রাস্ট এর মহাসচিব সাইফুল ইসলাম, দৈনিক আজকের জন্মভূমির পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক জাফর আহামেদ, সাপ্তাহিক মুক্ত আওয়াজ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এ.এস.এম এনামুল হক প্রিন্স, নারায়নগঞ্জ সাহিত্য ফোরামের সভাপতি ও দৈনিক ডান্ডিবার্তা পত্রিকার বিভাগীয় প্রধান জাহাঙ্গীর ডালিম, আনন্দধাম অতিরিক্ত চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম বাবু, প্রগ্রেসিভ জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন নারায়নগঞ্জ সহ সভাপতি মোঃ শহিদুল্লাহ শিশির, কবি কন্ঠ নারায়নগঞ্জ সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর, মুক্ত আওয়াজ পত্রিকার পাঠক ফোরামের সভাপতি আতিকুর রহমান ভূইয়া, মুক্তধারা সাহিত্য ফোরামের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ ইউকে দাস, সুহৃদ সমাজ কল্যাণ সংগঠন সহ-সভাপতি  মোঃ মামুন হোসেন, সুলতান উদ্দিন আহাম্মেদ স্মৃতি সংসদ পরিচালক এ.কে.এম মোজাম্মেল হক, ইকরা কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুল ইসলাম ভূইয়া, সোনারগাঁ সাহিত্য বিকাশ সংসদ সহ-সভাপতি আবুল খায়ের, দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশ নারায়নগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ।  
 

সম্পর্কিত বিষয়: